কোথায় সে লেখকেরা যাদের লেখার প্রতিটি অক্ষর পড়ে মনে এক শিহরনের খেলা খেলে আবার কোন সময় দাড়িয়ে যেত সাধারন মানুষের গায়ের লোম। যাদের লেখায় অনুপ্রানিত হয়ে সাধারন মানুষ শূন্য হাতে করেছে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, অসহযোগ আন্দোলন, নির্যাতন-নিপিড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন। তারা চলে গেলে পৃথিবীর বুক থেকে আর কোন লেখক তৈরী হয়নি তাদের মত, তবে কেন? যখন কোন জাতি রাস্তার দুপাশে ছিটকে পড়ে অসহনীয় ব্যথায় কাতর। তখন তাদেরই রাস্তায় দাড়িয়ে অন্য কেউ তাদের উপর চালায় অমানুষিক জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন যখন শত্র“ হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য প্রাচীর হাতে কামান তুলে নিয়েও যখন শত্র“ দমন করা সম্ভব নয় তখন ঐ নির্যতিত ,নিপীড়িত জনসাধারনের মধ্যে থেকে কেউ কেউ হাতিয়ার হিসেবে তুলে নিয়েছে কাগজ কলম। লিখেছে প্রতিবাদী লেখা, প্রতিবাদ করেছে তার লেখার প্রতিটি অক্ষরে। যার লেখার প্রতিটি অক্ষর হয়ে উঠেছে কামানের গোলা, প্রাতাট লাইন হয়ে উঠেছে ক্ষেপনাস্ত্র, আর সম্পূর্ন লেখা হয়ে উঠেছে নির্যাতিত মানুষের অত্যাধুনিক আনবিক হাতিয়ার। যার এক ডাকে জনশূন্য লোকালয় তৈরী হয়েছে জন সমুদ্রে। তাদের হাত ধরে আবার মানুষ উঠে দাড়িয়েছে রাজপথে, কন্ঠে তুলেছে বিজয়ের স্লোগান বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছে নির্ধিদায়, এসব সম্ভব হয়েছে একমাত্র সেই লেখকদের জন্য। যুগে যুগে লেখকরা তার লেখার মাধ্যমে প্রমান করেছে যে একজন লেখকই হচ্ছে জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে শুরু হয়েছে লেখালেখি। এককথায় বলা যায় আমাদের সভ্যতার সূচনাই লেখালেখির মাধ্যমে। আমাদের এই আধুনিক সভ্যতার পিছনে অবদান কত নাম না জানা লেখকের, এখানে কিছু লেখকের নাম উল্লেখ করে বাকীদের ছোট করতে চাই না প্রতিটি লেখকের অবদান ছিল অসামান্য। আমরা প্রত্যেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে দাবী করি। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হচ্ছে লেখকরা। আমরা যারা দেশপ্রেমিক বলে দাবী করি তারাই হচ্ছে দেশের বড় শত্র“। দেশের প্রতি আমাদের দেওয়ার কিছুই নেই অথচ দেশের কাছ থেকে চাওয়ার আছে অনেক। যারা লেখক এরা দেশকে, দেশের মানুষকে উদারচিত্তে দিয়েই যাচ্ছে দেশের কাছ থেকে কিছু কেড়ে নিচ্ছেনা। প্রতিটি লেখকের একটি স্বপ্ন হচ্ছে আমার জাতিকে আমি মাঝ পথে ভিক্ষারির বেশে রাস্তায় পড়ে থেকে নির্যাতিত হতে দেখেছি, আমার জাতিকে আমার হাত ধরে আমার লেখার মাধ্যমে জাগ্রত করে পরিণত করব শ্রেষ্ঠ জাতিতে। যাতে আর কখনও আমার জাতি চাঞ্চিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত না হয়। বর্তমানে আমাদের জাতি আবার পিছু হাটতে শুরু করেছে, ঝড়ে যাচ্ছে পুরানো লেখক লেখালেখিতে অনুপ্রেরনা পাচ্ছেনা নবীনরা। তাই আমাদের জাতির সংগ্রামী, বিদ্রোহী, লেখা, সাহিত্যচর্চা সবকিছু থেমে গেছে। তরুন প্রজন্মের লক্ষ্য বড় একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিষ্টার হওয়া। তাদের ধারনা লেখক পেশা হচ্ছে খুবই নিম্ন মানের একটি পেশা এই পেশায় থেকে খুবই কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। ধীরে ধীরে আমারদের জাতি হয়ে পড়ছে লেখক শূন্য এ নিয়ে সরকার ও বিশিষ্টজনদের নেই কোন মাথাব্যাথা। তাই আমাদের এখনই সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তরুন প্রজন্মকে লেখালেখিতে উদ্ধুদ্ধ না করতে পারলে আমাদের জাতি আবার ফিরে যাবে সভ্যতার সূচনা লগ্নে। যে লেখার মাধ্যমে আমরা পেয়েছি আমাদের আধুনিক সভ্যতা, সেই লেখালেখি ছেড়ে আমরা আবা সভ্যতার লগ্নে ফিরে যেতে চাই না। তাই আমাদের সমাজের সবাইকে আরও বেশী সচেতন হতে হবে। তরুন লেখকদের জন্য তৈরী করতে মুক্ত প্লাটফর্ম যেখানে তরুন লেখকরা উপস্থাপন করতে পারবে তাদের মুক্ত চিন্তাধারাা। আমাদের জাতিকে আরও আধুনিক করতে হলে তরুন প্রজন্মের জন্য মুক্ত প্লাটফর্ম তৈরী করে তাদেরকে অনুপ্রেরিত করতে হবে লেখালেখির প্রতি, তাহলে এই তরুনরাই একদিন আমাদের জাতিকে দিবে শ্রেষ্ঠতের মর্যাদা।

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ