সংলাপ!!!

মারজানা ফেরদৌস রুবা ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বুধবার, ০৯:১৭:২৩অপরাহ্ন সমসাময়িক ১৮ মন্তব্য

একজন তথাকথিত দুর্বৃত্ত (মিডিয়া যাদের নাম উচ্চারন করতেও ভয় পায়) পেট্রোলবোমা মেরে ৭ জনকে পুড়িয়ে মারলো, তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়না!

কিন্তু ঐ একজন দুর্বৃত্তকে (বিএনপি/জামায়াতে’র সন্ত্রাসী) গুলি করে পুলিশ যদি ৭ জনের প্রাণ রক্ষা করতে চায়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আর্তনাদ শুরু হয়ে যায়!
অবাক লাগে…..পশ্চিমা পৃষ্টপোষকতায় পালিত ঐসব মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভুমিকা দেখে!!

সুশীল থেকে আওয়াজ উঠেছে ‘সংলাপ’ এ বসো। প্রশ্ন হলো কার সাথে সংলাপ হবে? জনগণের জীবনকে জিম্মি করে যে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উম্মত্ত হয়ে উঠেছে তাঁর সাথে?

উম্মত্ততাকে প্রশ্রয় দিয়ে এই মুহুর্তে সংলাপে বসা মানে সহিংসতার কাছে মাথা নত করা, যা ভবিষ্যত রাজনীতিকে আরোও কদর্য করে তুলবে। জনগণের জীবনকে জিম্মি করে রাজনৈতিক উম্মত্ততা তৈরী করতে পারলেই ক্ষমতা হাতের মুঠোয় আনা সম্ভব; ভবিষতের জন্য এমন উদাহরন সৃস্টি হবে। উম্মত্ততাই হবে ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র পথ।
সুস্থ মাথায় কি তা ভাবা সম্ভব?

সংলাপ দরকার। তবে কিছু নীতি ও আদর্শকে মেনে তা হোক।
রাজনৈতিক নেতার কাছে জনগণের জীবনের নূন্যতম মূল্যও যদি না থাকে, তবে তিনি কি করে নেতা থাকেন? জনতার জান-মাল রক্ষার দায়িত্ব কি শুধুই সরকারের? হয়তো টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু তা-বলে একজন নেতা যিনি পরপর ৩ বার প্রধামন্ত্রীত্বের পদও অলংকৃত করেছেন, জনতার বিরুদ্ধে তাঁর উম্মত্ততাকে প্রশ্রয় দিয়ে সমস্থ দায় সরকারের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে আমরা কি ভবিষ্যতের জন্য দেশকে আরোও গভীর সংকটের দিকে এগিয়ে দিচ্ছিনা?

সংলাপ তো ২০১৩’তেও হওয়ার কথা ছিলো!

হয়েছিলো কি? বরং একপক্ষের একগুয়েমির কারনে সংলাপের পথ তখন বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীতো উদ্যোগটা নিয়েছিলেন, ধৈর্য্য ধরে প্রলাপও শুনেছিলেন।

আর এবার যখন তথাকথিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের পরে দেশ শান্তিতে এগিয়ে যাচ্ছিলো সমৃদ্ধির দিকে, মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিলো, তখন আচমকাই ৫ জানুয়ারীকে কেন্দ্র করে শুরু হলো তান্ডবলীলা। এ যেনো জাতির বিরুদ্ধেই যুদ্ধে নামা। অনেকটা এরকম, কেনো তোরা এ নির্বাচনকে মেনে নিয়েছিস।
আবারও রব উঠলো ‘সংলাপ’ এ বসো। ’সংলাপ’ করার যদি সদিচ্ছাই থাকতো, তাহলে ঈশ্বর জাতিকে কৃপা করে যে সুযোগ প্রতিপক্ষের দ্বারপ্রান্তে এনে দিয়েছিলেন, সর্বোচ্চ একগুয়েমির চুড়ান্ত রুপ দেখিয়ে সেদিনও তারা প্রধানমন্ত্রীকে দরজায় ৭ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও ঢুকতে না দিয়ে জাতিকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা মুলতঃ সংলাপ চায়না। যদি চাইতো তাহলে সুযোগটা হাতের মুঠোয় এসে যাওয়ার পর সেটাকে লুফেই নিতো।

এখন প্রশ্ন হলো তারা আসলে কি চায়? তারা চায় দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করতে।

আমি এখনো সন্ধিহান যে, বেগম জিয়া আসলে তাইই চান কিনা! আমার ধারনা বেগম জিয়ার প্রয়োজন যেকোন মূল্যে ক্ষমতায় আরোহন আর তার সে ইচ্ছাকে তুরুপের তাস হিসাবে ব্যবহার করেই দেশী-বিদেশী চক্র এই খেলা খেলে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে নেপোলিয়ন বোনাপোর্টের সেই অমোঘ বাণীটি না বললেই নয় ”আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো।”

একজন শিক্ষিত মা একটি শিক্ষিত জাতির জন্ম দিতে পারেন। কিন্তু মায়ের শিক্ষার ঘাটতি থাকলে কি হতে পারে, বেগম জিয়া যেনো তাই প্রমাণ করে যাচ্ছেন।

তারপরও কথা থাকে…. একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াও অতীতে অনেক রাজা-মহারাজা তাদের আদর্শিক শিক্ষা, গুনগত শিক্ষা ও দূরদর্শিতা দিয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন।

বড়ই দুর্ভাগা জাতি আমরা! আমরা যাকে নেতা হিসাবে মেনে নিয়েছি, তাঁর মধ্যে সেই আদর্শিক শিক্ষা, গুনগত শিক্ষা ও দূরদর্শিতার বড়ই অভাব!!!

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ