আমার এক ভাইয়ের ছেলে প্রবাল বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। এ মাসেই স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা। পড়ার সময়ে তার প্রশ্নের শেষ নেই। বাস্তবের সাথে অমিল এমন কিছু বইতে থাকলে গৃহ শিক্ষককে প্রশ্ন করতে করতে অস্থির করে ফেলে।

যেমন আজ ফাইনাল পরীক্ষার জন্য বাসায় বসে শিক্ষক পড়াচ্ছেন ' দরিদ্র তহবিল হতে অনুদান পাইবার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন পত্র।' শিক্ষক প্রবালকে যা যা লিখতে বলছেন  লিখছে তা। বরাবর, বিষয় এর পরে যখনই লিখতে বললেন ' আমার পিতা একজন নিন্ম বেতন ভুক্ত চাকুরীজীবি। আমরা অত্যন্ত দরিদ্র। আমরা মোট চার ভাইবোন। দারিদ্র্যতার কারনে আমাদের পিতার পক্ষে আমাদের পড়াশুনার খরচ চালানো সম্ভব না।'
তীব্র আপত্তি প্রবালের কাছ হতে এলো। প্রবাল এসব লিখতে পারবে না। তার কথা ''আমার আব্বু তো ব্যবসা করেন, দরিদ্র না, আমরা তিন ভাই, পড়াশুনার খরচ না চালাতে পারলে আপনার বেতন দেন কিভাবে? আমি মিথ্যে লিখতে পারবো না।''
কোন অবস্থাতেই সে লিখতে পারবে না তার পিতা দরিদ্র। শিক্ষক হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন আচ্ছা তুমি যা পারো লেখো।

এরপরে প্রবাল যা লিখলো তাতে অবাক সবাই। তার লেখার মাঝে এমন কথা লিখলো ' আমার পিতা একজন ব্যবসায়ী। আমরা তিন ভাই। আমার পিতা একজন সচ্ছল ব্যাক্তি। আমার দরিদ্র তহবিল হতে অর্থ সাহায্য নেয়ার প্রয়োজন নেই। ক্লাসের যারা অত্যন্ত দরীদ্র পিতা মাতার সন্তান,তাদেরকে যেন দরীদ্র তহবিলের টাকা দেয়া হয়। ......... এভাবে সুন্দর একটি দরখাস্ত লিখে ফেললো।

প্রশ্ন হচ্ছেঃ
১। উত্তর পত্রে প্রবাল যদি এই দরখাস্ত লেখে তবে সে কি নম্বর পাবে ?
২। যে বিষয় বস্তু পাঠ্য শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের মিথ্যে কথা বলার শিক্ষা দেয়া হয়, তা কেন পাঠ্য পুস্তকে থাকবে?

0 Shares

৫৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ