১)
গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরোধী দলের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সক্রিয় বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল জাসদ। মুলত সিরাজুল আলম খান আর শেখ ফজলুল হক মণির আদর্শিক দ্বন্দ থেকে ছাত্রলীগের একটা অংশ বেরিয়ে যেয়ে জাসদ গঠনের সুচনা করে। এরপর সামরিক শাসনামলে আমরা দেখেছি গৃহ পালিত বিরোধী দল। নব্বইয়ের দশকে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রত্যাবর্তনের পর থেকে মুলত হাসিনা আর খালেদাই পালাক্রমে বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছে। রাজনীতির মারপ্যাঁচে এখন বাংলার বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্বে আছেন আবহমান বাংলার বিশ্বস্ত গৃহবধূ বেগম রওশন এরশাদ। ইদানীং অবশ্য তিনি রাজনীতির চেয়ে সঙ্গীত চর্চা নিয়ে ব্যস্ত। হাজবেন্ড কবি, ওয়াইফ শিল্পী। বাংলার জনগণ কেন যে এই এমেজিং, কিউট, সুইট, ক্রিয়েটিভ কাপলটাকে যোগ্য সম্মান দিল না কে জানে? কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে তিনারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব কতটা পালন করেছেন তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে আপনি জানেন কিনা জানি না রাজনীতিতে একটা কথা আছে, এখানে কোন কিছুই অপূর্ণ হয়ে থাকে না। কার্যকর বিরোধী দলের শুন্যতাও অপূর্ণ থাকেনি। বাংলার রাজনীতিতে সাম্প্রতিক কালে নুতুন বিরোধী দলের ভুমিকায় আবির্ভূত হয়েছে ফেসবুক। পাবলিক আজকাল ফেসবুকে দেদারছে সরকারের সমালোচনা করছে। প্রতিদিন ফেসবুকে তৈরী হচ্ছে নুতুন ইস্যু, তৈরী হচ্ছে নুতুন জনমত। এক ইস্যু চাপা পড়ছে অন্য ইস্যুতে। তনু হত্যা চাপা পড়ে মিতু হত্যায়, মিতু হত্যা চাপা পড়ে সুন্দর বন হত্যায়। এই ইস্যু গুলোকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন তৈরী হচ্ছে নায়ক, প্রতি নায়ক। একদল তথাকথিত এই নায়কদের পক্ষে নামছে, আরেক দল বিপক্ষে। জমে উঠছে বিতর্ক। এর বাইরেও লাইক গোনা, প্রেম করা, সামাজিক প্রেক্ষাপটে হিরোইজম দেখানো সহ নানাবিধ কারণে মানুষের ফেসবুকে কাটানো সময়ের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ফেসবুক কর্তপক্ষও চাইছে সেটাই। কোন একটি ঘটনা সাপেক্ষে আপনি নায়ক কিংবা প্রতিনায়ক যাই হোন না কেন আপনার ফলোয়ার বাড়বে। এমনকি নায়ক, পার্শ্ব নায়ক, প্রতিনায়ক কিছুই না হয়েও একদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আবিস্কার করতে পারেন আপনার ফলোয়ারের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কি বিশ্বাস হয় না? কিছু দিন আগে কোন এক সাদিয়াকে কেন্দ্র করে জুনায়েদ বনাম নুরুল্লাহর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জাতীয় চাহিদার প্রেক্ষিতে সাদিয়া নামের অনেক মেয়ের ফলোয়ার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। নাম সাদিয়া হলেই যে কেউ জুনায়েদের সাদিয়া হয় না এইটা বোঝার টাইমও আমাদের ফেসবুকের আমজনতার নাই। কি বিচিত্র তাই না?

সরকার অবশ্যই এই নব্য বিরোধী দল তথা বিরোধী দল কেন্দ্রীক জনমতকে উপেক্ষা করতে পারে না কিন্ত এই বিরোধী দলকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার যে কোন কারণ নেই সেটাও সরকার জানে। অন্য বিরোধী দলের থেকে এই বিরোধী দলকে মেনিপুলেট করা সরকারের পক্ষে অনেক সহজ। এক ইস্যু থেকে মনযোগ সরানোর জন্য স্রেফ নুতুন একটা ইস্যু হলেই হয়। অধিকাংশ ইস্যুই দিন শেষে হারিয়ে যায় বলে কোন ইস্যুই শক্তিশালী ষ্ট্যান্স নিতে পারে না। আগেই বলেছি কোন একটি ঘটনাকে নিজ বিদ্যা, বুদ্ধি কিংবা যুক্তি দিয়ে যাচাই করবার মত সময় আমাদের ফেসবুকের আমজনতার নাই তাই এখানে কোন মতবাদকে কাউন্টার করতে আরেকটা বিপরীত মতবাদকে জনপ্রিয় করাও তেমন কঠিন কোন কাজ নয়। যেমন ব্লগ ভিত্তিক মুক্তচিন্তা থেকে জন্ম নেওয়া শাহবাগের আন্দোলনকে কাউন্টার করতে হেফাজতের নাস্তিকতা বিরোধী আন্দোলনকে জনপ্রিয় করা হয়েছিল মাত্র কয়েক দিনে! এছাড়া সরকার চাইলে বিটিআরসিকে দিয়ে তার জন্য ক্ষতিকারক পেইজ বা একাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারে। আর শেষ অস্ত্র হিসেবে ৫৭ ধারার প্রয়োগ তো আছেই। যাই হোক বিরোধী দল হিসেবে ফেসবুকের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে তবুও বাংলার রাজনীতিতে কার্যকর বিরোধী দলের এই শুন্যতা পুরনের জন্য ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য, কি বলেন?

২)
একদা আপনি পত্রিকায় পড়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের পাশে আছে। ঘটনাক্রমে ঐ দিন আপনার পাড়াতো বন্ধুর খালাতো ভায়ের মেয়ের বিয়ে যশোরের বেনাপোলে। বউয়ের কচকচানি থেকে কয়েকদিনের জন্য মুক্ত হতে আপনি সেখানে যাবেন বলে মনস্থির করলেন। বেনাপোলে পৌঁছে আপনার একটু সাধ জাগলো সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন তাই হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেলেন কাঁটাতারের দিকে। অতঃপর আপনার সামনে পড়ল টহলরত দুই বাঙ্গালী বিএসএফ জোয়ান। আপনার কিছু বলার আগেই তারা বলে উঠল-এই ব্যাটা এদিকে আয়?
খানিকটা ভয় পেলেও পূর্ণ আত্ববিশ্বাস নিয়ে আপনি তাদের দিকে এগিয়ে গেলেন, বললেন-হাই গাইজ, হাউ আর ইউ?
দুই জওয়ানের মধ্যে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী একজন আপনার দিকে এগিয়ে আসলো। মুহূর্তেই আপনার কলার ধরে বলে উঠল-এই তুই গরু ব্যাপারী?
-নো নো জেন্টেলম্যান, আই এম নট দ্যাট সর্ট অফ পারসন হুম ইউ আর লুকিং ফর। একচুয়ালি আই এম আ ট্যুরিষ্ট, আই এম ওয়াকিং থ্রু দিজ প্যাডি ফিল্ড।
আপনার কথাটিকে পাত্তা না দিয়েই প্রথম জওয়ানটি বলে উঠলো- ব্যাটা দেখি ইংরেজীও কয়! বল হারামজাদা কয় টাকা আনছস গরু কেনার লাইগা?
- নো নো ইয়াংম্যান, ইউ আর মিস্টেকেন কমপ্লিটলি। আই এম আ ভেরি রিস্পেক্টেবল সিটিজেন অব বাংলাদেশ, হোয়াই উড আই বিকাম আ গরু ব্যাপারী? আই হেইট দোজ ব্লাডি গরু ব্যাপারীজ। মাই ডক্টর হ্যাজ আস্কড মি টু নট ইট বিফভুনা।
-তুই ইন্ডিয়ায় ঢুকবার চাস অকাম করার লাইগা?
-নো নো, আই লাইক ইন্ডিয়া ভেরি মাচ। এভ্রি মানথ আই গো টু ইন্ডিয়া। আই গো ফর শপিং, আই গো ফর মাই পাইলস ট্রিটমেন্ট। মাই ওয়াইফ গোজ ফর হার ব্লাউজ মেকিং। আই লাইক বলিউড, আই লাইক শাহরুখ, আই লাইক দীপিকা, আই লাইক ক্যাটরিনা, আই লাইক আলিয়া ভাট...
কথাটা আপনি শেষ করতে পারলেন না। তার আগেই মাথায় একটা ছোট খাট থাবড়া অনুভব করলেন।
একজন বলে উঠলো- অত কথা কস কেন হারামজাদা? গরু কেনার জন্য যা টাকা আনছস তাড়াতাড়ি বাইর কর?
হতভম্ভ আপনি ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। অগ্যতা বিএসএফ জওয়ানরাই আপনার পকেটে হাত ঢোকাতে বাধ্য হল। খানিক ক্ষণ পর আপনি আপনার ঘাড়ে একটা মৃদু ধাক্কা অনুভব করলেন। পিছন থেকে ভেসে আসলো তাদের কন্ঠস্বর- যা ভাগ ব্যাটা, আর কোনদিন যদি তোরে এই এলাকায় দেখি...

নিরুদ্বেগ আপনি আবারো বাংলার মেঠো রাস্তায় হাঁটা শুরু করলেন। খানিকটা মন খারাপ হলেও পরক্ষণেই একটা কথা ভেবে আপনার মন খুশি হয়ে উঠলো। যাক বাবা বাঁচা গেছে, ব্যাটারা দিলে একটা ছোট খাট অর্ধ চন্দ্রই তো দিয়েছে, পশাৎদেশে লাথি তো আর দেয় নাই। মোদীদা আমাদের পাশে আছে !!!

৩)
আজকাল বাংলার বোরখাওয়ালীদেরও প্রিয় ব্যক্তিত্ব বেগম রোকেয়া। বোরখা টাইট হবে নাকি ঢিলা হবে নাকি চক্ষূ ঢাকা হবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও রোকেয়াকে আইডল করা নিয়ে তাদের মধ্যে কোন মতভেদ নাই। বাংলার চিরকালীন রাজনৈতিক অনৈক্যের মধ্যে তাদের এই ঐক্য নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। তবে রোকেয়ার কপাল ভাল যে তিনি এখন আর এই বঙ্গদেশে বেঁচে নেই, বেঁচে থাকলে হয়তো কবি জীবনানন্দ দাসের ভাষায় বলতেন-
সব কাজ তুচ্ছ হয়- পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা-প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়।

৪)
বিয়ের কথাবার্তা চলাকালীন মেয়েটি ছেলেটির কাছে তার সার্টিফিকেট গুলো দেখতে চেয়েছিল। ছেলেটি তার আলমারির ড্রয়ারে পুরোনো সার্টিফিকেটগুলো খুঁজতে যেয়ে আবিস্কার করে তার মেট্রিক-ইন্টার সার্টিফিকেটের একাংশ পোকায় খেয়ে ফেলেছে। অতঃপর বোর্ড অফিসে যোগাযোগ করে সে তার মেট্রিক-ইন্টার সার্টিফিকেটের রেপ্লিকা জোগাড় করেছিল। এদিকে ভার্সিটির কনভোকেশন তখনও হয়নি কাজেই অনেক ছুটোছুটি করে তাকে প্রভিশনাল সার্টিফিকেট জোগাড় করতে হয়েছিল। তারপর এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় জিপিএ ফাইভ যুক্ত মেট্রিক-ইন্টার সার্টিফিকেট, থ্রি পয়েন্ট সেভেনফাইভ সিজিপিএ যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট, চেয়ারম্যান কর্তক প্রাপ্ত ক্যারেক্টার সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে ছেলেটি মেয়েটির দেওয়া ঠিকানায় ঠিক সময়ে পৌঁছেছিল। ছেলেটিকে কাক ভেজা হয়ে আসতে দেখে মেয়েটি একটা নীল রঙ্গের তোয়ালে এগিয়ে দিয়েছিল, ড্রইং রুমে বসতে বলে জিজ্ঞেস করেছিল- কি খাবে?
এক গ্লাস ঠান্ডা পানি- ছেলেটি উত্তর দিয়েছিল।
পানির গ্লাস নিয়ে ফিরতেই ছেলেটি তার সার্টিফিকেটসমৃদ্ধ ফাইলটি মেয়েটির দিকে এগিয়ে দিয়ে আত্নবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিল-দেখো সব ঠিক আছে কিনা?
মুচকি হেসে মেয়েটি উত্তর দিয়েছিল- সবই তো ঠিক আছে কিন্ত মেডিকেল সার্টিফিকেটটা নেই যে...

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

  • শামীম আনোয়ার আল- বেপারী

    ১] জাসদ আজ নীতি নৈতিকতা হারিয়ে বাইম মাছের চৌংঙ্গায় ঢোকে গেছে। যে নারী বিরোধী দলেবসে একবারের জন্যও তার নিজ এলাকায় যায়নি সে নারীর সঙ্গীত এর মর্যাদা বাংলার মানুষ কখনো দিতে পারবে কিনা তা আমার নগণ্য চিন্তার বাইরে। আর এশাদ চাচা’ত আমার খালাত বোন এর ও হিরো,,, “লোল” হুম রাজনীতে এই কথাটা সত্য কোন কিছুই অপূর্ণ থাকেনা । ফেসবুক বিরোধী দল আজ ইস্যু’র মাঝে চাপা পড়ে গেছে। কোনও ইস্যু’ই তাদের মূল্য দিতে জানেনা। মুঘল সাম্রাজ্যের আগে থেকেই বাঙালী কৌতূহলি ছিলো। তাই তারা বিচিত্র।

    ২] মোদী দাদাবাবু মহাভারতের মহান ব্যক্তি, দাঁতে বিষ মুখে হাসি, যারা ,,,,,বিপ,,,, ইন্ডিয়ানি বলে গালি দিত আজ দাদাবাবু তাদেরও পুজারী ,,,,,,, লাথি’ত আর দেয়নি, আমিও একবার এই কথাটা বলেছিলাম ;(

    ৩] আজকাল বোনদের আদর্শ বেগম রোকেয়ার, আর কাজকাম বেগম শয়তান্নির কথা হাছা,,,। এই বাংলায় নাকি কাকের চাইতে কবি বেশী। কিন্তু এই বাংলার কবিদের কবিতা আজ বর্তমা বলেদিতে পারে। এমন দেশের লোক কবি হতে চাওয়াটা’ই তো স্বাভাবিক।

    ৪] যেমন দৌওলিদিয়া থেকে মূর্তি এনে “FOOG_PARFUMS” মারলেই নতুন নারী হয়না। তেমনে সার্টিফিকেট দিয়ে ছেলে বিবেচনা করলে মহান পুরুষ পাওয়া যায়না। আগে বলতো ভেবহার বংশের পরিচয়, আর এখন বলে ভেবহার শিক্ষার পরিচয়। কারণ খারাপ বংশেও’ত ভালো ছেলে হয় ।

    সব মিলিয়ে আপনার লেখাটা দারুণ ছিলো -{@ (y)

    • অপার্থিব

      বাইম মাছের চৌংঙ্গা!!! হা হাহা… এইটা কি জিনিস ভাই?

      আপনার খালাত বোনের জন্য বরাদ্দ থাকলো কয়েক হাজার ভার্চুয়াল লাইক । এটাই এরশাদ আংকেলের কৃতিত্ব , সময় গড়ায়, যুগ অতিক্রান্ত হয় কিন্ত আংকেলের চৌম্বক শক্তি কমে না।

      //সার্টিফিকেট দিয়ে ছেলে বিবেচনা করলে মহান পুরুষ পাওয়া যায়না//

      হুম, সঠিক উপলব্ধি!!!

      ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

  • জিসান শা ইকরাম

    ফেইসবুক বিরোধী দলের ভূমিকায় আছে বাংলাদেশে, আপনার এই অবজারভেশন একদম সঠিক,
    ফেইসবুকে না গেলে জানাই যাবে না, দেশ উদ্ধারে কত লক্ষ জনতা কাজ করছেন,
    দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ দেশের চিন্তায় ব্যস্ত,
    ইস্যু যদি না থাকত, এরা যে বেকার হয়ে যেত,
    ইস্যু থাকার জন্য সরকারকে অবশ্যই ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ এদের।
    সবার সম্মিলিত লক্ষ লক্ষ কর্ম ঘন্টা অপচয় হচ্ছে ;লাভ কি হচ্ছে আদৌ কোনো?

    ” আই লাইক ইন্ডিয়া ভেরি মাচ। এভ্রি মানথ আই গো টু ইন্ডিয়া। আই গো ফর শপিং, আই গো ফর মাই পাইলস ট্রিটমেন্ট। মাই ওয়াইফ গোজ ফর হার ব্লাউজ মেকিং। আই লাইক বলিউড, আই লাইক শাহরুখ, আই লাইক দীপিকা, আই লাইক ক্যাটরিনা, আই লাইক আলিয়া ভাট… ” হা হা হা হা , মজা পেলাম ভাই।
    হ, মোদিদা তো আমাদের পাশেই আছে 😀

    বেগম রোকেয়া বেঁচে থাকলে ওনার কোন মূল্যায়নই হত না,
    বোরকা ওয়ালী এবং বর্তমান বোরকা প্রণয়নকারীরা খোদ সৌদি আরবের ইসলাম থেকেই আলাদা।

    মেয়েটির মন কি চায়, তা তো ঐ ছেলেটি বুঝতেই ভুল করেছে,
    ব্যার্থ সে।

    লেখা ভাল লেগেছে।

    • অপার্থিব

      //মেয়েটির মন কি চায়, তা তো ঐ ছেলেটি বুঝতেই ভুল করেছে//

      হুম, এই কারনেই তো কবি বলেছেন- রমনীর মন, সহস্র বছরের সখা সাধনার ধন।

      বোরখাওয়ালীরা রোকেয়াকে আইডল মানে, রোকেয়ার লেখা পরীক্ষার খাতায় লিখে জিপিএ ফাইভ পায় কিন্ত রোকেয়ার লেখার মর্ম বোঝার চেষ্টা করে না। আর টাইট বোরখা ওয়ালীরা প্রচলিত কালচার আর রিলিজিয়নের এক ধরনের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করছে।

      আমরা সবাই দিন শেষে হিরো হতে চাই, আমাদের কাজ বা মতের স্বীকৃতি চাই যেটা আমরা বাস্তবে অধিকাংশই পাই না। ফেসবুক রঙ্গিন দুনিয়া অন্তত একটা ভার্চুয়াল স্বীকৃতি তো দেয়। তাই সবাই এখানে হিরোইজম দেখানো তথা দেশ উদ্ধারে ব্যস্ত!!!

      ধন্যবাদ।

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    যদি আনন্দে চোখের জল পড়ে, তাহলে তো অতি দুঃখে হাসি আসার কথা! সেটাই প্রমাণ করার জন্য হো হো করে হাসছি। বেগম রোকেয়া আজকের যুগে থাকলে উনার কল্লা পড়ে যেতো। যে প্রবন্ধ লিখেছিলেন “রসনা বিলাস।” তসলিমা নাসরিন দেশছাড়া, হুমায়ূন আজাদ দিয়ে শুরু লেখক কোপানি। আমরা সবাই বড়ো দেশপ্রেমিক। মোদীদা না তো, মোদী ভাই। দাদা তো বাঙালীদের শব্দ। একটা কথা বিএসএফ এরা কি আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে? জানি না কিন্তু। ফেসবুকের কথা কি আর বলবো! বেশ নাকউঁচু পাবলিকেরা ফেসবুক যারা ব্যবহার করে, তাদেরকে বলবে “ছিঃ ফেসবুকার!” এরাই আবার বিভিন্ন নাম নিয়ে আইডি খোলে। তাছাড়া রাজনীতি নিয়ে যা ঝড় তোলে ফেসবুকে উইদাউট কফি 😀 । রাজাকারের ফাঁসি চাই নিয়ে হাজার হাজার পেজ। তনু হত্যা কবে জানি হলো? অসঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য হয়ে যায়নি তো?

    আর মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের দরকার আজ সবকিছুতেই। প্রায় দেড় যুগ আগে সানন্দায় পড়েছিলাম পাত্র পছন্দ করতে হলে প্রথমে তার মেডিক্যাল রিপোর্ট। 😀

    বেশ লিখেছেন কিন্তু। ফাঁটিয়ে দিয়েছেন। (y)

    • অপার্থিব

      মন্তব্য মোটেও অসঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। আমি যত দূর জানি শুধু বাঙ্গালীরাই নয় মারাঠীরাও বড় ভাইকে দাদা বলে। মোদী অবশ্য মারাঠী নয়, গুজরাটি। বর্ণনা কারী বাঙ্গালী , তাই বাঙ্গালী দৃষ্টিকোন থেকে মোদীকে মোদীদা বলে সম্বোধন করেছে।

      //বিএসএফ এরা কি আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে?//

      বিএসএফ জওয়ানদের বাঙ্গালী বলা হয়েছে তবে স্বীকার করছি তাদের সংলাপ পশ্চিম বঙ্গীয় ঢঙের বাংলাকে রিপ্রেজেন্ট করেনি। আসলে পশ্চিম বঙ্গীয় ঢঙের বাংলাতে আমি নিজেই স্বচ্ছন্দ নই তাই সীমাবদ্ধতার কারণে ঐ দিকটা এড়িয়ে গিয়েছি।

      বাংলার বোরখাওয়ালী মেয়েরা রোকেয়াকে আইডল মানে, রোকেয়ার লেখা পরীক্ষার খাতায় লিখে জিপিএ ফাইভ পায় কিন্ত রোকেয়ার লেখার মর্ম বোঝার চেষ্টা করে না। আফসোস, বড়ই আফসোস!!

      মেডিকেল সার্টিফিকেটের আজকাল বড়ই দরকার কারণ সমাজে প্রচলিত প্রেম বনাম আধুনিক বাস্তবতাবোধের দ্বন্দ তৈরী হয়েছে।

      ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

      • নীলাঞ্জনা নীলা

        যাক আমি নিশ্চিন্ত মন্তব্য নিয়ে আজকাল বেশ চিন্তায় থাকি। ঠিক হলো কি না?
        আপনি ভাঙ্গিয়ে বলার পর সব বুঝলাম।

        আপনাকেও ধন্যবাদ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

      • শুন্য শুন্যালয়

        নীলাপু, অনেকে ব্লগে লিখে ব্লগার হয়েও ব্লগ নিয়ে বাজে কথা বলতে শুনেছি, কিংবা অন্যে বাজে বললে প্রতিবাদ বা রিএক্ট করতে দেখিনি, এতো বৈষম্য কেন কে জানে! ফেসবুক থেকেই সবার ব্লগে আসা, আবার ব্লগে আসা বলেই নিশ্বাস কিছুটা দীর্ঘায়িত হওয়া। দুটাই ভালো দুটাই মন্দ। যারা ফেসবুক নিয়ে বলছে তারাও যখন ফেসবুকে আছে তাহলে অন্যের সেটা শুনে এতো রিএক্ট ই বা কেন আমি বুঝিনা।
        সুনীলের একটা মজার কথা মনে পড়লো, আমরা আমেরিকায় থাকছি, তাদের টাকায় খাচ্ছি, পড়ছি আবার আড্ডা দিতে বসে ধুমাইয়া আমেরিকার গুষ্টি উদ্ধার করছি, আমেরিকানরা শুনে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে, দিস ইজ এ ফ্রি কান্ট্রি ..এমনটাই তো মজার তাইনা সোনা নীলা? 🙂

      • নীলাঞ্জনা নীলা

        শুন্য আপু যে গরু দুধ দেয়, তাকেই আমরা গালি দেই যখন দুধ দেয়না। এটা আমাদের অভ্যাস। নিজেদের ব্লগ নিয়ে যারা বাজে বলে তাও পেছনে আমি মোটেও তাদের ভালো বলতে পারিনা। তবে আমি ফেসবুকের কাছে একটু বেশী কৃতজ্ঞ দশটি বছর লেখার সাথে একটুকুও সংযোগ ছিলোনা। ভুলেই গিয়েছিলাম একসময় লিখতাম। ফেসবুকে এসেই পরিচিতদের পেয়েছিলাম, যাঁরা আমার লেখা পড়তো। তাঁদের উৎসাহ পেয়ে আবার লেখা শুরু। তারপর এই ফেসবুকই নানার সাথে পড়িচয়, ব্লগকে জানা। সত্যি বলতে কি নানাই আমাকে চেনায় ব্লগ কি। নানার কাছে কৃতজ্ঞ সোনেলায় নিয়ে এসেছে আমায়। তা নইলে কিভাবে তোমাদের জানতাম, চিনতাম? এতো কাছের হয়ে গেছো, নিজের বোনের সাথেও কথা হয়না। যতোটা না এখানে তোমাদের সাথে কথা বলি।

        আমি সোনা নীলা হলে, তুমি হীরা শুন্যআপু 🙂

    • অপার্থিব

      প্রথমেই বলা দরকার যে ব্লগ আর ফেসবুকের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। ফেসবুকে লেখার একটা ভার্চুয়াল স্বীকৃতি পাওয়া যায় লাইকের মাধ্যমে , ব্লগে সেটা পেতে মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ব্লগে অনেকে আপনার লেখা পছন্দ করলেও সময়ের অভাবে কিংবা আলস্য বা অনুপ্রেরণার অভাবে অনেকে মন্তব্য করে না। ফেসবুক এ ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়ায় ফেসবুকে স্বীকৃতি তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকের সমস্যা হল এক সময় স্বীকৃতি পাওয়ার নেশা মাথার মধ্যে ভয়াবহ ভাবে চেপে যেতে পারে । ফেসবুকে আপনি কোন মন্তব্য পছন্দ না হলে মন্তব্য মুছে দিতে পারেন, মন্তব্যকারীকে ব্লক করতে পারেন। অর্থাৎ স্বীকৃতি পাওয়ার নেশা থেকে এক সময় স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব আপনার মধ্যে জন্ম দিতে পারে। ব্লগে এটা খাটে না বলে ব্লগ সব সময় তর্ক বিতর্ক , আলোচনা সমালোচনার জায়গা হিসেবে জনপ্রিয় ছিল এবং ব্লগের এই ভূমিকা আরো কিছুদিন থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। বাংলাদেশে ফেসবুকের আবির্ভাব মূলত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট হিসেবে, ২০০৮ সালে আমি যখন প্রথম ফেসবুক ব্যবহার করি তখন মূলত ফান হিসেবে এটাকে ব্যবহার করতাম। তবে সাম্প্রতিক কালে ফেসবুক কেন্দ্রীক লেখালেখি বা সিটিজেন জারনালিজম বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তবে সিরিয়াস লেখার মাধ্যম বা আলোচনা সমালোচনার জায়গা হিসেবে হিসেবে ব্লগের জনপ্রিয়তাও টিকে থাকবে।

      সোনা আর হীরা, একটা মুল্যবান ধাতু আর আরেকটা মুল্যবান জৈব যৌগ । নিজেকে নগণ্য তামা বলে মনে হচ্ছে!!! 🙂

    • অপার্থিব

      তামা নগণ্য না তবে হীরা ও সোনার তুলনায় নগণ্য।

      //আপনার লেখার ভক্ত আমি অপার্থিব। এটা তো জানেন?//

      জানলাম এবং অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ।

  • শুন্য শুন্যালয়

    সাদিয়া নামের মেয়ের ফলোয়ার বেড়ে গিয়েছিল? হা হা হা 😀
    দারুন এক রম্য কিন্তু সেদিন আমিও দেখলাম, এরশাদ সাহেব বলেছেন, দেশে বিএনপির কোন অস্তিত্ব নাই, এবার আওয়ামীলীগ আর জাতীয় পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, এবং জাতীয় পার্টি জিতবে 🙂
    ফেসবুক আসলেই এক কঠিন জিনিস, কোন এক কালে ফেসবুক ছিলোনা, এইটা ভাবলেই ম্যালেরিয়া আসে।
    মোদিদা আমাদের পাশে সবসময়ই আছে, এত লাইক করি বইলাই তো হালকা আধখানা চাঁদ, 😀
    মেডিক্যাল সার্টিফিকেট টা কিন্তু সত্যিই জরুরী, 🙂
    রম্যতো দেখি ভালোই লেখেন 🙂

    • অপার্থিব

      মজার ব্যাপার হচ্ছে সাদিয়া নামের মেয়েরা জানেই না কেন তাদের ফলোয়ার অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে !!!! 😀

      এরশাদের বক্তব্য কমেডি মনে হতে পারে কিন্ত বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এরশাদ একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত হবে।
      পতিত স্বৈর শাসক থেকে আবার ক্ষমতার রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের সৌভাগ্য সবার হয় না।

      ফেসবুক বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। কবির ভাষায় বলতে হয় -দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এই ফেসবুক!!!

      মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের প্রয়োজন বাড়বে কারণ সমাজে প্রচলিত প্রেম বনাম আধুনিক বাস্তবতাবোধের দ্বন্দ তৈরী হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

      কোন কিছুই ভাল মত লিখতে পারি না তাই সবই একটু একটু চেষ্টা করি ।

      ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

      • শুন্য শুন্যালয়

        ভাবছিলাম আইডি সাদিয়া রাখুম কিনা 😀
        পরে ভাবলাম ঐশী নাম বলে ঐশী মেয়ের আত্মহত্যা করার মতো অবস্থা না হয় আবার 🙂

    • অপার্থিব

      আইডি ফেক্সিবল বানায় রাইখেন , যখন যে ইস্যু হিট হয় তখন সেই ইস্যুর উপর ভিত্তি করে নাম চেইঞ্জ হবে। প্রয়োজনে মিশেল ওবামা , প্রয়োজনে বেগম জরিনা। 🙂

      আশা করি এই পদ্ধতিতে আপনি অল্প দিনেই বিখ্যাত হয়ে উঠবেন ।

  • মৌনতা রিতু

    ভাগ্যভাল থাবড় খান দিছিল, তা না হইলে তো লাইক দিয়েই যাচ্ছিল।

    ভালোই রাজনৈতিক বিশ্লেষন চলল। পুরোপুরি ফাটাফাটি।
    একখান কথা আছে না,,,,, অমুকও একখান মানুষ , ডাইলও একখান তরকারি।।
    ততো বর্তমান বিরোধিদলও তাই। পারফেক্ট কপল। শিল্পি ও কবি। 🙂

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ