রহমতের পাহাড়

কামাল উদ্দিন ১ মে ২০২০, শুক্রবার, ১২:২৯:৫৯অপরাহ্ন ভ্রমণ ২৩ মন্তব্য

আল্লাহর আদেশ অমান্য করে গন্ধম ফল খাওয়ায় প্রথম মানব মানবী আদম ও হাওয়াকে স্বর্গোদ্যান থেকে নামিয়ে দেওয়া হলো পৃথিবীতে। আদমকে সরনদীপে (শ্রীলংকা) ও হাওয়াকে জেদ্দায় (সঊদী আরব)। অবশ্য বিষয়টা নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। দীর্ঘ সময় পর তাদের দু'জনের দেখা হয়েছিলো আরাফাতের পাহাড়ে।

আরাফাতের পাহাড় সৌদি আরবের মক্কার পূর্ব দিকে আরাফাতে অবস্থিত একটি পাহাড়। একে জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়) বলেও উল্লেখ করা হয়। রাসূল মুহাম্মদ (সা) এখানে দাঁড়িয়ে হজযাত্রীদের সামনে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। পাহাড়টি গ্রানাইটে গঠিত এবং উচ্চতা প্রায় ৭০ মি।

এই পাহাড়ের চতুর্দিকে দৈর্ঘ্যে প্রস্থে দুই মাইল। এই বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত। ময়দানের তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। ময়দানের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড। এই সড়কের দক্ষিণ পাশে আবেদি উপত্যকায় মক্কার উম্মুল কুরআ বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে প্রায় এক কিলোমিটার। সেখান থেকে দক্ষিণে মসজিদে নামিরায় গিয়ে আরাফাত সীমান্ত শেষ হয়েছে।

ময়দানের অনেকাংশ জুড়ে রয়েছে অনেকগুলো নিমগাছ। এই সব নিমের চারা নাকি বাংলাদেশ থেকে নিয়ে ওখানে রোপণ করা হয়েছে। নিমগাছ রোপণের পর প্রতিদিন গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া হয়। পানি দেওয়ার কাজ করেন বাংলাদেশি শ্রমিকেরা। কিছু দূর পর পর পানির ট্যাপ বসানো আছে। শ্রমিকেরা তাতে পাইপ লাগিয়ে গাছে পানি দেন, গাছের পরিচর্যা করেন।..........জাবাল মানে পাহাড়। জাবালে রহমত হলো, রহমতের পাহাড়। এই পাহাড়ে একটি উঁচু পিলার আছে। একে কেউ কেউ দোয়ার পাহাড়ও বলেন। পিলারের কাছে যাওয়ার জন্য পাহাড়ের গায়ে সিঁড়ি করা আছে।


(২) ওখানে গিয়ে প্রথমেই চমৎকৃত হলাম পাহাড়ের নামটা বিভিন্ন ভাষায় লেখা, তার মাঝে বাংলাও আছে।


(৩/৪) আরাফাতের ময়দানটা অনেক বড়, তবে রহমতের পাহাড়ের আশেপাশে বেশ কিছুটা এলাকা পাকা করা। এবং উপরে উঠার জন্য সিড়ি বানানো রয়েছে।


(৫) পাকা সিড়ি বেশ প্রসস্ত।


(৬) সিড়িতে উঠার শুরুতেই এমন ভাগ্য ফেরানো রংবেরংএর পাথরের পসার সাজানো।


(৭) ওখানেও মানুষ কম যায় না, পাহাড়ের গায়ে আরবী ইংরেজীতে নানা কিছু লিখে রেখেছে।


(৮) পাহাড়ের উপরটা মোটামুটি সমতল, সেখানে আবার বেদীর মতো কিছুটা অংশ উঁচু করে তার উপর দন্ডায়মান একটা পিলার।


(৯/১০) পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে নিচের ডান বাম দিকের ছবি।


(১১) জ্বালালী কবুতরগুলো মক্কার সর্বত্র ব্যপকভাবে রয়েছে।


(১২/১৩) পাহাড়ের উপরের সমতলভুমিতে রয়েছে প্রচুর দোকান পাঠ।


(১৪/১৫) মহিলা দোকানি বা ক্রেতাও রয়েছে অনেক।


(১৬) বাংলাদেশী নিমগাছগুলোর ওপারে মসজিদে নামিরা‍। আরাফার ময়দানের পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত মসজিদে নামিরা‍। বিদায় হজের সময় আরাফার দিনে যেখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজের ইমামতি করেছিলেন এবং খুতবা দিয়েছিলেন সেখানেই হিজরী দ্বিতীয় শতকে নামিরা মসজিদটি নির্মিত হয়।
মসজিদের বর্তমান নান্দনিক রূপটি গ্রহণ করেছে সাম্প্রতিককালের সৌদি শাসনামলে। মসজিদটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মসজিদের কিবলাহমুখি সামনের অংশ আরাফার ময়দানের বাইরে পড়েছে এবং এর পিছনের অংশ আরাফার মধ্যেই রয়েছে। মসজিদটির আয়তন ১,১০০০০ বর্গমিটার। এখানে একত্রে ৩,৫০,০০০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটিতে রয়েছে ৬০ মিটার উঁচু ৬টি মিনার, তিনটি গম্বুজ ও ১০টি প্রধান দরজা। সুবৃহৎ এ মসজিদটির কাছে রয়েছে জাবালের রহমত হাসপাতাল।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, এই মসজিদের স্থানেই ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত ইবরাহিম (আ.) কে হজের নিয়মকানুন শিক্ষা দিয়েছিলেন।


(১৭) উঁচু স্তম্বটায় এখানে কি কি করা নিষেধ তার দিকনির্দেশনা রয়েছে। এতে বাংলা লেখাও রয়েছে।


(১৮/১৯) এখানের দোকানগুলোতে বেশীরভাগই ধর্মীয় সম্পৃক্ততা সম্পন্ন মালামাল বেচা কেনা হয়।


(২০) সব শেষে নীল স্তম্বটার সাথে মেচিং করা একটা টিশার্ট গায়ে দিয়েই ওখানে গিয়েছিলাম :-B

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ