বাংলা লিপিতে ই উচ্চারণের জন্য ২টি করে বর্ণ ব্যবহৃত হয়। সংস্কৃত ভাষা থেকে প্রভাবিত বলে সংস্কৃত ভাষার মতনই বাংলা লিপিতে ই এবং ঈ উচ্চারণের জন্য উচ্চারণের তারতম্যের ভিত্তিতে হ্রস্ব (ই ) এবং দীর্ঘ (ঈ )বর্ণ ব্যবহৃত হয়।
* সকল অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশী, বিদেশী, মিশ্র শব্দে কেবল ই-কার চিহ্ন ি ব্যবহৃত হবে৷ যেমন: আরবি, আসামি, ইংরেজি, ইমান, ইরানি, উনিশ, ওকালতি, কাহিনি, কুমির, কেরামতি, খুশি, খেয়ালি, গাড়ি, গোয়ালিনি, চাচি, জমিদারি, জাপানি, জার্মানি, টুপি, তরকারি, দাড়ি, দাদি, দাবি, দিঘি, নানি, নিচু, পশমি, পাখি, পাগলামি, পাগলি, পিসি, ফরাসি, ফরিয়াদি, ফারসি, ফিরিঙ্গি, বর্ণালি, বাঁশি, বাঙালি, বাড়ি, বিবি, বুড়ি, বেআইনি, বেশি, বোমাবাজি, ভারি (অত্যন্ত অর্থে), মামি, মালি, মাসি, মাস্টারি, রানি, রুপালি, রেশমি, শাড়ি, সরকারি, সিন্ধি, সোনালি, হাতি, হিজরি, হিন্দি, হেঁয়ালি।
* পদাশ্রিত নির্দেশক টি-তে ই-কার হবে৷
যেমন: ছেলেটি, লোকটি, বইটি৷
* সর্বনাম, বিশেষণ, ক্রিয়া-বিশেষণ ও যোজক পদরূপে কী শব্দটি ঈ-কার লেখা হবে।
যেমন: এটা কী বই? কী আনন্দ! কী আর বলব? কী করছ? কী করে যাব? কী খেলে? কী জানি? কী দুরাশা! তোমার কী! কী বুদ্ধি নিয়ে এসেছিলে! কী পড়ো? কী যে করি! কী বাংলা কী ইংরেজি উভয় ভাষাতেই তিনি পারদর্শী।
* কীভাবে, কীরকম, কীরূপে প্রভৃতি শব্দেও ঈ-কার হবে।
* যেসব প্রশ্নবাচক বাক্যের উত্তর হ্যাঁ বা না হবে, সেইসব বাক্যে ব্যবহৃত ‘কি’ হ্রস্ব ই-কার দিয়ে লেখা হবে।
যেমন: তুমি কি যাবে? সে কি এসেছিল?
* সংস্কৃত ইন্-প্রত্যয়ান্ত শব্দের দীর্ঘ ঈ-কারান্ত রূপ সমাসবদ্ধ হলে সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়ম-অনুযায়ী সেগুলিতে হ্রস্ব ই-কার হয়।
যেমন: গুণী → গুণিজন, প্রাণী → প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রী → মন্ত্রিপরিষদ।
* তবে এগুলোর সমাসবদ্ধ রূপে ঈ-কারের ব্যবহারও চলতে পারে।
যেমন: গুণী → গুণীজন, প্রাণী → প্রাণীবিদ্যা, মন্ত্রী → মন্ত্রীপরিষদ
* ইন্-প্রত্যয়ান্ত শব্দের সঙ্গে -ত্ব ও -তা প্রত্যয় যুক্ত হলে ই-কার হবে।
যেমন: কৃতি → কৃতিত্ব, দায়ী → দায়িত্ব, প্রতিযোগী → প্রতিযোগিতা, মন্ত্রী → মন্ত্রিত্ব, সহযোগী → সহযোগিতা।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
২০টি মন্তব্য
মিষ্টি জিন
আমার জন্য খুবই প্রয়োজনিয় পোষ্ট। দীর্ঘ দিন বাংলা না লেখার কারনে ি এবং ী কার নিয়ে বেশ সমস্যায় আছি।
ধন্যবাদ আপু।
নিহারীকা জান্নাত
প্রচুর বাংলা পড়লে এ সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবেন আশাকরি। আর এসব তো সবাই পড়েছি ছাত্রজীবনে। এখন একটু ঝালিয়ে নেয়া আর কি।
আপনার নাম দেখে কনফিউজড, কি ডাকবো? আপা নাকি ভাই? মিষ্টি যেহেতু আপাই হবেন হয়তো 🙂 পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মিষ্টি জিন
সেই ছোট থেকে এই পর্যন্ত যে শখ টা ধরে রাখতে পেরেছি তা ঐ বই পড়া । ধন্যবাদ উপদেশের জন্য। আপু মনে হঁয় আমার পোষ্ট পড়েন নি তাই আমি ভাইয়া না আপু বুঁঝতে পারছেন না।
আমি আপু । 😀
ভাল থাকবেন ।
নিহারীকা জান্নাত
নামটা বড়ই অদ্ভুত। জ্বীন আবার মিষ্টি। মিষ্টি বলে ভয় পেলাম না, ভুত হলে ভয় পেতাম। ধন্যবাদ আপা 🙂
নাজমুস সাকিব রহমান
বাংলা একাডেমী থেকে বানানের ওপর প্রকাশিত ছোট একটা বই আছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
নিহারীকা জান্নাত
বইটার নাম জানালে ভালো হতো ভাই। আমরা অনেকেই উপকৃত হতাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
জানছি আর জানছি।
নিহারীকা জান্নাত
অনেককিছু ভুলে গিয়েছিলাম। পোস্টগুলো দিতে গিয়ে আবার পড়া হয়ে যাচ্ছে। নতুন অনেক কিছু আমিও জানছি। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আবু খায়ের আনিছ
ধন্যবাদ, জেনেই যাচ্ছি আর শিখছি ।
নিহারীকা জান্নাত
আমিও নতুন করে শিখছি।
ধন্যবাদ ভাই।
শুন্য শুন্যালয়
অর্থাৎ হ্যাঁ /না দিয়ে উত্তর না দিতে পারলে সবগুলো কী তে ঈ যুক্ত হবে। আচ্ছা এটাই আপাতত শান দিতে থাকি, বাঁকি তদ্ভব, তৎসম (আল্লাহ্ এগুলা জানি কী?) পরে দেখুমনে। অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে লিখছেন বলে। উপকৃত পোস্ট।
নিহারীকা জান্নাত
আমিও এটাই মনে রাখার চেষ্টা করছি। আর তৎসম, তদ্ভব শব্দ আমরা ভুলে গিয়েছি বলে ১ম পর্ব কিন্ত শব্দের প্রকারভেদ দিয়ে সাজিয়েছি, যাতে সবাই দেখে নিতে পারে। ওখান থেকে সময় পেলে দেখে এসো, বুঝতে সহজ হবে।
বাংলা বানান কি যে ভ্যাজাইল্যারে বাবা, লিখি আর ভুলি। 🙁
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
কতো কি যে মনে করিয়ে দিলেন!
সুন্দর এবং খুবই প্রয়োজনীয় পোষ্ট।
ধন্যবাদ আপনাকে এই কষ্টটুকুর জন্য।
নিহারীকা জান্নাত
আপা, পর্বগুলো তৈরি করতে গিয়ে আমিও অনেক কিছু শিখছি, জানছি, মনে করতে পারছি। এত আমার নিজেরও উপকার হচ্ছে। সাথে সবার যদি কিছুমাত্র উপকার হয়, কেউ যদি এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও জানতে পারেন, তবে আমারও ভালো লাগবে।
কষ্ট করে পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপা।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো থাকুন। পরের পর্ব কবে আসবে? অপেক্ষায় আছি।
নিহারীকা জান্নাত
খুব শীঘ্রই আসবে। এবার আসবে ‘র’ আর “ড়” কে নিয়ে 🙂
জিসান শা ইকরাম
আপনাকে আল্লাহ্ বাঁচাইয়া রাখুক,
আমি বানানে প্রচুর ভুল করি, আমার জন্য অত্যন্ত উপকারী পোষ্ট।
শুভ কামনা।
নিহারীকা জান্নাত
দোয়ার জন্য ধন্যবাদ। এত কষ্ট করে বানান বিষয়ক লেখা দিচ্ছি, এরপর কিন্ত ভুল করা চলবে না। 🙂
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
ফেইসবুকে লগিন অবস্থায় সোনেলায় লগিন হবেন। তাহলে দেখতে পাবেন কেউ ফেইসবুক থেকে মন্তব্য করেছেন কিনা। আপনার লেখায় ফেইসবুক থেকে একটি মন্তব্য আছে প্রথমেই, হয়ত নজর এরিয়ে গিয়েছে। তিনি হয়ত আশা করেন যে আপনি তার মন্তব্যটি দেখেছেন।
নিহারীকা জান্নাত
আমি দু:খিত। ফেসবুক কমেন্টটা চোখে পড়েনি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।