২৯ জুলাই জিন্নাহ সাহেব অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ কাউন্সিল সভা বোম্বে শহরে আহবান করলেন। অর্থের অভাবের জন্য আমি যেতে পারলাম না। জিন্নাহ সাহেব ১৬ আগস্ট তারিখে 'ডাইরেক্ট একশন ডে' ঘোষণা করলেন। তিনি বিবৃতির মারফত ঘোষণা করেছিলেন, শান্তিপূর্ণভাবে এই দিবস পালন করতে। ব্রিটিশ সরকার ও ক্যাবিনেট মিশনকে তিনি এটা দেখাতে চেয়েছিলেন যে, ভারতবর্ষের দশ কোটি মুসলমান পাকিস্তান দাবি আদায় করতে বদ্ধ পরিকর। কোনো রকম বাধাই তারা মানবে না। কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভার নেতারা এই 'প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস', তাদের বিরুদ্ধে ঘোষণা করা হয়েছে বলে বিবৃতি দিতে শুরু করলেন।
আমাদের আবার ডাক পড়ল এই দিনটা সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য। হাশিম সাহেব আমাদের নিয়ে সভা করলেন। আমাদের বললেন, "তোমাদের মহল্লায় মহল্লায় যেতে হবে, হিন্দু মহল্লায়ও তোমরা যাবে। তোমরা বলবে, আমাদের এই সংগ্রাম হিন্দুদের বিরুদ্ধে নয়, ব্রিটিশের বিরুদ্ধে, আসুন আমরা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এই দিনটা পালন করি।" আমরা গাড়িতে মাইক লাগিয়ে বের হয়ে পড়লাম। হিন্দু মহল্লায় ও মুসলমান মহল্লায় সমানে প্রপাগান্ডা শুরু করলাম। অন্য কোন কথা নাই, 'পাকিস্তান' আমাদের দাবি। এই দাবি হিন্দুর বিরুদ্ধে নয়, ব্রিটিশের বিরুদ্ধে। ফরোয়ার্ড ব্লকের কিছু নেতা আমাদের বক্তৃতা ও বিবৃতি শুনে মুসলিম লীগ অফিসে এলেন এবং এই দিনটা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু মুসলমান এক হয়ে পালন করা যায় তার প্রস্তাব দিলেন। আমরা রাজি হলাম। কিন্তু হিন্দু মহাসভা ও কংগ্রেসের প্রপাগান্ডার কাছে তারা টিকতে পারল না। হিন্দু সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে দিল এটা হিন্দুদের বিরুদ্ধে।
সোহরাওয়ার্দী সাহেব তখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী। তিনিও বলে দিলেন, "শান্তিপূর্ণভাবে যেন এই দিনটা পালন করা হয়। কোনো গোলমাল হলে মুসলিম লীগ সরকারের বদনাম হবে।" তিনি ১৬ আগস্ট সরকারী ছুটি ঘোষণা করলেন। এতে কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা আরও ক্ষেপে গেল।
অসমাপ্ত আত্মজীবনী, শেখ মুজিবুর রহমান। (পৃষ্ঠা নং-৬৩)
★ পর্ব-৫০ প্রকাশের পর ধারাবাহিক প্রকাশ কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
৯টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
তবুও আমি অপেক্ষায় থাকবো রুবা’পু।
আজকাল সোনেলায় সকলেই ব্যস্ত। আর যাঁরা আসেন, উনারাও উনাদের মনের মতো পোষ্টে মন্তব্য করেন। আমি এই পোষ্টকে ভালোবাসি, পছন্দ করি। তাই মন্তব্য করি। অবশ্য অনেকে আমার পোষ্টেও মন্তব্য করেন না, তবুও আমি উনাদের পোষ্টেও মন্তব্য করি। তবে একদিন হয়তো সেই মন্তব্য দেয়াটাই বন্ধ হয়ে যাবে। একতরফা তো কোনো কিছুই হয়না, তাই না আপু? যাক এসব কথা।
ভালো থেকো। তবু যদি পারো লিখে যাও। চোখ খুলে যারা ঘুমায়, তাদেরকে জাগাবে কি করে বলো! -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এই তোমার জন্যই মনে হয় লিখতে হবে। আমি মন্তব্যের ব্যাপারটা থেকে গুরুত্ব দিচ্ছি পাঠক কেমন তার উপর। মন্তব্যকারী থেকে এই আত্মজীবনীর ক্ষেত্রে পাঠকের আগ্রহের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, যদিও সেটা একমাত্র মডুরাই বলতে পারবেন।
আর তুমি একথা বলছো! আমি নিজেও তো এই দোষে দুষ্ট। তো আমি কি করে আশা করবো বলো?
ফেবু আসক্ত আমি। কিন্তু মাঝেমধ্যে ফেবুতেও এখন বসতে ইচ্ছে করে না। একমাত্র এই পোস্টটাই আমি বিরামহীন নিয়ম করে দিয়ে গেছি।
ভালো থাকো দিদি। আসবো তোমার জন্যই।
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু খুব ভালো লাগছে তোমার ওই কথাটি শুনে, “আসবো তোমার জন্যই।” আমিও অপেক্ষায় থাকবো প্রতিটি শনিবার।
ভালো থেকো আপু। -{@
ইঞ্জা
লিখে যান সাথে থাকবো। (y)
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y) (y) (y)
ইঞ্জা
-{@
অলিভার
সেই উত্তাল সময়ের অনেকটাই চলে এসেছে বঙ্গবন্ধুর আত্ম-জীবনীতে।
খুব বেশি বিরতিতে না যাবার অনুরোধ রইল। আশা করব দ্রুতই ফিরে আসবেন পোষ্ট নিয়ে।
টাইপ করাটা যদি যদি সমস্যার কারণ হয় তবে আমি আপনাকে সে ক্ষেত্রে কিছু সহায়তা করতে পারি। তবুও আশা করব এভাবে ছোট ছোট আকারে পোষ্ট করে আমাদের সকলের আকর্ষন ধরে রাখবেন 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ। সে ইচ্ছা আমারও আছে। আত্মজীবনী বলেই এমনটা ইচ্ছা।
অলিভার
অপেক্ষা থাকবে আপনার পরবর্তী পোষ্টের জন্যে 🙂