জনৈক ফেসবুক সেলিব্রেটি , ধরি তার নাম ‘ক’ । সচারচার সেলিব্রেটি বলতে যা বোঝায় , জনাব ‘ক’ তা নন । ‘ক’ যে খুব ভালো লেখেন তা কিন্তু নয় । তবে আইডিগুলো তাকে চেনে । আমার মত জনাব ‘ক’ এর চরিত্রগত কিছু কানাঘষা ভার্চুয়ালি চাউর থাকলেও , অন্যান্য দিক থেকে ‘ক’ আমার চেয়েও ভালমানুষ । ‘ক’ মিথ্যা বলেন না । ‘ক’ শো-অফ করেন না । ফেসবুকে ‘ক’ এর অনেক খাতিরের মানুষ থাকলেও , ‘ক’ কারো সাথে খুব একটা বাস্তবে দেখাও করেন নাই । আরেকটা বিষয় , ‘ক’ লুলামি করেন না , তবে প্রেম করেন । এরপরেও নারীরা তাকে বেশ পছন্দ করেন ।
একদিন জনাব ‘ক’ এর একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসল । উক্ত আইডিটি রবীন্দ্র নাথ এর বিখ্যাত একটি নৃত্য নাট্য এর নায়িকার নামে খোলা । এটা দেখে ‘ক’ বাবু প্রলুব্ধ হয়ে “দেখাই যাক না , ফেইক না রিয়েল” এই ভেবে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একছেপ্ট করলেন । এক্সেপ্ট করে বুঝতে পারলেন আইডিটি ফেইক নয় , কারণ উক্ত আইডির মালকিনের প্রচুর বিভিন্নভাবে তোলা ছবি সেখানে বিদ্যমান ।
‘ক’ সাহেব সেলিব্রেটি মানুষ , প্রতিদিনই তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে । অনেকর টা তিনি গ্রহন করেন । ফলাফলে গ্রহন করে ব্যাপারটা তিনি ভুলেও গেলেন । এভাবে সময় কিছুটা কাটল । একদিন রাতে ‘ক’ সাহেব খেয়াল করলেন উক্ত আইডি থেকে প্রচুর পরিমানে গণহারে ‘ক’ সাহেবের পুরানো পোস্ট এ লাইক দিয়ে যাচ্ছে । একরকম বিরক্ত হয়ে ‘ক’ সাহেব আইডি টিতে মেসেজ দিলেন “আপু এত লাইক দিয়েন না , ডর লাগে” । ব্যস সেই শুরু , তাঁদের মধ্যে এরপরে কথা চলতেই থাকল । ধরি উক্ত আইডির মালকিনের নাম “গ” ।
‘ক’ সাহেব কথা বলে জানতে পারলেন , ‘গ’ একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় মেয়ে । অনেক স্ট্রাগেল করে তার বাবা তাকে পড়াশুনা করাচ্ছে । ‘গ’ এর আগে একটা রিলেশন ছিল । কিন্তু তার প্রেমিক ছিল মুসলিম , ফলাফলে ব্রেক আপ হয়ে গেছে । ‘গ’ একটি প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম চাকুরী করে । ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে এবং ‘গ’ এর মাথাপাগলা একটা ভাই আছে । যে কিনা মেডিক্যালে পড়ে ।
‘ক’ এবং ‘গ’ এর বেশ জমে গেলো । একে একে ‘ক’ তার নিজের কথা , পরিবারে কথা সব খুলে বলল । তার প্রাক্তন প্রেমিকাদের কথা বলল । বন্ধুদের কথা বলল । আস্তে আস্তে ‘গ’ , ‘ক’ এর বন্ধুদের সাথেও পরিচিত হল । ‘ক’ এর ভাষ্য মতে মেয়েটা সুন্দরী ছিল না , মেয়েটির ফ্যামিলি স্ট্যাটাস একদম খারাপ ও আর্থিক ভাবে অসচ্ছল , মেয়েটি ভালো কোন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীও না । কিন্তু সে ছিল খুবই কেয়ারফুল । দূরে থেকে ‘ক’ এর প্রতি ও তার পরিবারের প্রতি যতটা কেয়ার নেওয়া যায় ততটা কেয়ার ‘গ’ নিত । তার এই কেয়ারফুল মনোভাব ও কিঞ্চিত পাগলাটে ধাঁচের ‘ক’ কে লাগাম পরানোর ক্ষমতা দেখে , বুদ্ধিমান ‘ক’ বোকার মত একটা কাজ করে বসল , মানে ‘গ’ এর প্রেমে পড়ে গেলো । প্রেমে পড়াটা কি বোকার মত কাজ ? অবশ্যই না । তাহলে আমি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বোকা প্রাণী । কারণ আমি প্রেম করি,প্রেমে পড়িও । তাহলে কেন বললাম বোকার মত কাজ ? যদি এই বিরক্তিকর লেখাটি আপনারা পুরাটা পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন কেন বোকার মত কাজ বলেছি ।
এখন আসুন ‘ক’ এর ব্যাপারে কিছু কথা বলি । ‘ক’ হ্যান্ডসাম, ড্যাম স্মার্ট না হলেও মোটামুটি চলনসই চেহারার একজন পুরুষ । তার হাইট আমার তুলনায় বেশি এবং আমাকে কেউ “বাইট্যা” বলে না । সরকারী চাকুরীজীবী বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র , ‘ক’ এর একটি বড় বোন আছে যিনি বিবাহিতা এবং এডমিন ক্যাডার । ‘ক’ ছাত্র হিসাবে খারাপ না এবং একটি মধ্যম মানের প্রতিষ্ঠান থেকে ভালো বিষয়ে,ভালো নম্বর নিয়ে ‘ক’ স্নাতক ডিগ্রী তখন শেষ করেছিল । তখন সে বেকার হলেও, তার ফিউচার ফিলিপ্স বাতির মত ফকফকা এটা নিঃসন্দেহে বলা যেত ।
সবকিছুই মিস ‘গ’ জানতেন । একদিন ঝড় বৃষ্টির গভীর রাতে ‘ক’ ও ‘গ’ এর মধ্যে কথা বলার সময় ‘ক’ ও ‘গ’ একে অপরকে “ভালোবাসি” বলে ফেলল । তবে ‘গ’ শর্ত দিল বিয়েটা খুব দ্রুত করতে হবে । আর তা যদি সম্ভব নাও হয় তাহলে অন্তত দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা পাকা করে রাখতে হবে । ‘ক’ তাতে রাজি হল , কারণ অ-রাজি হওয়ার মত কোন শর্ত ‘গ’ দেয় নি ।
বেশ ভালোভাবেই ‘ক’ ও ‘গ’ এর মধ্যে প্রেম চলতে থাকল । প্রেম হয়ে যাওয়ার পরে তাদের মধ্যে দেখা হল এবং দুজন দুজনকে বেশ পছন্দও করল । দুধ যত ফুটানো হয় তত ঘন হয় । নিয়মিত পরিচর্যায় তাঁদের প্রেমও ঘন হতে থাকল । তাঁদের মধ্যে বার বার দেখা হল , পাশাপাশি বসা, রেস্টুরেন্টে খাওয়া,সেলফি তোলা,ঢাকার আশেপাশে ঘুরতে যাওয়া “সবই” চলছিল । ‘ক’ মিস ‘গ’ এর ভালোবাসায় যতটা না মুগ্ধ হচ্ছিল তার চেয়ে বেশি জড়িয়ে যাচ্ছিল তার কেয়ারিং স্বভাবের কারণে । যেমন তাঁদের দেখা হলে ‘গ’ নিজেই সব খরচ বহন করতে চাইত , এবং বেশিরভাগ খরচ ‘গ’ এর পার্স থেকেই বের হত । যুক্তিটা ছিল “তুমি তো বেকার,আমি তো পার্ট টাইম জব করি” । ‘ক’ তার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের যতটা খোজ খবর নিত তার চেয়ে বেশি খোজ রাখত ‘গ’ । ‘গ’ এর কারণেই সে বার বার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসত , শরীরের খোজ খবর নিত ।
এভাবে বেশ ভালোই চলছিল সব । ‘ক’ চাকুরীর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সেই সাথে ‘গ’ কে বিয়ে করার ব্যাপারেও নিজেকে প্রস্তুত করছিল । কিন্তু কিছু কিছু বিষয় ‘ক’ কে একটু একটু কনফিউসড করছিল । যেমন ‘গ’ মাঝে মাঝেই দির্ঘ সময় ফোন রিসিভ করে না । জিজ্ঞাসা করলে বেশিরভাগ সময়েই জবাব দেয় “ফোন রুমে রেখে পাশের রুমে গল্প করতে গয়েছিলাম” , “ফোন চার্জারে লাগানো ছিল” , “ফোন সাইলেন্ট করা ছিল” ইত্যাদি । এরবাইরেও মাঝে মাঝেই ‘গ’ এর ফোন দীর্ঘ সময় ওয়েটিং থাকত । এব্যাপারে প্রশ্ন করলে জবাব দিত “মামা ফোন করেছিল” , “ভাই ফোন করেছিল” , “আমার বান্ধবী অমুক বিদেশে থাকে সে ফোন করেছিল” , “কাজের জায়গা থেকে ফোন করেছিল” , “মা ফোন করেছিল” , “বিল্লার ব্রেক-আপ হইছে তাই মন খারাপ আমি স্বান্তনা দিচ্ছিলাম” ইত্যাদি । ‘ক’ কিছুতেই মেলাতে পারত না “মা কেন রাত ১২ টার পরে ফোন দেবে” , “কাজের জায়গা থেকে কেন রাত ১২ টার পরে ফোন দেবে” । এই বিষয় নিয়ে বেশি প্রশ্ন করলে ‘গ’ জিজ্ঞাসা করত “তুমি কি আমাকে সন্দেহ কর” ? এই প্রশ্নের জবাবে কোন প্রেমিকের পক্ষেই বলা পসিবল না যে “হ্যা করি” তাহলেই ৩য় বিশ্ব যুদ্ধের সুচনা হবে, এমনকি সম্পর্ক ভেঙ্গেও যেতে পারে । তাই ‘ক’ এর মনে একটু খচ খচ করলেও ‘ক’ এসব নিয়ে ভয়ে ঘাটাতো না । এর বাইরে ‘ক’ আরেকটা বিষয় আবিষ্কার করল,তা হল “রাতে তাঁদের কথা হয়ে যাওয়ার পরে প্রতিদিনই ‘গ’ এর ফোন ওয়েটিং থাকে । প্রশ্ন করলে সদ উত্তর ‘গ’ দেয় না । আবার বেশি প্রশ্ন করলে ঝগড়া লেগে যায় ।
একদিন এসব নিয়ে তাঁদের মধ্যে একটা যুদ্ধ হয়ে গেলো । শেষে ‘গ’ কথা দিল তার ফোনে কথা বলার এই অভ্যাস সে হুট করে বন্ধ করতে পারবে না । তবে সময় দিলে সে নিজেকে শুধরে নেবে । ‘ক’ ভবিষ্যতের কথা ভেবে ‘গ’ কে সময় দিল । তাঁদের প্রেম আবার স্মুথলি চলতে থাকল ।
এর মধ্যে ‘গ’ তার দাদু দিদাকে ‘ক’ এর ছবি দেখাল , তারা নাত-জামাই হিসাবে ‘ক’ কে পছন্দ করল । ‘গ’ এর মায়ের সাথে ফোনে ‘ক’ এর কথা হল , তিনিও ‘ক’ কে পছন্দ করলেন । এসবের ভিত্তিতে ‘ক’ তার মা ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজন কে ‘গ’ এর ছবি দেখালো । স্বাভাবিক ভাবে চেহারা নিয়ে সবার একটু আপত্তি থাকলেও একমাত্র ছেলে ‘ক’ এর আগ্রহ দেখে সবাই রাজিও হল । ‘ক’ এর মধ্যে একটা মাঝারি ধরনের সরাকারি চাকুরী পেয়ে গেলো । তবে সে ‘গ’ এর কাছে সেটা গোপন রাখল , যে একবারে পারিবারিক ভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ‘গ’ কে সারপ্রাইজ দিয়ে দেবে । কিন্তু ‘ক’ জানত না তার জন্যে এর চেয়ে বড় সারপ্রাইজ নিয়ে ‘গ’ অপেক্ষা করছে ।
প্রতিদিনকার মত ‘ক’ আর ‘গ’ রাতে ফোনে কথা বলছিল । এর মাঝে ‘ক’ এর ফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসল দুইবার । ‘গ’ এর সাথে কথা শেষ করে ‘ক’ যখন সেই নাম্বারে ফোন দিল , তখন ওই নাম্বার ওয়েটিং ছিল । ব্যস মিটে গেলো । এরপরের দিন দুপুর বেলা যখন ‘ক’ আর ‘গ’ আবার কথা বলছিল তখন আবার সেই নাম্বার থেকে কল আসল । তাই কথা শেষ করে ‘ক’ ওই নাম্বারে আবার ফোন দিল , কিন্তু ফোন রিসিভ হল না । দুপুরের ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ‘ক’ এর মধ্যে ওই নাম্বার থেকে আবার ফোন আসল । ‘ক’ ফোন রিসিভ করে জানতে চাইল কে? ওই পাশ থেকে বলল “আপনি আমাকে চিনবেন না, আপনার সাথে আমি একটু কথা বলতে চাই” । ‘ক’ বলল ‘বলুন’ । মোদ্যাকথা ওই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে যা বলল তার সারমর্ম “আমি ‘গ’ এর বয়ফ্রেন্ড । ৭-৮ বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক । আপনি যদি মানসিক ভাবে ‘গ’ এর সাথে জড়িয়ে পড়েন তাহলে এখনই কেটে পড়ুন । কারণ আমাদের কোর্ট ম্যারেজ হয়ে গেছে , সেইসাথে আমাদের বাড়িও পাশাপাশি । তাই আপনি চাইলেও ওকে ছিনিয়ে নিতে পারবেন না” ।
‘ক’ ফোন দাতার সাথে কথা বাড়ালো না । ‘গ’ কে নাম্বার টা মেসেজে পাঠিয়ে , ফোন দিয়ে সব কিছু বলল । ‘গ’ বলল , ওয়েট আমি সব কিছু জানাচ্ছি । কিছুক্ষণ পরে ‘গ’ ফোন দিল । বলল দুজনকেই আমার কিছু কথা জানানো দরকার । তখন ‘ক’ বুঝতে পারল কনফারেন্সে আরও কেউ একজন আছে । এরপরে ‘গ’ বলা শুরু করল “শোয়েব আর আমার অনেক দিনের সম্পর্ক,আমাদের বলতে গেলে বিয়েই হয়ে গেছে।তবে ‘ক’ তোমাকে আমার ভালো লেগেছিল । ভেবেছিলাম বিয়ে করব । তবে আসলে আমার পক্ষে শোয়েব কে ভুলে যাওয়া সম্ভব না । আমি সরি” । এরপরে ‘ক’ এর আর কি বলার থাকতে পারে ? ‘ক’ শুধু বলল “আমি তো গায়ের উপরে গিয়ে তোমার সাথে প্রেম করি নি । তুমি নিজেই এগিয়ে এসেছ বলেই আমাদের প্রেম টা হয়েছে । এত সব যখন ছিলই তাহলে আমাকে কেন এর সাথে জড়ালে” ? জবাবে ‘গ’ বলল “আমি সরি , ভুল হয়ে গেছে আমাকে পারলে ক্ষমা করে দাও” । ‘ক’ এর পরে আর কি বলবে ? টেক-কেয়ার বলে ফোন টা রেখে দিল । এরপরেও অনেক ঘটনা ঘটেছে । ‘গ’ এর পরিবার ‘ক’ এর সাথে কথা বলেছে । শোয়েব ‘ক’ কে বারবার ফোন করেছে । কিন্তু সেসবে আমি যাবো না । এই ঘটনার পরে ‘ক’ বুঝতে ও জানতে পারল যে রাতে ‘গ’ কারণ ছাড়াই ফোন রিসিভ করে নি , সে রাতে ‘গ’ এবং শোয়েব এক সাথে ছিল । আর ফোন ওয়েটিং যতবার পেয়েছে ততবারই ‘গ’ শোয়েবের সাথে প্রেম করেছে ।
‘ক’ আমার ফেসবুকের এক বড় ভাই । উনি গতরাতে আমাকে ঘটনাটি বললেন । প্রায় একই রকম ভাবে আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি । তবে স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে ‘গ’ এরকম কেন করল ? আমার খুব ইচ্ছা করছে এরকম ‘গ’ যারা আছে তাঁদের কাছে জিজ্ঞাসা করি “আপনারা এমন কেন করেন” ? প্রেম হতে যেমন কিছু দরকার হয় না , প্রেম ভেঙে যেতেও কিছু লাগে না । কিন্তু এরকম নষ্টামি মানুষ কেন করে ? আমারও একাধিক প্রেম ছিল । কারো ব্যাপারে সিরিয়াস ছিলাম , কারো ব্যাপারে না । কিন্তু দুইটি রিলেশন আমি কখনও একই সাথে চালাই নি । কাউকে ফালতু স্বপ্নের জ্বালে আমি আটকাইনি । অন্তত এরকম অপমান আমি কাউকে করি নি । কাউকে পরিবারে সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সম্পর্কের ভিত্তি শক্ত বানাই নি ।
‘ক’ দাদা এখন ভালো চাকুরী করেন । বিয়ের জন্য মেয়েও ঠিক করে ফেলেছেন । তবে উনি ‘গ’ এর দেওয়া অপমান টা ভুলতে পারছেন না । এরকম অপমান কি আসলেই সহজে ভোলা যায় ? উনি একটা কথা বলেছেন কালকে “আমার খুব ইচ্ছা করছিল এই অপমানের বদলা নেই । কিন্তু একটা মেয়ের বিরুদ্ধে বদলা নিতে গেলে তার সাথে আমার যে গোপন মুহুর্ত গুলোর ডকুমেন্ট ছিল তা ফাঁস করে দিতে হত । কিন্তু এতটা নিচে নামতে ইচ্ছা করল না। কিন্তু এই অপমান আমি ভুলতেও পারছি না ” । আগেই বলেছি আমার সাথেও প্রায় এরকমই ঘটেছে(মাত্রা একটু কম) , আমারও কিন্তু প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছা করে । বাস্তব জীবনে আমি ছাড় দেওয়া মানুষও নই । কিন্তু ওই যে “আমি মানুষ” , এই কারণেই নিচে নামতে ইচ্ছা করে না । ভালবাসলে যে তাকে পেতেই হবে , এমন নয় । প্রেম এর সম্পর্ক ভেঙে যেতেই পারে । গেছেও আমার । কিন্তু প্রতারণা,অপমান এসব কোন ভাবেই মুছে ফেলা যায় না । ভাই যদি কাউকে দিয়ে না পোষায় তাহলে ছেড়ে চলে যান না , কারণ কেউ সম্পর্ক না রাখতে চাইলে তা টিকিয়ে রাখা যায় না । কিন্তু এই ধরনে নষ্টামি কেন মানুষ নাম ধারী অমানুষ গুলো করে ?
২৮টি মন্তব্য
নীহারিকা জান্নাত
বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।
এ যুগে মানুষকে বিশ্বাস করাই বোকামি। কিন্ত তারপরও বিশ্বাস করতে হয়। আর তারপর এমন ঘটনা সহ্য করা কঠিন।
ভালো থাকুক আপনার বড় ভাই। ওনার জন্য রইলো সমবেদনা।
বায়রনিক শুভ্র
বিশ্বাস করা মানেই বাঁশ খাওয়া ।
নীরা সাদীয়া
এরকম গ নারী পুরুষ উভয়ের মাঝেই রয়েছে। তবে নারীরা প্রকাশ করে কম। আমার জীবনেও গ টাইপ কেউ অদেখা থেকেই বেশ ক্ষতি করেছে। তবে আমি ছাড় দিতে রাজি নই,কোনদিন সুযোগ পেলে প্রতিশোধ নয়,তবে অন্যায়কারীকে যথাসাধ্য তার প্রাপ্য শাস্তির ব্যাবস্থাতো করবই। বারবার এরকম গ এরা ছাড় পেতে পারে না।
বায়রনিক শুভ্র
প্রাপ্য শাস্তিটা আসলে কী ? এসব ক্ষেত্রে মুখ বুজে চুপ করা থাকা ছাড়া আর কি ই বা করা যায় ?
নীরা সাদীয়া
মুখবুজে সহ্য করা কোন সমাধান হতে পারে না। এসব গ এরা এক ধরনের
বাইরনিক হিরো এবং হরোইন।
বায়রনিক শুভ্র
বায়রনিক শব্দটার মানে “নির্লজ্জ,ডানপিটে,বীর” । বায়রনিক হিরো নিয়ে আমার যতটা পড়াশুনা তাতে এদের মিথ্যা কথা বা অভিনয়ের আশ্রয় নিয়েছে এমন নজির পায় নি । যারা বায়রনিক তারা একাধিক প্রেম হয়ত করে , বাট মিথ্যার ধার এরা ধারে না । বলে কয়েই করে, যা করে ।
আচ্ছা আপনার সাথে এমনটা হলে আপনি কি করবেন বা করতেন ?
আবু খায়ের আনিছ
আপনার এই ক,খ, গ এর সমীকরণ মিলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল, যাইহোক বছরখানেক আগে এই প্লটে একটা মুখোরচক কাহিনী প্রকাশ হয়েছিল বাস্তবে।
আপনি এই ধরুন ক, খ, গ বাদ দিয়ে কামাল জামাল কিছু ব্যবহার করতে পারবেন তাতে পড়তে সুবিধা হতো। লেখার সময় সব শ্রেণীর পাঠকের কথা মাথায় রাখতে হয়।
বায়রনিক শুভ্র
আসলে আমি লেখক হওয়ার যোগ্যতা এখনো অর্জন করতে পারি নাই । তাই ক্যাচাল । নিজ গুণে ক্ষমা করবেন ।
আবু খায়ের আনিছ
জ্বী ভাই, আমার যে কোন গুন নাই, তবু চেষ্টা করব সমালোচনা এড়িয়ে যাওয়ার। লেখক আমি না আপনি যেহেতু আপনি লিখেছেন, আমি পাঠক মাত্র। ধন্যবাদ
বায়রনিক শুভ্র
🙂 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
এসব ‘গ’য়েদের সংখ্যা ফেসবুকে আছে প্রচুর।
সত্যি বলতে কি ভার্চুয়াল সম্পর্কগুলো খুব কমই বিশ্বস্ত হয়। ভাগ্যক্রমে দু’/একটি বিশ্বাস রক্ষা করতে পারে, নয়তো সবই গোল্লা, ফকফকা।
এসব ‘গ’য়েদের সুবুদ্ধির উদয় হোক।
বায়রনিক শুভ্র
সেটাই গ-রা সুস্থ্য হোক , মানুষ হোক ।
মেহেরী তাজ
ভাইয়া ভালোবাসায় গোপন মুহূর্ত থাকতেই পারে কিন্তু সেই মুহূর্তের ডকুমেন্ট কেনো কারর কাছে থাকবে???
গ এর আসলে এমন করা উচিৎ হয় নি!
বায়রনিক শুভ্র
ছবি ইনবক্স এগুলো তো থেকেই যায় । তাই না ?
ব্লগার সজীব
অস্বাভাবিক আচরনের কারনে প্রশ্ন করলেই সন্দেহের কথা বলে ‘গ’। অস্বাভাবিকতা একদিন দুইদিন হতে পারে। রোজ হতে পারেনা। আপনার ‘ক’ বড় ভাই ভবিষ্যৎ এর বড় ধরনের একটি বিপর্যয় হতে রক্ষা পেয়েছেন। এই ধরনের মেয়েরা একই সাথে একাধিক ছেলেদের সাথে প্রেম করে। এটি তাদের নেশা বলা যায়। অনলাইনে এদের কদরও আছে খুব। ভাল থাকুক আপনার ‘ক’ ভাই।
বায়রনিক শুভ্র
শুভ কামনার জন্য ধন্যবাদ । 🙂
অরণ্য
ক-এর জন্য শুভ কামনা। বদলা না নিয়ে ক-কে সেলিব্রেট করতে বলব। “ভাইজান! বাঁইচ্চা গেছেন!”
পাঁচটা ফকির খাওয়ায় দিতে বলেন আর পাঁচটা পাখি কাঁটাবন থেকে কিনে ছেড়ে দিতে বলেন আপনার ক ভাইকে। মন ঠিক হয়ে যাবে। বউ ঘরে আসলে ও আরও ঠিক হয়ে যাবে।
লেখাটি ভাল লেগেছে। (y)
বায়রনিক শুভ্র
কারো জন্যেই কিছু থেমে থাকে না । আর সময়ে উপশম হয়ে যায় । তবে ক ভাই এখনো পার্টি দেয় নাই । এবার ঢাকা আইলে ধরতে হবে ।
শুন্য শুন্যালয়
নাম উল্লেখ করে এসব প্রতারকদের প্রকাশ করিয়ে দেয়াই উচিৎ। তবে মেয়েদের থেকে ছেলেদের সংখ্যা বেশি হবে বলেই আমার ধারণা। ভার্চুয়ালি এই সংখ্যা প্রচুর। এটা বোধহয় নেশার মতো তাদের কাছে।
নীরা সাদীয়া
fhhh শূণ্য আপুর সাথে প্রতিটি কথায় সহমত।
বায়রনিক শুভ্র
আমার কাছে মনে হয় ছেলে মেয়ে কেউ পিছিয়ে নেই এই ব্যাপারে । আর ছেলেদের একটা গার্লফ্রেন্ড যোগাড় করতেই জীবন কয়লা হয়ে যায় । আর ৪-৫ টা তো অনেক দূরের ব্যাপার ।
ইঞ্জা
ক, খ, গ, ঘ নাম দিয়ে এতো ভালো লেখাটার বারোটা বাজালেন কেন? :@ রাগ হচ্ছে আপনার উপর, আপনি চাইলে অন্য কোন নাম দিতে পারতেন, পারতেননা?
ইঞ্জা
শুন্য আপুর সাথে আমিও একমত, এদের নাম বলে দেওয়ায় উচিত ছিলো।
বায়রনিক শুভ্র
লেখক হই আগে । তখন সমস্যার সমাধান করে ফেলব । 🙂
গাজী বুরহান
মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এক সময় ক’রা বদরুল হয়, জাহেদ হয়, হয় জুনায়েদ।
বায়রনিক শুভ্র
এরা মানুষ নয় । এদেরও খুন করা উচিত ।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
নামে বর্ণমালা ব্যবহার না করে কোন রূপক নাম ব্যবহার করলে আরো সুখপাঠ্য হতো। -{@
বায়রনিক শুভ্র
মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।