নূপুর রাত্রি

ছাইরাছ হেলাল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার, ০৮:৪০:৪২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৫৪ মন্তব্য

সোফাটিতে বসা হয়না, অনেকদিন অনেকদিন। গিফট পেয়েছি বন্ধুর কাছ থেকে সেও বেশ আগেই। হঠাৎ কী জানি কী হলো বেশ জাঁকিয়ে বসতে চাইল মধ্য রাত্রির মন। একটিতে তিন সিট অন্যটিতে দুই। কোন্‌টির কোন্‌ জায়গায় বসি ভাবতে ভাবতে ভাবালুতা নিয়ে তাকালাম। পাঁচটি সিটের একটিতে বেশির ভাগ মোটা ও কিছু চিকন বইয়ের পাহাড়ি সমাহার, এর পাশেরটিতে আধখোলা দৈনিকের লাস্যময়ীরা মুখ ব্যাদান করে আছে। এর পরের তিন ছিট ওয়ালার প্রথমটি যথার্থই খালি, পরে একে একে দলা পাকানো টি-শার্ট, সর্ট প্যান্ট, অনেকগুলি সাদা মোজা(ধোয়া) ও বেশ ক’টি খেলার গেঞ্জি। সোফার দু’হাতল জুড়ে গনি মিয়ার বিশাল গামছা প্রায় মুখ থুবড়ে বেসামাল অবস্থায় অবহেলায় পড়ে আছে। নধর লাস্যময়ীর চোখে চোখ রেখে আলগোছে পত্রিকাটি পাশে রেখে বইপাহাড়ের পাশে কেতাবি ঢংয়ে পদ্মাসনে বসতে যেয়ে বুড়ো হাঁটু কটমট করে উঠলেও ‘ছোরেগা নহি’ কায়দায় দ্বিতীয় নয় তৃতীয় প্রচেষ্টায় তীব্র সাফল্যের মুখ দেখে গ্যাঁট হয়ে বসলাম।

ভাঙ্গা কাচ ছুঁইয়ে চুইয়ে চুইয়ে নির্লিপ্ত ধূসর আধার জড়ো হচ্ছে, হাতের ফাঁক গলে টুপ করে ঠুনকো গড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে পড়া না। “তুমি যে আজ ছড়ি ঘোরানোর কথা ভাবছো ফন্দিতে, আধার রাত্রির এ রূপ দেখনি বলে”। আমি বলি বুক চিতিয়ে ‘ উল্টোর হাঁটার পথের সুড়ঙ্গে, হে রাত বেশি দূর যেতে পারবে না, লোহিত-সোনালীর আগামী সকাল এলো বলে’। রাত্রি তোলপাড় চাক চাক মৌ উৎসবে।

হঠাৎ এ পাওয়া ফুরাবে না, না ফুরানোর দেশে,
আমি ফিরে ফিরে আসবো যাযাবরদের বেশে;
রাত্রির পায়ে নূপুর নাচে, সোনা ভোর এলো বলে,
যন্ত্রণার গাড় বাদামী জীবাশ্মের জলছাপ মুড়িয়ে।

নূপুর রাত্রি পায়ে পায়ে হেঁটে এসে
থৈ থৈ জলের ধারায় মন ভেঁজায়
আধো অন্ধকার সুনসান নীরবতার আলোয়ান জড়িয়ে অপেক্ষা করে একটি নরম-কোমল ভোরের।

0 Shares

৫৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ