নিজের বাড়ির প্লান নিজেই তৈরি করুন

একটা স্বপ্নের নীড় । একটা নিজের বাড়ি করার শখ সবারই আছে ।

বাড়িটা যেন শুধু মাত্র মাথা গোজার স্থান না হয়ে হতে পারে একটা সৃজনশীল শিল্প কর্ম ।
বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে প্লান করিয়ে অনেকেই বাড়ি করছেন ।
প্লান করে বাড়ি করা অবশ্যই ভাল এতে আপনি আপনার জমির সঠিক মূল্যায়ন করতে পারবেন ।
প্লান করে বাড়ি করলে ড্রয়িং এ সবকিছুই দেয়া থাকবে

তারপরও যদি আপনাদের কারও শখ থাকে নিজের বাড়ির প্লানটা নিজেই করবেন । তাদের জন্য আমার এই লেখা ।

বাড়ি করতে মূলত দুইটা ড্রয়িং বেশী গুরুত্বপূর্ণ

১) স্ট্রাকচার ড্রয়িং (অর্থাৎ বিল্ডিং এর মেইন কাঠামো বেস বিম কলাম ছাদ ইত্যাদি)

২) আর্কিটেকচার ড্রয়িং (এটা হল গাথুনী প্লাষ্টার বিভিন্ন প্রকার নকশা ইন্টোরিয়র ডিজাইন ইত্যাদি )

আপনি করতে পারবেন আর্কিটেকচার ড্রয়িং । তারপর একজন অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ষ্ট্রাকচার ড্রয়িং টা করিয়ে নিবেন ।

ষ্ট্রাকচার ড্রয়িং করতে হলে আপনাকে অবশ্যই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা অর্জন করতে হবে । ।

আর্কিটেকচার ড্রয়িং করতে আপনাকে জানতে হবে

* বিভিন্ন রুমের আদর্শ এবং সর্বনিম্ন মাপ
* রুমের অবস্থান
* সৌন্দর্য গত দৃষ্টি
* পর্যাপ্ত আলো বাতাস এর সুব্যাবস্থা
* নিরাপত্তা
* ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
* আপনার এলাকার নিয়ম অনুযায়ী কতটুকু জমি ছেড়ে বাড়ি করতে হবে , তার পরিমাণ ।

+ রুমের সর্বনিম্ন মাপ এবং অবস্থান ।

বেড রুম : নয় ফিট বাই দশ ফিট
অবস্থান : যেদিকে সর্বোচ্চ ন্যাচারাল গিফট পাওয়া যাবে । অর্থাৎ পর্যাপ্ত আলো বাতাস । ব্যালকনি তে বসলে দক্ষিণা বাতাস । তবে সাধারণত একটা বিল্ডিং এর কর্ণার সাইডে বেড রূম দেয়া হয় । এক বেড রুম থেকে আরেক বেড রুমের দূরত্ব বা অবস্থান এমন হবে যেন সম্পূর্ণ প্রাইভেসী বজায় থাকে । অর্থাৎ এক রূমের থেকে অন্য রুমের আভ্যান্তরীন দৃশ্য সহজেই দৃষ্টি গোচর হবে না ।

গেষ্ট রুম : আট ফিট বাই নয় ফিট
অবস্থান : সিঁড়ির কাছাকাছি ।

ডায়নিং : আট ফিট বাই দশ ফিট
অবস্থান :রান্না ঘরের পাশে হলে ভাল হয় ।

বাথরুম +টয়লেট : ছয় ফিট বাই চার ফিট ।
অবস্থান : কমন বাথরুম হলে সবাই যাতে সহজেই ব্যাবহার করতে পারে এমন স্থানে ।
টয়লেটে অবশ্যই এগজস্ট ফ্যান ব্যাবহার করবেন । এটা এয়ার ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে টয়লেটের দূর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি আপনার টয়লেট এর ফ্লোর শুকনা রাখবে ।

টয়লেট : তিন ফিট বাই চার ফিট ।

কিচেন : আট ফিট বাই সাত ফিট
অবস্থান : কিচেনে রান্নার সময় রান্নার গ্যাস বা ধোয়া যেন অন্য রুমে প্রবেশ না করতে পারে ।
রান্না ঘরের পরিবেশ ফ্রেস রাখার জন্য, কিচেনেও এগজস্ট ফ্যান ব্যাবহার করা উচিত ।

ব্যালকনি : চওড়া তিন ফিটের কম নয় ।

সিড়ি : আট ফিট চওড়া হলে ভাল হয় অবস্থান : মেইন রাস্তার পাশে অথবা রাস্তা থেকে সর্বনিম্ন দূরত্বে ।

চলুন দেখি গৃহ নির্মাণ সম্পর্কে খনার বচন

দক্ষিণ দুয়ারি ঘরের রাজা,
পুব দুয়ারী তাহার প্রজা
পশ্চিম দুয়ারীর মুখে ছাই,
উত্তর দুয়ারীর খাজনা নাই।

অর্থঃ স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে দক্ষিণ দুয়ারী ঘর সবচে বেশী ভালো তারপর হচ্ছে পুব দুয়ারী ঘর। পশ্চিম দুয়ারী এবং উত্তর দুয়ারী ঘর ভালোনা।

আলো হাওয়া বেঁধো না,
রোগে ভোগে মরো না।

মংগলে উষা বুধে পা,
যথা ইচ্ছা তথা যা।

 

তাহলে এবার নিজেই আর্কিটেক হয়ে যান ।
আর ড্রয়িং করুন নিজের স্বপ্নের বাড়ির ।

আরও কিছু জানতে চাইলে কমেন্টে প্রশ্ন করুন ।
সবার সুস্থতা কামনা করছি ।

ভাল থাকুন লিখতে থাকুন । ।

pakistan-house-front-elevation-10-fileminimizer

 

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ