বেশী কিছু আশা করা ভুল-
বুঝলাম আমি এতদিনে!
মুক্তি মেলে না কিছুতেই-
জড়ালে কোন ঋণে!
– আজ জগজিৎ সিং–এর এই গানটা মনে পড়ছে খুব!
আজ আমি সারাদিন ভোট দেখলাম টিভিতে। এছাড়াও কিছুটা সময়ের জন্য একটা কেন্দ্রের পাশ দিয়ে ঘুরে এসেছি কিছুক্ষণের জন্যে বাজার করার ফাঁকে। যদিও আমি যেখানকার ভোটার অর্থাৎ আমাদের নিজ সংসদীয় এলাকা, সেখানে ভোট হচ্ছে কিন্তু আমার ঢাকায় অবস্থান জনিত কারণে ভোট দেওয়াটা আর এবার হয়ে ওঠেনি। আবার বলা যায়, সুযোগ থাকলেও যে সেটা প্রয়োগ করতে পারতাম বা করতাম, তা জোড় গলায় বলতে পারছি না। কেন পারছি না? সেটা নিজের বিবেকের কাছেই একটা বড় প্রশ্ন হিসেবে থেকে যাবে!
শুধু এটুকু বলবো আওয়ামীলীগ নিজের সংগঠন সম্পর্কে এতদিন ধরে একটা ভুল ধারণা পোষণ করে এসেছে, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির মাধম্যে দলকে ক্ষয়ে যেতে দিয়েছে, এখন যা দেখছি তা আসলে একটা ঘুণে খাওয়া কাঠ। বাইরে থেকে দেখতে শক্তপোক্ত মনে হলেও ভিতরটা ফাঁকা হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগ আজ তার আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হয়ে হয়ে চলে এসেছে বহুদূর। এছাড়াও বিপক্ষকে তারা ভয়াবহ রকমের অবমূল্যায়ন করেছে, নিজের শত্রু বাড়িয়েছে, বন্ধুকে করেছে পর- যা ছিল আসলেই অপ্রয়োজনীয়। নিজের গ্রামীণ কর্মী ও সমর্থকদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি, এমনকি বিপদে পাশেও দাঁড়াতে পারেনি।
আর অপরদিকে, বিপক্ষ শক্তি গত কয়েকমাস ধরে সরকারের ব্যর্থতার ব্যাপক ও বহুমুখী প্রচার করেছে, সত্যের সাথে অপপ্রচার যোগ করায় তার মাত্রা হয়েছে আরও ব্যাপক। এছাড়াও ভয়াবহ সন্ত্রাসের মাধ্যমে গ্রাম গঞ্জের মানুষদের তথা ভোটারদের মনোবল শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। যদিও কোন মিডিয়েতেই আসেনি, তবে ফোন করে জানলাম, হুমকি ধামকি ছাড়াও গতকাল রাতেও আমাদের এলাকার প্রায় সকল গ্রামে বোমা ফাটানো হয়েছে আতংক তৈরী করার জন্য, যাতে করে কেউ ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সাহসও না করে। তারমানে একইরকম ঘটনা অন্য এলাকাগুলোতেও হয়েছে- এটা ধরে নেওয়াই যায়। এছাড়াও স্কুল পুড়ানো তো আছেই।
আর সবকিছুর মিলিত ফলাফল হল- দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতির ভয়াবহ রকমের কম হার। যা সকাল থেকেই দেখছি টিভির পর্দায়।
সত্যি বলতে কি, এতটা খারাপ আমি আশা করিনি!
আমি হতাশ !!!
০৫/০১/২০১৩, রাতঃ ৮.১৫
১৭টি মন্তব্য
লীলাবতী
হুমকি ছিল আমাদের এলাকাতেও । বলা হয়েছে যৌথ বাহিনী কতদিন থাকবে ? যারা ভোট দিতে যাবে , তাদের দেখা হবে এরপর ।
সুকান্ত
আমরা এর ভুক্তোভুগি অনেকদিন ধরেই, শুধু এইবারের নির্বাচনেই না? এটা কাউকে দেখানো সম্ভব না, অনুভবের ব্যাপার, অনেকটা মাইগ্রেনের ব্যথার মত !!!
রিমি রুম্মান
সহিংসতা, ভীতি ভোটার উপস্থিতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন সরকার নতুন ভাবে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে যাবে। আমি আশাবাদী, ভীষণভাবে আশাবাদী।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি আওয়ামিলীগের অনেক গুলো বিভক্তি দেখি দলের নেতারা করে চলেছে একের পর এক অমক না থাকলে দলের কিচ্ছুই হবেনা। এভাবে একের পর একজন দল ছেড়ে গেছে কিন্তু দল কত দুরবর হয়েছে টা স্বয়ং দলনেত্রী চিন্তা করে না আমরা কি করব। অনেক সময় ব্যাক্তি ইগ থেকে অনেক ভালো নেতাকে দল থেকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে অনেক নেতার ব্যাক্তি কারনে। সময় থাকতে এরা সাবধান হয়না। এই ধরুন লালমনিরহাট ১ আসনে এরসাদ সাহেবকে হারান হল, সে কিভাবে আওয়ামিলীগের উপর আস্থা রাখবে ভবিষ্যতে। জেকন ভাবে জি এম কাদের সাহেবকে জিতান উচিত ছিল নয় কি? অথচ লালমনিরহাট ১ আসনে শিবির নেতা আওয়ামিলীগ নেতাকে হত্যা করে এলাকায় ত্রাস করছে কারন তাঁর চাচা আওয়ামিলীগ ও উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু যে আওয়ামিলীগ নেতা মারা গেল তাঁর পরিবার কি আর আওয়ামিলীগকে সাপোর্ট করবে? কখন না।
কিন্তু জামাত থেকে একটু সুবিধা আদায় করুন তো দেখি, পারবেন না।
যেমন আমার গ্রামে জামাত রুকন তাঁর ফ্রীডোম ফাইটার হিসেবে সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করে ব্যারথ হয়েছে। কিন্তু জামাত রকন নিজ দায়ীত্বে এটা করতে চেয়ে ধরেছিল টার পরও টার ঊর্ধ্বতন নেতার চাপে পারেনাই।
তাহলে আওয়ামিলীগ যে ছাড় দেয়, কিসের আশায় ? এতে আওয়ামিলীগের ক্ষতি অপূরণীয়। অন্যান্য নির্ভেজাল নেতারা হতাশ হয়তো কেউ মুখ খোলে না।
যাক এগুলো আমাদের বলে কোন লাভ নাই।
সুকান্ত
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত হবে না এবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া! তাতে করে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে চলে আসবে, আলোচনার পরিবেশ তৈরী হবে, বিএনপি আস্থায় আসবে, সর্বোপরি মানুষ ও দেশ বাঁচবে; বলে আমি মনে করি।
দেশটা কিন্তু আমাদেরই এবং দিন শেষে আমাদেরই থাকবে। এখন আমাদের সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, এই দেশটাকে আমরা কোথায় নিয়ে যাব আর কিভাবে নেব?
বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক !!!
মোঃ মজিবর রহমান
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত হবে না এবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া!
সহমত।
দলের নিরভরশীল কাউকে এই গুরুদায়িত্ব দেয়া উচিত।
মা মাটি দেশ
প্রয়োজন ছিল যুদ্ধাপরাধী বিচার সম্পূর্ণ করার তাই ….কিছু ত্যাগতো করতেই হবে (y) ভাল লিখেছেন আওয়ামিলীগ এখন ভুলের উপর চলছে (y)
জিসান শা ইকরাম
হাসিনার উচিত হয়নি রাজাকারদের বিচার করা। এই জাতীর দরকার রাজাকারদের ধর্ষন ।
সুকান্ত
শেখ হাসিনার উচিত হবে না এবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া! তাতে করে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে চলে আসবে, বলে আমি মনে করি। রাজনীতি এক দাবা খেলা, এখানে যে সব সময় মন্ত্রী’ই খেলে তা কিন্তু নয়। মন্ত্রীকে ব্যাক আপে রেখে হাতী- ঘোড়াও ভাল খেলে বিপক্ষ রানীকে আবদ্ধ করে ফেলে। অনেক সময় সামান্য একটা সৈন্যও বিপক্ষ রানীর জন্য হুমকি সরূপ হয়ে দাঁড়ায় মন্ত্রীর সাপোর্টে!!!
খসড়া
আপনার হতাশা কার কিবা আসে যায়। আপনি গেছিলেন তো ভোট দিতে? একচোখ বন্ধ থাকলে অনেক কিছুই দেখবেন না। কথায় বলে কানা, খোড়া, লেংরা—দুনিয়ার ঝ্যাংরা।
যাই হোক আমরা আশাবাদী , একটা একটা করে রাজাকার ঝুলবে।
সুকান্ত
যদিও আমি যেখানকার ভোটার অর্থাৎ আমাদের নিজ সংসদীয় এলাকা, সেখানে ভোট হচ্ছে কিন্তু আমার ঢাকায় অবস্থান জনিত কারণে ভোট দেওয়াটা আর এবার হয়ে ওঠেনি। আবার বলা যায়, সুযোগ থাকলেও যে সেটা প্রয়োগ করতে পারতাম বা করতাম, তা জোড় গলায় বলতে পারছি না। কেন পারছি না? সেটা নিজের বিবেকের কাছেই একটা বড় প্রশ্ন হিসেবে থেকে যাবে! —- আপনার উত্তর এখানে আছে !
আর আপনি?
সুকান্ত
@ খসড়া
সুকান্ত
“একচোখ বন্ধ থাকলে অনেক কিছুই দেখবেন না। কথায় বলে কানা, খোড়া, লেংরা—দুনিয়ার ঝ্যাংরা।” — এই কথা কিন্তু ঠিক, উভয় অর্থে !!! তার মধ্যে আপনিও আছেন !!!
শিশির কনা
রাজনিতির দাবা খেলায় মনে হচ্ছে শেখ হাসিনাই জিতে যাবেন এবার ।
নীলকন্ঠ জয়
আশাহত হয়ে কিংবা আশাবাদী হয়ে কিইবা লাভ? আমি ম্যাংগো পিপলই আছি, থাকবোও চীরদিন বাকপ্রতিবন্ধী হয়ে।
স্বপ্ন নীলা
যে নিজের এবং নিজ দলের আত্নসমালোচনা করে না,,,,,,সে যেই দলই হোক না কেন,,,,,,,,তার ভেতরটাতো ঘুন পোকা কুড়ে কুঁড়ে খাবেই,,,,,,,,,আর এক সময় তা আবর্জনা হবেই ,,,এটাই বাস্তব,,,। কারণ অন্যায় যে করে এবং অন্যায় যে সহে উভয়ই সমান অপরাধী’’।
লেখাটা ভীষণ ভাল লাগলো,,,,,,,,,,,এই ধরণের লেখা আমার মনের খোরাক জোগায়,,,,,,,,,,,,,,,যা মানুষের জন্য ভীষণ দরকার,,,,,,,,,,,,।
রাজা কহিল, সূর্য্য পশ্চিম দিক হতে উঠেছে,,,,,,,,,,,মন্ত্রিরা কহিলেন,,,,,,,,ঠিকই বলেছেন,,সূর্য্য পশ্চিম দিক হতে উঠেছে,,,,,,,,,,,,। এটা পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সব জায়গাতেই । আমার সুশীল সমাজের, মিডিয়াগুলোর অবস্থা এখন একই,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
শুন্য শুন্যালয়
এমন নির্বাচন ই হতাশাব্যঞ্জক … ভোটের হার হিসেবে রাখছি না..