জে মামা

মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন ১০ অক্টোবর ২০১৬, সোমবার, ০৮:২৩:২৪অপরাহ্ন গল্প, রম্য ১১ মন্তব্য

- টুনটুনি পাখি তুমি আসছো?
- হ্যাঁ।কিন্তু তুমি কোথায় বাবুতা ?
- আমি তো তোমাকে খুচ্ছি। তুমি কোথায় আছো?
- এই যে লাল ফার্মেসির সামনে বাবুতা।

আজ একমাসের ফোনালাপের প্রথম দেখা হতে যাচ্ছে শুভ আর সুপ্তির। প্রেমটা একটু এক দশক পুরোনো ধাঁচের। রং নাম্বার থেকে শুরু।
- গোলামের পুত আর যদি জ্বালাইছস তোর নাম্বার র্যাবের কাছে দিয়ে দিবো। তারপর বুঝবি লাউ কি জিনিস আর কদু কি জিনিস।
- এমনিতেও এক, পেটে গেলেও এক, দুইটার দায়িত্বও এক। ভোগ নিবারন করা।

কথার ঝলাকানিতে ভালোলাগা। রোজ রাত জেগে কথা বলা। প্রেম, মহব্বত সব শুরু ধীরে ধীরে। আজ তাদের দেখা হবার কথা। সুপ্তি বলেছিলো ও ততটা সুন্দর না। তবে ততটা খারাপ ও না। শুভ বলেছে যার কন্ঠ এত মধুর সে নিশ্চয়ই দেখতেও হবে অনেক সুন্দর। সেই ভরসাতেই আজ দেখা করা।

- ও! হাতেম আলী ফার্মেসী?
- হ্যাঁ। হাতেম আলীই তো। লাল রঙ্গে লেখা।
- কিন্তু তুমি কোথায়? ঐটার নিচে তো সাহারা খাতুনের মতো কে দাঁড়িয়ে আছে! :3
- আরে কি বলছো! আমিই দাঁড়িয়ে আছি।
- দূর থেকেই খালাম্মার মতো লাগছে। কাছে এলে জানি কি লাগবে! এই!সত্যি কি এটাই তুমি?
- হ্যাঁ। এটাই আমি বাবুতা।
- সিরিয়াসলি! তুমি পাঁচ মিনিট দাঁড়াও আমি আসতেছি।

এই কথা বলেই শুভ সেই স্থান ছেড়ে পালালো। মোবাইলের সুইচ অফ করে সে দিলু মামার দোকানে চা খাচ্ছে। চায়ে চুমুক দিয়ে বললো
- মামা! আজকে সকালে ঘুম থেইকা উঠে বাইরে এসে তোমারেই তো দেখছিলাম - না?
- জে মামা।
- ধুর মেয়া! তুমি একটা জাত কুফা।
- মুই কি করছি!!

শুভ কোন জবাব দিলো না। সে চা খাচ্ছে। আর হিসাব করছে এতগুলা টাকা আমি সাহারা খাতুনের পিছনে ব্যয় করলাম!হটাৎ করে চিকন সুরে কেউ বললো "কপালের লিখন না যায় খন্ডন"। এই তো সেই মিস্টি কন্ঠ। টুনটুনি পাখির কন্ঠ। শুভ ভয়ে ভয়ে তার পাশে তাকালো। অতি সুন্দর একটা মেয়ে তার পাশে বসে আছে। আর শুভর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।
- আপনি কে?
- আমাকে চিনো না চান্দু!
-ঠিক চিনতে...
- পাঁচ মিনিটের কথা বলে আসলা! এখন পঁচিশ মিনিট পার হয়ে গেছে তোমার কোন খবর নাই। মোবাইল বন্ধ করছো কেন!! -_-
- আপনি সুপ্তি?
- না। সাহারা খাতুন। :/
- তবে যে আমি ঐখানে দেখলাম...
- থামো তো। যার তার সাথে কি আর দেখা করা যায়! তাই আমিও প্ল্যান করে রেখেছিলাম।
- আমাকে পেলে কিভাবে?
- ঐটা তোমার না জানলেও চলবে। নিজের কর্মের জন্য যে অন্যকে দোষ দেয় তার মাথায় এসব ঢুকবে না।
- স্যরি। তুমি তো আসলেই অনেক সুন্দর।
- :-/ এখানেই বসায়া রাখবা?
- হে হে! চলো অন্য কোথাও যাই।
- হাসেও বোকার মতো। মামার বিল দিয়া নাও ^_^

মামা বিল কত ১০ টাকা না? নাও ৫০ টাকাই রাখো। তুমি তো মামা সেই।

আসলে নিজের সাথে যখন খারাপ কিছু ঘটে তখন চারপাশের সবাইকে আমরা সেই খারাপ কিছুর দায়ভার দেয়ার চেষ্টা করি। আর যখন ভালো কিছু ঘটে। দিল খুশিতে ভরপুর থাকে তখন চারপাশ অনেক আলোকিত মনে হয়। চারপাশে শুধু কিউট কিউট জিনিস নজরে আসে। রাস্তায় জ্যাম হলেও আমরা তখন পজিটিভ কিছু ভাবি। নাহ্! দেশটার উন্নতি হচ্ছে। দেশে গাড়ি ঘোড়া বাড়ছে। 😀 :D)

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ