ডাক্তারদের সব রকমের টেষ্ট পরীক্ষাগুলো করেছি।পাচটি পরীক্ষার মাঝে মাত্র একটি করতে পেরেছি ঢাকা কলেজ মেডিক্যালে বাকী তিনটি করেছি বাহিরে।যদি প্রশ্ন করেন কেনো ঢাকা কলেজ মেডিক্যালে নয় উত্তরে বলব যন্ত্রপাতি নষ্ট বা অকেজু বা মহোদয় ডাক্তার সাহেব নেই।আমার মেয়েকে নিয়ে তিন চার দিন যাবৎ হাসপাতালে।হঠাৎ ডাক্তার সাহেব ফাইলের কাগজ পত্র দেখে বললেন কালার ইকো পরীক্ষাটি এখনো করাইনি।বললাম আপনাদের হাসপাতালে গত দুই দিন যাবৎ করিয়ে দিচ্ছেন।সে আবারও প্রশ্ন করেন আবারো একটু খোলে বলুনতো...আমি একটু নড়ে চড়ে বসলাম।না তেমন কিছু না হয়তো এখানে এটাই নিয়ম।আমি এই পরীক্ষাটি করার জন্য যিনি সিরিয়াল লিখেন তার কাছে গেলাম সে আমার কাগজটিকে ভাল করে উল্টে পাল্টে বিচক্ষণার সহিত দেখলেন।তারপর কাগজটির উপর পনের বিশ দিনের মধ্যে হবে এমন একটি তারিখ লিখে দিলেন।তার এমন প্রত্যাশিত তারিখ লেখাটিই বলে দেয় তাকে কিছু খাতির যত্ন করতে হবে।আমি তাকে কিছু টাকার অফার দিতেই সে আমার জন্য একটু চেষ্টা করলেন,ভিতরে ডাক্তার সাহেবের সম্মতি আনলেন তবে আজ নয় কাল।আগামী কাল সকালে ভোর ছয়টা হতে শিশুকে না খাওয়া অবস্থায় ঘুম পাড়িয়ে আনতে হবে।হুজুরকে জো হুকুম বলে পর দিনের প্রস্তুতির জন্য চলে এলাম বেডে।
পর দিন ভোর হতেই কন্যাকে ওপোস রাখলাম সে বার বার খাবারের জন্য কান্না জুড়ে দিত আর কাদবেই না কেনো পাতলা গরুর দুধই ছিলো তার জন্য একমাত্র খাবার।তাতো গেলো খাবারের বিষয় তাকে ঘুম পাড়াবো কি করে?অনেক চেষ্টা এক বার আমি আরেক বার সে এক সময় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় সে খাবারের ক্লান্ততা ভুলে ঘুমিয়ে পড়ল।আর যায় কোথায় তাকে কোলে করে নিয়ে গেলাম বার্ণ ইউনিট থেকে নতুন ২য় ঢাকা কলেজ মেডিক্যালের দ্বিতীয় তলা ইকো করার স্থানে।যতই তড়িগড়ি করি যন্ত্রণা পিছু ছাড়লো না সেখানে ঠিক আটটায়ই পৌছলাম কিন্তু সিরিয়াল মেইনটেইন অফিসার একটু নীচে অবস্থান করছেন কেনো অপেক্ষা করছেন তাই বা না বল্লাম যখন এলেন তখন তার মুখের কথা শুনে একটু স্বস্তি পেলাম যদিও ভয় ছিলো আমার দুষ্ট কন্যা সময়ের অপচয়ে জেগে যায় কি না।ব্যাস্ততার মাঝে সিরিয়াল ম্যান ডাক্তার সাহেবের রুম থেকে ঘুড়ে এসে যা জানালেন তাতে আমি বিস্মিত হই এ কি বলে ডাক্তার মশাই আজ নাকি বাচ্চাদের ইকো করাতে পারবেন না তার নাকি শরির ভাল নেই তাই বাচ্চাদের নিখুত কাজে তার ব্রেন ভালো ভাবে কাজ নাও করতে পারেন সে জন্য তার এ হঠাৎ সিদ্ধান্ত।

অগত্য মন খারাপ করে ফিরে গেলাম বেডে।সকাল গড়িয়ে দুপুর এলো তখন এক ডাক্তার সাহেব জান্নাত মানে কন্যাকে পর্যবেক্ষণ করতে এসে পরীক্ষার কাগজ পত্র দেখে ইকো হয়নি বলে রেগে গেলেন।কি বলব তাকে তাদের দোষটুকু? তা বললে হয়তো রেগে আবার মেডিকেল থেকে বের করে দেন কি না কে জানে তাই নিজেদের অসামর্থ্যের কথাই বললাম সে রেগে বললেন আজকের মধ্যে যদি ইকো না হয় তবে অপারেসন ডেইট কালকের বদলে আগামী সপ্তাহে।আমি অবাক হলাম তার মুখে আগামীকালকে অপারেসন ডেইটের কথা শুনে কই এর মধ্যে কত ডাক্তারইতো এলেন কেউতো বললনা।

ডাক্তার সাহেব চলে যাবার পর বাহিরে ইকো করাতে বের হলাম যেই প্যাথোলজিতে গেলাম সেখানে জানতে পারলাম কলেজ মেডিকেলের সেই ডাক্তারই এখানে করাবেন।অবশেষে ভিন্ন কিছু না ভেবে ইকো ক130723121533_medicine_drug_pharmacy_304x171_mehr_nocreditরালাম এখানে।এই হলো হাসপাতালের সেবার অবস্থা তবে চিকিৎসকরা যে অপারেসনটি করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ অপারেসনের পর যখন যেই ডাক্তারই দেখেছেন সেই বলেছেন অত্যান্ত দক্ষতার সহিত কাজটি করেছেন।

আমরা কিছু আশাবাদী বিশ্বে অনন্য ঔষধ রপ্তানি কারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও একটি মানের দিক দিয়ে অনেক উন্নত।কিন্তু যত ঝামেলা হয় আমাদের পণ্যের মানের ক্ষেত্রে।সোনেলার প্রিয় মুখ রুবার কয়েকটি ভেজাল ঔষধ নিয়ে দেয়া পোষ্টের একটি ভেজাল ঔষধ  নিয়ে পোষ্টি পড়ে আৎকে উঠবেন।এছাড়াও নকল ও ভেজাল ঔষধ নিয়ে দৈনিক ঈত্তেফাকের একটি রিপোর্টস পড়তে পারেন।

ঔষধ কোম্পানীগুলো ঔষধ তৈরী করেন ডিষ্ট্রিভিশনও তারা করেন ঔষধের গায়ে বি এস টির সিলও থাকে থাকে মেয়াদোত্তিন্নের তারিখও তার পরও ঔষধ ভেজাল হয় আর এ সব ভেজাল যারা তাদের বিরুদ্ধে সরকারের মনোভাব একে বারে নমনীয় তা নয় যখনি সরকার এ সব বিষয়ে অভিযানে যান তখনি কিছু অসাধু ঔষধ ব্যাবসায়ী আন্দোলনে যান অথচ তারা ঐ সব ভেজাল ঔষধ প্রস্তুতকারক কারা তা ধরিয়েও দিচ্ছেন না যা জাতি হিসাবে আমরা লজ্জিত তবে এ সব ক্ষেত্রে সরকারের মনোভাব আরো কঠোর হতে হবে নিতে হবে সাময়িক রোগীদের অসুবিদার্থে বিশেষ কৌশল।

যদি উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা সেবার সাথে তুলনা করি আমাদের দেশের মেডিকেল সেবার কথা তবে হতাশই হতে হয় প্রিয় মুখ রিমির সোনেলায় পোষ্টকৃত তার চেয়েও সুন্দর এই দেশ  টির বিষয় বস্তুর উদাহরণ এবং আমাদের বাস্তবতাই বলে দেয় চিকিৎসায় নয় আমাদের ভিতরে দেশ প্রেমের ঘাটতি আছে ঠিক এমন একটি সময়ে আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন শিশু চিকিৎসক জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম আর খান
lllএক নামেই সে পরিচিত ডাক্তার এম আর খান।সে এ দেশের জাতীয় অধ্যাপক,বাংলাদেশের শিশু চিকিৎসার জনক হিসেবে জানি।তার কর্মের সে নিজেই একটি ইতিহাস, একটি প্রতিষ্ঠান।এই দেশের শিশু স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের পথিকৃৎ।সে নিজেই গড়ে তুলেছেন একের পর এক চিকিৎসা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।তার পেনশনের টাকা দিয়ে গড়েন ডাঃ এম আর খান-আনোয়ারা ট্রাস্ট। জাতীয় পর্যায়ের শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন তিনিই গড়েছেন।আরো গড়েছেন শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল,যশোর শিশু হাসপাতাল,সাতক্ষীরা ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার,রসুল পুর উচ্চ বিদ্যালয়,উত্তরা উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল,ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতাল,নিবেদিতা নার্সিং হোম সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।তা ছাড়া দেশ থেকে পোলিও দূর করতে উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছেন তিনি, কাজ করেছেন ধূম পান বিরোধী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠান ‘আধূনিক’-এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই।পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ম্যানিলা এ্যাওয়ার্ড, একুশে পদক সহ আরো অনেক পুরস্কার।ডাঃ এম আর খান সম্পর্কে বিস্তারিত উইকিপিয়ায়

ধন্যবাদ।

ছবি
অনলাইন

ঘুড়ে আসতে পারেন পূর্বের পর্বের উঠোনে

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ