খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মালিক ডা. গাজী মিজানুর রহমান। একাধারে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন খুলনার সভাপতি। আবার কণ্ঠশিল্পীও।
সম্প্রতি র্যাব-১ ও র্যাব-৬ গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর যৌথ অভিযান চালিয়ে ডা. গাজী মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে আটক করেছে।
র্যাব সেখান থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ! মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত! ( গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্ল্যাড ব্যাংকের অনুমোদন না থাকলেও অবৈধভাবে ব্ল্যাড ব্যাংক পরিচালনা করা হচ্ছে)
প্রয়োজন না হলেও রোগীকে আইসিইউতে রেখে মোটা অংকের অর্থ আদায়ের প্রমাণ!
প্যাথলজি রিপোর্টে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবর্তে টেকনিশিয়ানের স্বাক্ষর!
মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (প্যাথলজি পরীক্ষার কেমিক্যাল) উদ্ধার করেছে।
এই অপরাধের জন্য তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের জেল প্রদান করা হয়েছে।
পত্রিকার পাতায় আটককৃত গাজী মিজানকে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করলে দেখা গেছে হাতকড়া হাতে চারপাশে র্যাব পরিবেষ্টিত হাস্যজ্জ্বোল ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছবির পোজ দিতে!
তার শাস্তির পরিমান এবং অনুতাপহীন ছবি দেখে অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন! কেউ বলছেন, মাত্র ১০ লাখ জরিমানা আর তিনমাসের জেল! দুদিন পরে বেরিয়েই আবার যেইসেই অপকর্মে লিপ্ত হবে। কথা কিন্তু খুব সত্য।
কিন্তু এ কথাটি আরও সত্য, অবৈধ উপার্জনকারীদের অর্থদণ্ডতে কিচ্ছু আসে যায় না! জেল জরিমানা ওদের কাছে কিচ্ছু না!
তাই বলে কি ওদের শাস্তি নেই?
হ্যাঁ, নেই। কারণ আমরা ওদের শাস্তি দিতে জানি না বা দিতে চাই না।
গাজী মিজান হাসবে না তো কি! ও জানে, যতো যাই হোক, সমাজ ওকে সম্মান করবে। কারণ ওর আছে টাকা। এই সমাজে সিংহভাগ মানুষ টাকাওয়ালা দেখলেই লেজ নাড়িয়ে পুতুপুতু করে। অন্যদিকে একজন নীতিবান, আদর্শবান অথচ বিত্তহীন লোকের মর্যাদা এই সমাজে নেই। এই লোকটির হাসির কারন কিন্তু এখানেই।
একটা সময় ছিলো, যখন উৎসহীন অবৈধ রোজগারে বিত্তশালী হওয়া লোকগুলো সমাজে মুখ লুকিয়ে চলাফেরা করতো। কারণ বৈধ উপার্জন বহির্ভূত টাকার জন্য লোকে তাকে বাঁকাচোখে দেখতো। সমাজে এক কানাকড়ি সম্মানও ছিলো না তার।
কাজেই এদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হলে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন আনতে হবে। আর তা আনতে গেলে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতাবোধ, আত্মমর্যাদাবোধ। সচেতনতাবোধ মর্যাদাবোধকে শানিত করে।
একটা মানুষকে সম্মানের আসনে বসাতে বিত্ত নয়, চারিত্রিক গুণাবলীটাই যখন শীর্ষবিন্দুতে থাকবে, তখন আপনা থেকেই এই হাসি লজ্জায় পরিণত হবে।
পচে যাওয়া সমাজের মূলে আছে অবৈধ টাকা আর টাকার পেছনে আমাদের আত্মমর্যাদাবোধহীন নাগরিক দৌরাত্ম্য।
এদের একমাত্র শাস্তি এদের দেখামাত্র থুঃ থুঃ ছিটানো। যদি সত্যি সত্যি এমনটা হতো, তো খুব তাড়াতাড়িই এরা মুখ ঢেকে সাফ সুতরো হওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিতো।
১৪টি মন্তব্য
ইঞ্জা
তাকে শাস্তি প্রধান করা হলেও শুনলাম সেইখানে সকল ঔষধ বিক্রেতারা সক্ল দোকানপাট বন্ধ করে হরতাল করছে যেন প্রশাসন তাদের কাছে নতি স্বীকার করে আর গাজিকে নিঃশর্ত ছেড়ে দেয় আর এতে যদি প্রশাসন নতি স্বীকার করে তবে এই বেহায়া নির্লজ্জটা আরো বেশি বেহায়া হয়ে উঠবে। তাকে তিন মাসের কারাঢন্ড দেওয়া খুব কম মনে হচ্ছে আমার, এরে কমছে কম ১০ বছরের শাস্তি দিলে তা অন্যদের জন্য উদাহরণ স্বরুপ হতো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বলেছি না এই সমাজে সিংহভাগ মানুষ টাকাওয়ালা দেখলেই লেজ নাড়িয়ে পুতুপুতু করে। এর লাইসেন্স কেড়ে নেয়া উচিৎ কিন্তু সরকার কিভাবে কি করবে! উচ্ছিষ্টভোগীরা দাঁড়িয়ে গেছে পক্ষাবলম্বন করতে!!!
ইঞ্জা
দুঃখজনক
মারজানা ফেরদৌস রুবা
দুঃখজনকই কেবল নয়, চরম লজ্জাজনকও বটে। সময়ে সময়ে কারো কারো জন্যে তা যন্ত্রণাদায়কও।
এসব উচ্ছিষ্টভোগীদের কারণেই সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায় না।
মিষ্টি জিন
এত কম শাস্তি দেওয়াতেই এই রকম দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
ক্রস ফায়ারে ফেলা উচিত এই নিলজ্জটাকে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এখন ক্রসফায়ারে আসলে এদের দেয়া উচিৎ।
নীলাঞ্জনা নীলা
এসব মানুষকে মাত্র তিন মাস? এই লোকটার সাথে সন্ত্রাসী জঙ্গীর কি পার্থক্য? মিষ্টি আপুর মতো আমিও বললাম একে ক্রসফায়ার করে মেরে ফেলা উচিৎ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কোন পার্থক্য নেই। জঙ্গীরা চাপাতি দিয়ে কোপায় আর এরা স্লো পয়জনিং করে, অসুস্থ রোগীদের আত্মীয়কে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে।
এখন থেকে এদের ক্রসফায়ার চাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু ক্রসফায়ার চাই নর্দমার এসব কীটদের।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y)
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এ সব ভেজাল শক্ত হাতে ধরে কঠিন শাস্তির বিধান কার্যকর করতে হবে নতুবা এ সব লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়।যে গাজীকে গ্রেফতার করল রেভ সেই গাজী সহ সবাইকে কোন শাস্তি দেয় এবং তার কার্যকারিতাই এখন দেখার বিষয়।সুন্দর উপস্থাপনা। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সরকার কিভাবে কি করবে! উচ্ছিষ্টভোগী জনতার একাংশ দাঁড়িয়ে গেছে পক্ষাবলম্বন করতে!!!
ব্লগার সজীব
একারনেই ক্রস ফায়ারকে সমর্থন করি আপু। লজ্জার কোনো বোধই নেই এদের।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
তবে আশার কথা সজীব, শুনেছি সরকার নাকি এখন দুর্নীতিবাজদের দিকে মনযোগ দিয়েছে। প্রায় ৫০০০ এর লিস্ট করা হয়েছে। দেখা যাক কি হয়।
হ্যাঁ, আমিও এদের বেলায় ক্রসফায়ারকে সমর্থন করি।