আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে দেশের গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় কোটির কাছাকাছি শ্রমিক সেখানে জীবিকা নির্বাহ করে। দেশের অর্থনীতির চাকাটি ঘুরাতে ঘুরাতে তারা আজ ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত!

করোনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অন্যান্য দেশের গার্মেন্টস বন্ধ, অফিস আদালত বন্ধ তাই আমাদের কাছে দেয়া পুর্বের অর্ডার তারা বাতিল করেছে। মানুষই যদি না বাঁচে তো কাপড় কিনবে কে? এটাইতো স্বাভাবিক।

অর্ডার বাতিল করাতে যে লোকসান হয়েছে তারজন্য প্রণোদনা চাইলেন, সরকার দিলো। এরপরে আবার শ্রমিকদের বললেন জোড় নেই তবে তারা চাইলে কাজে যোগ দিতে পারে! এটা কেমন কথা?

এর দায়ভার সরকার চাপিয়ে দিয়েছে বিজিএমইএ কে যা বিজিএমইএ টেকনিক্যালি এড়িয়ে যাচ্ছে। মাঝথেকে গার্মেন্টস মালিকেরা সুযোগটা লুফে নিয়েছেন।

সব যখন বন্ধ তাহলে আপনাদের এসব পণ্য কোন দেশ কিনবে? সামনে ঈদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন? আগেতো বাঁচতে দিন সকলকে তারপর বাকী সবকিছু। মরে গেলে সবই গেলো।

কেউ কেউ আবার বলছেন আমেরিকা থেকে প্রচুর পিপিই বানানোর অর্ডার এসেছে। ফলে গার্মেন্টস খোলা রাখলে অর্থনৈতিক মন্দা কিছুটা কমানো যাবে বলেই গার্মেন্টস খোলা রাখা হচ্ছে। তাহলে কি দাঁড়ালো? আপনারা গার্মেন্টস খোলা রেখে কি প্রমাণ করতে চান? এদেশের মানুষকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে আপনারা আমেরিকাকে বাঁচাতে চান শুধুমাত্র দুটি পয়সা বাড়তি আসবে বলে!

দেশের স্বার্থ উদ্বারের জন্য কোটি মানুষকে বিপদে ফেলছেননা তো! শ্রমিকরা এদেশের সম্পদ। জীবনের চেয়ে কি টাকার মুল্য বেশী? গার্মেন্টস খোলা রেখে লকডাউন করা আর থানকুনি পাতা খেয়ে করোনা থেকে বাঁচা একই টাইপ হয়ে গেলো না?

কিছুক্ষন আগে ঘোষনা এসেছে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সকল গার্মেন্টস বন্ধ থাকবে। তাহলে গার্মেন্টস খোলার কথা শুনে যেসব গার্মেন্টস কর্মী হেঁটে হেঁটে রাজধানীতে যাচ্ছিলো এখন বন্ধের কথা শুনে মাঝরাস্তা থেকে তাদের আবার হেঁটে হেঁটেই ফিরতে হবে কিন্তু। মাননীয় বিজিএমইএ'র সভাপতি বলির পাঠা বানালেন আবার সাধারণ মানুষকেই!!

এসব হঠকারি সিদ্বান্তের জন্য পরে পঁচতাতে হতে পারে। বরং গার্মেন্টস মালিকদের উচিত সরকার প্রদত্ত যে প্রণোদনা পেয়েছেন সেটা থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দিয়ে দেশের সকল গার্মেন্টস বন্ধ রাখুন। আর কারো হা হুতাশের আর্তনাদ আমরা শুনতে চাইনা। লাশের মিছিলে যাতে নতুন কেউ যোগ না হয় এটাই প্রার্থনা।

ভালবাসি বাংলাদেশ ❤

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ