একজন শিক্ষকের অসহায়ত্বের গল্প এবং বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থা ।

সেদিন একজন হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আমার সাইটে এসেছিলেন অনেক্ষণ কথা হল । কথা প্রসঙ্গে আমি বর্তমানে প্রচলিত পিএসসি এবং জেএসসি পরিক্ষার ব্যাপারে ওনার মতামত জানতে চেয়েছিলাম । উনি বলেছিলেন

আপনাকে আর কি বলব । এখন আমাদের অবস্থা হল উভয় সঙ্কটের মত । না পারছি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে না পারছি চাকুরী ছাড়তে । আমার জীবনে আমি এত বেশী খারাপ কাজ অন্তত আমার হাত দিয়ে করিনি । খাতা দেখার সময় সরাসরি উপর মহলের নির্দেশ একটাও যেন ফেল না করে । আচ্ছা খাতায় কিছু লেখা না থাকলে নম্বর কোথায় দিব ? সে বার চারশ খাতা পেয়েছিলাম চারশ র মধ্যে ফেল করছে মাত্র চার পাঁচ জন । আবার এই চার পাঁচজনকে কেন পাশ করানো হল না এজন্য আমাকে জবাবদিহি করতে হয়েছে । এমনকি ঐ চার পাঁচটা খাতা দেখার টাকা আমার পারিশ্রমিক থেকে কেটে নেয়া হয়েছে ! বলুন এর চেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে । অথচ নিয়মমত খাতা দেখলে প্রায় অর্ধেক ফেল করত !

কি আর করব বলুন । মাঝেমধ্যে ইচ্ছা হয় চাকরি বাদ দিয়ে মাঠে কাজ করে খাই । আর কত নিজের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করব ? শিক্ষার মান আজ কোথায় গেছে সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন এর রেজাল্ট দেখলে সহজেই বোঝা যায় ।

শিক্ষাখাতের অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়ে বিদেশী ভিক্ষার টাকায় মন্ত্রী রা ধনী হচ্ছে আর আমাদের জন্য রেখে যাচ্ছে এক অমেরুদন্ডী শিক্ষা ব্যাবস্থা । আপনি তো ইঞ্জিনিয়ার ভালো ভাবেই জানেন ইমারতের ভিত্তি মজবুত না হলে সেটা যে কোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে । আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা এখন সেই ভিত্তিহীন ইমারতের মত । নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কে এই ভাবে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করার নজির পৃথিবীর কোন দেশে নেই ।

সরকার যুদ্ধ অপরাধী দের বিচার করছে । ভাল কথা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ । সরকার কবে এই জাতীর ভবিষ্যত প্রজন্মের মেধা ধ্বংসকারীদের বিচার করবে ?

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ