ঋণী

মনির হোসেন মমি ১১ মার্চ ২০১৪, মঙ্গলবার, ০৬:১৮:২২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, গল্প, বিবিধ ১৫ মন্তব্য

তিন হাটুতে ভর করে চলাচল করতে হয় সমাজের অচেনা ব্যাক্তি নাছির সাহেবকেজীবনে চলার পথে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে জীবন সংসার কিংবা রাষ্ট্রীয় কোন দেশপ্রেমের সংগ্রামেসে আজ অসহায় নিঃস্ব, যে ছিল একদিন বীরের দর্পের দাপুটে সে আজ কাঙ্গাল ভালবাসায়,স্নেহে,মমতায়নাছির সাহেব গভীর অন্ধকারে ঝড়া জীর্ণ একটি আশ্রীত বিল্ডিংয়ে দিন রাত অতিবাহিত করছেন কখন বিধাতার ডাক পরবে বলেতারই নাতি আজিম উদ্দিন অক্ষ্যাত লেখক আগামী বই মেলায় সে একটি বই বের করবে বলে কিছু লেখালেখি করছেন ছাড়াও আজিম সাহেব মানব কল্যায়নমূলক কাজে নিজেকে সব সময় ব্যাস্ত রাখেনআজিম সাহেবে বাবা সমাজের বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং রাজনৈতিক কেন্দ্রীয় নেতাআজিম সাহেব ভাষা আন্দোলনের উপর লিখবে বলে সে ঘুরে বেড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় সংগ্রহ করেছেন জানা অজানা অনেক তথ্যাদি আরো কিছু তথ্যাদির জন্য অপেক্ষায় আছে তার বই প্রকাশের কাজতবে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়

আজিম সাহেব আজ কোথাও যাননি ঘরে বসেই কি যেন লেখালেখি করছেন টেবিল ল্যাম্পের ক্ষীর্ণ আলোতে।তার ছোট ছোট এক ছেলে এক মেয়ে আছে।মেয়েটি তার লউগ্গা তাকে ছাড়া মেয়েটি থাকতে পারেনা।ছোট এই মেয়েটিকে আজিম সাহেব আদর করে মা মণি বলে ডাকেন।মেয়েটি তার বাবার লেখালেখি টেবিলের সামনে এসে এক বার এটা ধরে আর এক বার ওটা ধরে বাবাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে।বাবা আজিম সাহেবও লেখার মাঝে হ্যা-না বলে মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেন।এবার মেয়েটি টেবিল ল্যাপ্মের সুইচ এক বার অফ করে আবার অন করে বাবার লেখায় মনযোগ নষ্ট হয়

-মা মণি একি করছ?তুমি দেখছ না আমি লিখছি

-আব্বু সুইচ টিপ দিলে বাত্তি জ্বলে আবার নিভে কেনো?

আজিম সাহেব কোন উত্তর দেয়না। মেয়েটি আবারও একই প্রশ্ন করে।বিরক্ত হয়ে আজিম সাহেব মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেন

-বিদুৎতের কারনে.. মা

-বিদুৎ কি আব্বু?

-তুমি এদিকে আসো আমি বলছি

মেয়েকে নিজের হাতের কাছে নিয়ে আবার লেখায় মনযোগ দেন।নাছড় বান্দা শিশু মেয়ে আবার আর একটি প্রশ্ন করে

-আব্বু তুমি কি লিখছ

-গল্প

-গল্প কি আব্বু?

আজিম সাহেব এবার লেখায় মনযোগ হারিয়ে ফেলে সে তার মেয়ের কথার উত্তর দেন

-গল্প হলো মানুষের জীবন কাহিনী

-জীবন কি আব্বু?

আজিম সাহেব এবার মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ কিন্তু মেয়ে তার প্রশ্ন চালিয়েই যাচ্ছে

- আব্বু বলো না,জীবন কি..বলো না….বলোনা আব্বুবলো?

-জীবন হচ্ছে আমাদের,এই আমি তুমি বেচে থাকা

মেয়ের এবার আজিম সাহেবের লেখার নোট বইয়ের দিয়ে নজর পড়ে এবং প্রশ্ন করতে থাকে

-আব্বু তুমি কি লিখছ?

-ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে,যারা সংগ্রাম করেছে তাদের সম্পর্কে লিখছি

-বড় আব্বা কই?ফুপি বলেছে বড় আব্বু নাকি যুদ্ধ করেছে…..আচ্ছা যুদ্ধ কি আব্বু

আজিম সাহেব এবার নড়ে চড়ে বসেন, সত্যিইতো দাদু ভাইকে তো শুনেছি অনেকে লড়াকু বলে ডাকত। কিন্তু সে এখন কোথায়? আব্বুর কাছে শুনেছি স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পর সে নাকি দেশান্তর হয়েছেন, কিন্তু কোথায় গেছেন দাদু ভাই? আজিম সাহেব উপরের তাক হতে পুরনো একটি ব্রিফকেটস নামিয়ে আনেন।পুরনো ব্রিফকেটস জং পরে গেছে ধুলা বালি আর তাপে ব্রিফকেটসের নিজস্ব রং জ্বলে গেছে।

চলবে.....

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ