কোরআন শরীফে সূরা ‘ফাতেহা’ য় একটি অসাধারণ প্রার্থনা উচ্চারিত হয়েছে। মানুষ নিজেকে কল্যাণ এবং পবিত্রতার মধ্যে জাগ্রত করতে চাচ্ছে । বলা হয়েছে, যারা বিভ্রান্ত তাদের মধ্যে আমার অবস্থান যেন না ঘটে, তোমার অনুকম্পা যাদের প্রতি আছে তাদের মধ্যে আমাকে জাগ্রত রাখো । সমগ্র সূরাটি হচ্ছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা। যিনি অভয়দাতা তিনি মাত্র একজনই। তাঁর ইচ্ছায় সকল দুঃখ দূরীভূত হয় । এই সূরায় সকল অস্তিত্বের কথা এসেছে, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের শৃঙ্খলার কথা এসেছে । যিনি করুণানিধান তাঁর সম্মাননার জন্য স্তুতিবাক্য উচ্চারিত হয়েছে । তাই আমাদের সর্বকর্মের উদ্যোগে আমরা বিধাতাপুরুষের নাম উচ্চারণ করি । কিন্তু কেন করি ? কৃতজ্ঞতার জন্য করি, পরিশীলিত জীবনবোধের জন্য করি এবং পরিচ্ছন্ন ও পরিশুদ্ধতার জন্য করি । এই স্তুতির কোন বিকল্প নেই ।
এমনকি পৃথিবীতে সকল ধর্মই মানুষে মানুষে মৈত্রী বন্ধনের কথা বলে । ধর্মের মূলতত্ত্ব হচ্ছে যে, সকল মানুষই সৃষ্ট জীব সুতরাং আমাদের দৃষ্টি যদি মানব-হিতৈষণার দিকে থাকে তাহলে আমরা সকলকে নিয়েই বাস করতে চেষ্টা করব। কিন্তু মানুষে মানুষে পরম্পর পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কশূন্য ভেদাভেদটি বর্তমানকালে খুবই প্রচণ্ড ।
আমাদের স্বীকার এবং মানতেই হবে ক্ষুধা- তৃষ্ণায় মানুষ এক, জীবন ধারণের উপকরণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে একজন মানুষ অন্য মানুষের মুখাপেক্ষী, দুঃখ-বেদনা এবং ইচ্ছা-অনিচ্ছার সম্পর্কেও মানুষ অভিন্ন । তবুও আমরা সংকট দেখছি এবং একজন মানুষ আরেক মানুষের শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে এটা দেখছি। কিন্তু ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, আমি যদি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে মিত্রভাবে দেখি তাহলে সর্বভূতও আমাকে মিত্রভাবে দেখবে । এখন এটি তত্ত্ব কথায় পরিণত হয়েছে, বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই । সংঘর্ষ এবং বিক্ষোভ সর্বত্র। রাজনীতিতে দলগত অভিপ্রায়টি একমাত্র সত্য বলে গৃহীত। তাই আমরা দলগত মেলবন্ধন অস্বীকার করে বৃহৎ বোধের ক্ষেত্রে মিলিত হতে পারছি না । এ-অশুভ লক্ষণ থেকে যতদিন না আমরা মুক্ত হতে পারবো ততদিন আমাদের ব্যবহারিক জীবনে মানুষ হতে থাকবে গৌণ ।
______ সৈয়দ আলী উল আমিন
১৩টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সহি কথা
মানুষ মানুষের জন্য -{@
সৈয়দ আলী উল আমিন
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই ।
মৌনতা রিতু
Survival of the fittest বা যোগ্যতমের উর্ধ্বতন’ এই কথা প্রাণীজগতে সত্য আবার সত্য নয়। বহু প্রাণী আছে যারা অন্য প্রাণীকে ধরে খায় না। তিমি মাছ নাকি অন্য তিমি মাছকে বিপদে সাহায্য করে। কিন্তু মানুষ প্রতিনিয়ত অন্য মানুষকে আক্রমণ করছে। সাহায্য যে করছে না তা না করছে। মানুষের বিপদে মানুষই এগিয়ে আসে। তবুও মানুষের উপর মানুষের শোষণ, বঞ্চনা বন্ধ হচ্ছে না।
শয়তানকে উপদেশ দিয়ে লাভ নেই। শয়তানকে সংশোধনও করা যায় না। কিন্তু মানুষ শয়তান নয় আবার সে ফেরেশতাও নয়। তাই মানুষকে সংশোধন করা যায়। তাই প্রতিটা মানুষকে সংশোধন করতে হবে। তা না হলে মানুষের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে।
আমরা বিভিন্ন সূরার শানে নুযূল পড়লেই মানব সমাজের কল্যাণ খুব ভাল করেই বুঝতে পারব।
ভাল বিশ্লেষন করেছেন ভাই। ধন্যবাদ। লিখতে থাকুন।
পাশে আছি পাশে থাকুন। শুভকামনা রইলো।
সৈয়দ আলী উল আমিন
খুব ভালভাবে আলোচনা করেছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো ।
ইঞ্জা
মৌনতা রিতু আপু দারুণ ভাবে আলোচনা করেছেন ভাই, অসাধারণ পোষ্টি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইজান।
সৈয়দ আলী উল আমিন
জ্বি। আন্তরিক ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা
জিসান শা ইকরাম
আমরা কেবল পড়ি আজকাল, অনুধাবন বা আস্তবায়ন করিনা।
সুরাও তেমনি পড়ি, অনুধাবন করিনা।
লেখার সাথে একমত।
সৈয়দ আলী উল আমিন
জ্বি ভাই। আন্তরিক ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
পবিত্র সূরাটির আলোকে একটি প্রণিধানযোগ্য আলোচনা তুলে ধরেছেন,
দলগত মেলবন্ধন একটি জটিল আবর্ত, এর বের হয়ে উজ্জ্বলতায় পথ চলা
সত্যি কঠিন,
তবুও এ-ভিন্ন অন্য কোন রাস্তাও আমাদের সামনে নেই।
ধন্যবাদ।
সৈয়দ আলী উল আমিন
চলা কঠিন তবুও চেষ্টা করা উচিৎ। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
জানার চেষ্টাই তো করেনা কেউ। তাহলে তো মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ থাকতো।
সৈয়দ আলী উল আমিন
জ্বি এবং এ জন্যই আমাদের অধঃপতন।