উচ্চারণ

সৈয়দ আলী উল আমিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ০৯:২৭:৫৬পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৩ মন্তব্য

কোরআন শরীফে সূরা ‘ফাতেহা’ য় একটি অসাধারণ প্রার্থনা উচ্চারিত হয়েছে। মানুষ নিজেকে কল্যাণ এবং পবিত্রতার মধ্যে জাগ্রত করতে চাচ্ছে । বলা হয়েছে, যারা বিভ্রান্ত তাদের মধ্যে আমার অবস্থান যেন না ঘটে, তোমার অনুকম্পা যাদের প্রতি আছে তাদের মধ্যে আমাকে জাগ্রত রাখো । সমগ্র সূরাটি হচ্ছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা। যিনি অভয়দাতা তিনি মাত্র একজনই। তাঁর ইচ্ছায় সকল দুঃখ দূরীভূত হয় । এই সূরায় সকল অস্তিত্বের কথা এসেছে, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের শৃঙ্খলার কথা এসেছে । যিনি করুণানিধান তাঁর সম্মাননার জন্য স্তুতিবাক্য উচ্চারিত হয়েছে । তাই আমাদের সর্বকর্মের উদ্যোগে আমরা বিধাতাপুরুষের নাম উচ্চারণ করি । কিন্তু কেন করি ? কৃতজ্ঞতার জন্য করি, পরিশীলিত জীবনবোধের জন্য করি এবং পরিচ্ছন্ন ও পরিশুদ্ধতার জন্য করি । এই স্তুতির কোন বিকল্প নেই ।
এমনকি পৃথিবীতে সকল ধর্মই মানুষে মানুষে মৈত্রী বন্ধনের কথা বলে । ধর্মের মূলতত্ত্ব হচ্ছে যে, সকল মানুষই সৃষ্ট জীব সুতরাং আমাদের দৃষ্টি যদি মানব-হিতৈষণার দিকে থাকে তাহলে আমরা সকলকে নিয়েই বাস করতে চেষ্টা করব। কিন্তু মানুষে মানুষে পরম্পর পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কশূন্য ভেদাভেদটি বর্তমানকালে খুবই প্রচণ্ড ।
আমাদের স্বীকার এবং মানতেই হবে ক্ষুধা- তৃষ্ণায় মানুষ এক, জীবন ধারণের উপকরণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে একজন মানুষ অন্য মানুষের মুখাপেক্ষী, দুঃখ-বেদনা এবং ইচ্ছা-অনিচ্ছার সম্পর্কেও মানুষ অভিন্ন । তবুও আমরা সংকট দেখছি এবং একজন মানুষ আরেক মানুষের শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে এটা দেখছি। কিন্তু ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, আমি যদি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে মিত্রভাবে দেখি তাহলে সর্বভূতও আমাকে মিত্রভাবে দেখবে । এখন এটি তত্ত্ব কথায় পরিণত হয়েছে, বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই । সংঘর্ষ এবং বিক্ষোভ সর্বত্র। রাজনীতিতে দলগত অভিপ্রায়টি একমাত্র সত্য বলে গৃহীত। তাই আমরা দলগত মেলবন্ধন অস্বীকার করে বৃহৎ বোধের ক্ষেত্রে মিলিত হতে পারছি না । এ-অশুভ লক্ষণ থেকে যতদিন না আমরা মুক্ত হতে পারবো ততদিন আমাদের ব্যবহারিক জীবনে মানুষ হতে থাকবে গৌণ ।

 

______ সৈয়দ আলী উল আমিন

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ