প্রকৃতির সাথে মিশে যে ব্যাপারটা আমাকে বার বার দোলা দেয় সেটা হচ্ছে প্রকৃতিতে বসবাসকারী জীব-জন্তুর আচার-আচরন ও ভালোবাসা দেখে। যার জন্যই প্রকৃতিতে ছুটে যাই। প্রকৃতির রঙ ও শোভা যে কোন হৃদয় বিদারক মানুষের মনকে ভালো করে দিতে পারে। বিশ্বাস না হলে একবার প্রকৃতির কাছে যান দেখবেন আপনার মনকে কিভাবে ভালো করে দেয়। আমার দেখা ছোাট্ট একটি ঘটনা বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করি।
সেদিন আমি সাতছড়ি ফরেষ্টের টাওয়ারে পাখির ছবি তুলছি। টাওয়ারের পাশে ছিলো একটি পাকড় গাছ। সে গাছটিতে একটি মাত্র ফল ছিলো। একটি মাত্র ফল থাকার কারন তখন ফলের মৌসুম শেষ। আর সে ফলটি খাচ্ছিলো ধূসরমাথা হরিয়াল নামে একটি পাখি। সেই গাছের অন্য ডালে বসা ছিলো লটকন টিয়া ও সিপাহী বুলবুল নামক দুটি পাখি। তারা হরিয়ালের খাওয়া ফলের ধার কাছেও যায়নি। অথচ ফল খাওয়ার জন্যই ঐ পাখি দুটি আসে। তাদেরও খাওয়ার স্বাদ ও ক্ষুধা ছিলো। যেহেতু হরিয়াল ফলটি খাচ্ছে তাই অন্য পাখি দুটি চুপ করে পাকড় গাছের ডালে বসে আছে। কোন ভাগ বসাতে যায়নি ফলটির উপর। আধা ফল খাবার পর হরিয়ালটি উড়ে চলে যায়। তখন টুপ করে আসে লটকন টিয়া। লটকন টিয়া যখন ফলটি খাচ্ছে তা দেখে সিপাহী বুলবুল পাখিটি উড়ে চলে যায়। আমার কাছে মনে হলো যেহেতু ফলের বাকি অংশটুকু লটকন টিয়া খাচ্ছে তাই তার আর খাওয়ার সুযোগ নেই। সুতারাং তাকে অন্যত্র খাবারে সন্ধানে যেতে হবে। কি অদ্ভুত বুঝাপড়া প্রকৃতির জীবদের।
একবার ভাবুনতো...?
অথচ আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। আমরা সেরা হয়েও বণ্য পশু-পাখিদের মতন কেন আচরন করতে পারি না?
কেন আমরা সহিংসতা ও দন্ধে নিজেদের জড়িয়ে রাখি?
কেন পারিনা একজনের খাবারকে তার মত করে খাইতে দিতে? কেন অন্যের খাবারে ভাগ বসাতে যেয়ে নিজেদের মধ্যে হানাহানি মারামারি করি?
আমি কোনদিনই আমার এই প্রশ্নেগুলির উত্তর দিতে পারি নাই। তাই নিজের কাছে খুব অপরাধী মনে হয় প্রকৃতির পশু-পাখির কাছে।
আপনার কাছে আমার প্রশ্নগুলির কোন উত্তর আছে কি?
 
উপরে হরিয়াল পাখিটির ছবি দিলাম।
0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ