আমি তোমার জন্য এসেছি (পর্ব-৪০)

 

ইসস সকালে একটু ঘুমাব সেই সুযোগ নেই। সকাল বেলা কোন ঝামেলা কল দিল বলেই মিতু মোবাইল কানের নিচে রেখে হ্যালো বললো।

কি আমি ঝামেলা.???

মিতু তাড়াতাড়ি কান থেকে মোবাইল সরিয়ে নিল এটা তো রোহানের কন্ঠ!

মোবাইলের স্কিনে চোখ পড়ল রোহান লেখা, ওহ্ রোহানের কল আমি না দেখেই রিসিভ করে ফেলছি।

 

সরি!সরি! সরি সোনা ক্ষমা করে দেও আমি বুঝতে পারি নাই।

রোহান ও পাশ থেকে মিতুর কথা শোনে মিটিমিটি হাসছিলো।

তুমি ঝামেলা হবে কেন! তুমি তো আমার নিঃশ্বাস।

রোহান হাসতে হাসতে বললো আরে পাগলি এতো সরি বলতে হবে না।

সমস্যা নেই ঠিক আছে, ভাবলাম আমার জানুর ঘুম ভেঙ্গেছে কিনা একটু খোঁজ নেই।

 

নাহ্, সোনা ঘুমাচ্ছি।

তা কেমন আছো.?

আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি।

তুমি কি করো.?

মাত্র আস্মু ডেকে গেল ময়মনসিংহ,জামালপুর, ঢাকা থেকে আমার সব বন্ধুরা আসছে শুরু করছে আমার বিয়ে উপলক্ষে।

ওহ্ আচ্ছা।

ওকে জানু ঘুমাও আমি উঠে পড়লাম কাজ আছে বলেই রোহান মোবাইল রেখে ওয়াশ রুমে চলে গেল।

মিতু মোবাইল রেখে চোখ বন্ধ করলো আরেকটু ঘুমিয়ে নেই..

 

-খালাম্মা আপনাকে চা দিব?

-একটু পরে দিস আরাফ নিচে আসুক।

-ছোট ভাইজান আপনার হায়াত বেড়ে গেল।

-আরাফ সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে বললো,তাই নাকি! রহিমা।

-হ্যাঁ ছোট ভাইজান।

-এখানে আস বলেই মনোয়ারা তার পাশে বসতে আরাফকে ইশারা করলো।

-ভাইজান মাত্র খালাম্মাকে বলছিলাম,আপনাকে চা দেই!

বললবো আপনি আসলে চা খাবে।

নাম নিতেই আপনিও চলে আসলেন।

 

-হা হা হা হা রহিমা আমারও চা খেতে ইচ্ছে করছিলো তাই নিচে নেমে আসলাম।

-রহিমা,যাও চা নিয়ে আস।

-জ্বী খালাম্মা যাইতেছি।

-রহিমা।

-জ্বী ভাইজান।

-তোমার ছেলে কোথায় দেখছি না যে!

-ছোট ভাইজান ছেলেটা তার বাবার সাথে বাজার ঘুরতে গেছে, আমাকে একদম বিরক্ত করে না।

-ও ভালো তো, আচ্ছা যাও চা নিয়ে আস।

 

তাড়াতাড়ি টেবিলে খাবার দাও ওহ্! হাঁটতে হাঁটতে ক্ষিদে বেড়ে গেছে বলেই আজাদ সোজা টেবিলে গিয়ে বসল।

মানুষটার যত বয়ড় বাড়ছে বুড়ো হচ্ছে না মনে হয় বাচ্চাদের মতো হয়ে যাচ্ছে সারাদিন খালি খাই খাই করে।

কি আমি বুড়ো হয়ে গেছি! আমার মা বেঁচে থাকলে তুমি আমাকে বুড়ো বলতে পারতে না।

তোমার চোখে সমস্যা আছে ডাক্তার দেখাও মিরাকে উদ্দেশ্য করে কথা গুলো বলে হাসল আজাদ হা হা হা হা।

 

আমি এখনো যুবক বলেই গেঞ্জির স্কলারটা ঠিক করলো আজাদ।

মিরা মুসকি হাসল বুড়ো বয়সে ভিমরতি মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত আর বাবার চলে যৌবন কাল হি হি হি হি।

এভাবে বলো না আমি রাস্তায় হাঁটলে এখনো মেয়েরা চোখের পলক না ফেলে চেয়ে দেখে।

তাই নাকি! হ্যাঁ।

বুঝছি এই জন্যই আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা কমে গেলে..!

 

ইসস কি বিপদ নিজেকে যুবক বানাতে গিয়ে বুড়ো বয়সে সংসার ভাঙ্গতে চললো।

আগে গিন্নির রাগ ভাঙ্গাতে হবে তাড়াতাড়ি বকুল ফুলের মালাটা বের করে মিরার খোঁপায় পরিয়ে দিল।

গন্ধে মিরা বুঝল বকুলের মালা আভিমানে বললো রাস্তায় কাউকে দিবার মতো পেলে না।

 

না-গো গিন্নি আমার বউ ছাড়া এ মালার যোগ্য কেউ নাই, এটা তোমার খোঁপায় মানায়।

আজাদের কথায় খুনসুটিতে মিরা সেই ৩০ বছর আগের যুবক আজাদের রুপ দেখল,খুশি হলো।

আর ভালোবাসা দেখাতে হবে না, যাও বাইরে থেকে আসছো আগে হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে আস আমি টেবিলে খাবার দিতাচ্ছি।

 

সকাল থেকেই বাড়িতে মানুষের সমাগম চলছে আত্মীয় স্বজনে বাসা ভর্তি, নতুন কিছু আজ আসবে।

ডেকোরেটর কাজ চলছে ভোররাত থেকে কিছুক্ষন পর পর চা চলছে,। আবার দুপুরে ৬ জন লোক খাবে, শেখর সাহেবের মেয়ের বিয়ে সারা মহল্লার মানুষের দাওয়াত।

দুপুরে সবাই খাবে জিসান বাজার করে মুরগি,মাছ আনছে সেই কাজে কয়েকজন বসেছে।

 

প্রিয়াও সবার সাথে মিশে গেছে হাতে যতটা পারছে সবাই সাহায্য করতেছে। বাড়ির বউয়েরা সব মাছ,মুরগি কাটতে বসেছে, ভাবী রোহান তোমার সাথে কথা বলবে।

আমি তো মাছ কাটছি, তুমি মোবাইলটা আমার কানে ধরো।

জ্বী রোহান বলো।

আসসালামু আলাইকুম ভাবী।

ওয়া আলাইকুম সালাম।

 

ভাবী আমার চাচাত ভাই,ভাবী,বোন,মামাত ভাই,বোন, বন্ধুরা সহ ৮-১০ জন যাবে মিতুর গায়ে হলুদ, কাপড় সব নিয়ে যাবে।

ওকে সমস্যা নেই, ওরা কখন আসবে.?

দুপুরে যাবে, তাহলে আমরা দুপুরের খাবারের আয়োজন করি!

......চলবে।

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ