- (মেয়ে) এই নাও সাতসকালে তোমার জন্য কুড়িয়ে নিয়ে এলাম। সাদা ফুল নাম জানিনা । লাল গোলাপ নয় কারন লাল মেয়েদের রঙ।
- সুন্দর কিন্তু আমার যদি লাল গোলাপই চাই তখন কি হবে? আর এই অসাধারণ ফুলের জন্য কি করতে পারি!
- কিছু হবে না। অসাধারণ ফুলের জন্য আজকের দিনের জন্য চা-কফি, রান্না সব তুমি করে ফেল। রাতের খাবার বাইরে, আমার পক্ষ থেকে ট্রিট।
- আমি তো রাঁধতে পারি না। তুমি খেতে পারবে?
- হোক যা হবে তাই চলবে। পৃথিবীর সমস্ত ভালো সেফ কিন্তু পুরুষ।
-ঠিক আছে! যাই সকালের চা বানিয়ে আনি।
বিকট চিৎকার-ও বাবা গো,মা গো পুড়ে গেল। বাঁচাও!
- দেখি দেখি! কি অবস্থা আঙ্গুলটা পুড়ে ফেললে। দাড়াও মুখে দিয়ে দিই ভালো হয়ে যাবে। রান্নায় পুড়ে যাওয়া, তেলের ছিটা এসবের প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট হল মুখের থুথু। তাই মেয়েরা পুড়ে যায় আর ভুলে যায়। আমাকে ওভাবে দেখার কিছু নেই ভালো হবে।
- না দেখছি তোমরা কত যত্নশীল।
- হা হা হা হা। এতদিনে তাহলে বোধদয় হল! ওকে সরো! পোড়া লাভ,পোড়া ধন্যবাদ শুধু তোমার জন্য!
****
- (ছেলে) তুমি ভীষন বদলে গেছ?
- হুম ঠিকই বলেছ? বদলাতে হয়।
- প্রেমে পড়লে নাকি?
- তার থেকেও বেশি কিছু। তবে কার সেটা বলা যাবেনা।
- কি বলছো তুমি এসব, বুঝতে পারছ কি?
- সম্বিত ফিরে পেয়ে, এই তোমাকে কিছু বললাম। ওই ল্যাপটপ, বই দুটোই নিয়ে বসেছি তো তাই মনোযোগ একটু সেদিকেই ছিল। সরি কিছু মনে করনা, কি নেবে চা না কফি।
বিকেলের কফি বানাতে বানাতে মুচকি হাসছি। সত্যিই কি বদলে গেছি না ভালো আছি।আমার মনে হয় ভালো আছি। এই মানুষটাকে আমি আমার সব দিয়েই ভালোবাসি, চাই, অপেক্ষা করি। যখন বাইরে থাকে আমি অপেক্ষায় থাকি। বারবার বলি, কখন আসবে ভালো লাগছে না তারাতারি আস। এখন কম বলি কারন আমার আমিতে মগ্ন হয়েছি, আমিকে ভালোবাসতে শিখেছি। এজন্যই কষ্ট একদমই নেই বললেই চলে। কারও প্রতি খুব বেশি নির্ভরশীলতা মানুষকে দূর্বল করে তোলে। এতে ভালোথাকা অনেকটা হারিয়ে যায়।
***
- (মেয়ে) কি হল খাও! এদের রান্না তো ভালো।খুশমুশ করছ কেন? কিছু হয়েছে?
- আমি কোনদিন বলিনি আজ বলতে চাই। হঠাৎ হাঁটু মুরে ফুল হাতে তুমি মহান, মহিয়সী, অফুরান। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠত্ব সব তোমার কারন তুমি জন্মদাত্রী।
- হুম বুঝলাম! আমার হাসি পাচ্ছে সাথে লজ্জাও কারন মেয়েদের প্রসংশা শুনে অভ্যাস নেই। এভাবে পায়ের কাছে হাঁটু মুরে থেকনা। তোমার স্বগোত্রীয় দেখলে নারীর দাস বলবে। উঠে এসো তোমার কপালে চুমু এঁকে দিই।
- বললে বলুক। আমি এমনই থাকতে চাই দাস হয়ে!
*****
-( ছেলে) ঘুমাবে না।
- হুম তুমি আগে ঘুমাও। নাক ডাকা মেশিনটা চালু না হলে ভালো লাগে না যে!
- আজ ঘুমাব না!
- বিপদজনক লক্ষণ! আমি একটু পড়ব।
- সে রকম কিছু না। আমার নাক ডাকায় তোমার ঘুম হয়না জেগে থাক। তাই আজ তুমি ঘুমুবে আমি জাগব।
- আজ নির্ঘাত মাথা খারাপ হয়েছে তোমার। এতবছর পরে সব উল্টে যাবে তাই হয়!
- না বদলে যেতেই হবে। নিজেকে বদলালেই তো পৃথিবী বদলে যাবে।
এস তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিই।
- আমি কিন্তু বলিনি। খুব বুঝতে পারছি মুল্যবান হয়ে উঠছি না হয় পরে কথা শোনাবে।
- মূল্যবান তো বটেই! এই তোমার একটা পাকা চুলও নেই। ব্যাপার কি?
- আর পাকবেনা?
- কেন?
- ও তুমি বুঝবে না ঘুমাও!!!
২০টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
বাহ্! অসাধারণ শৈল্পিক বর্ণমালা , 💙 I
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হই।
শুভ কামনা রইলো।🌹🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
কথপোকথনের মধ্যে দিয়ে সুন্দর একটি রোমান্টিক গল্প পড়লাম। ছোট ছোট উক্তির মাঝে উপলব্ধির গভীরতা তৈরি হয়েছে। দারুণ!
চুম্বক অংশটা উল্লেখ না করলেই নয়,,
“ আমার আমিতে মগ্ন হয়েছি, আমিকে ভালোবাসতে শিখেছি। এজন্যই কষ্ট একদমই নেই বললেই চলে। কারও প্রতি খুব বেশি নির্ভরশীলতা মানুষকে দূর্বল করে তোলে। এতে ভালোথাকা অনেকটা হারিয়ে যায়”
মনে রাখার মতো এবং মেনে চলার মতোই মেসেজ দিয়েছেন। এমন করে নিজেকে গড়ে নিতে পারলে লাভ দু’পক্ষেরই 🙂
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
আসলেই এমন করে গড়তে পারলে দুপক্ষেরই লাভ।
আপনার অসাধারণ মন্তব্যের জন্য ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।😍😍😍
শুভ কামনা রইলো।
ভালো থাকবেন।
আলমগীর সরকার লিটন
চমৎকার লেখেছেন আপু অনেক শুভ কামনা
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনার জন্যও শুভকামনা।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
এই রোমান্টিকতা কেমন জেন্ চল বলে মনে হয়, দু পক্ষের তরফে ই।
তবুও কথোপকথনের আলাপে পড়তে মন্দ লাগে না।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।
ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
নিজেকে চিনলে অপরকে চেনা সহজ হয়। এভাবে সবাই বুঝুক। রোমান্টিকতা বাড়ুক। জীবন প্রেমময় হোক।
শুভকামনা
রোকসানা খন্দকার রুকু
জীবন প্রেমময় হোক।
শুভ কামনা রইলো।
ভালো থাকবেন।🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আহ্ কি সুন্দর রোমান্টিক গল্প। নিজেরে চিনিয়া, অন্যেরে যাই বাঁধতে ভালোবাসার মায়াডোরে। জয়তু প্রেম। এভাবেই বোঝার পরিধিটা বাড়ুক। নিরাপদে থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরাম
রোকসানা খন্দকার রুকু
আহ্ কি সুন্দর মন্তব্য😍😍😍
ধন্যবাদ দিদিভাই।
ভালো থাকবেন।
প্রদীপ চক্রবর্তী
এমন ছোটগল্প পড়ার মজাই আলাদা।
খুবি ভালো কথোপকথনে নির্যাস মুগ্ধতা রেখে গেলাম।
ভালো লাগলো,দিদি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
মুগ্ধতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকবেন।🌹🌹
হালিম নজরুল
নিজেকে বদলালেই তো পৃথিবী বদলে যাবে।
———–খুব ভাল লাগল পুরো গল্পটি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাদের ভালো লাগলেই লিখতে সাহস পাই।
শুভ কামনা রইলো।🌹🌹
তৌহিদ
দিন যায়, সময়ে যেমন নিজেদের মন মানসিকতার পরিবর্তন হয় তেমনি বয়সের সাথে সাথে আমিত্বের পরিবর্তন ঘটে। গল্পে ঠিক সেই জিনিসটিই উঠে এসেছে।
তবে এটা ঠিক ভালোবাসা পরিবর্তন হয়না, শুধু প্রকাশভঙ্গীর পরিবর্তন ঘটে আর এটাই স্বাভাবিক।
ভালো থাকুন আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ঠিকঠাক ধরতে পেরেছেন ভাইয়া।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।🌹🌹
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
চমৎকার লিখেছেন কবি
শুভকামনা রইল সতত
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন আর বেশি বেশি লিখবেন।
শুভ কামনা রইলো।