“আনন্দপুরের ভূতের কান্ড” পর্ব-৫

প্রদীপ চক্রবর্তী ১৬ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১০:৪৬:৪৬অপরাহ্ন গল্প ১৮ মন্তব্য

সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললো সবাই যারযার বাড়িতে অবস্থান করলেও থামছে না তান্ত্রিকদের যত্রতত্র মন্ত্রপূত !
আগত তান্ত্রিকদের মধ্য জটাধারী মহাতান্ত্রিকের নাম রাসেশ্বর। নামে গুণে ও তান্ত্রিক যাদুতে না কী বেশ চালাক চতুর!
তান্ত্রিক মহাসাধু রামলোচনকে বশীকরণ করে রণচণ্ডী বউয়ের কাছে একটা জলের বোতল দিয়ে বলছেন রোজ সকাল সন্ধ্যা গায়ের মধ্যে ছিটিয়ে দিতে।
বশীকরণ শেষে রণচণ্ডী বউ অনেকক্ষণ বসে হতচ্ছাড়া পতিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে বড় একটা বটগাছের সাথে বেঁধে রেখে দিয়েছে ।
আর রামলোচনকে বলছে হতচ্ছাড়া পতি আজ হতে সেখানে থাকবে তুমি।
ও গিন্নী সে কী গো?
আমি যে মরে যাবো..।
ঠিক আছে মরে যাবার আগে আমায় একবার বলো।
এ কথা বলে রণচণ্ডী বউ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।
রামলোচন আজ হতে রণচণ্ডী বউয়ের কাছে বশীকরণ।
এদিকে বিলাস বাবুর বাড়ির বটগাছের তলায় তান্ত্রিক জটাধারীরা বসে বসে গাঁজায় দিচ্ছে মনেপ্রাণে টান।
বাড়ির আশেপাশের লোকজন তান্ত্রিকদের যাদু মন্ত্র দেখে তাদের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
আর একে একে নিজের মনস্কামনার জন্য এ তান্ত্রিক সাধুর কাছে সবকিছু বিলিয়ে দিচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত বিলাস বাবুর গিন্নী ললিতা রাণী নিজের কানের দোল দিয়ে তান্ত্রিক সাধুকে বলছেন হে বাবা তান্ত্রিক মহাসাধু আপনি আমার পতির লোভকে ধৈর্যের আওতায় এনে দিন।
হবে হবে সব হবে!
এ কথা বলে তান্ত্রিক মহাসাধু ললিতা রাণীকে তথাস্তু প্রকাশ করলেন।
বিলাস বাবু ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রমাদ গুনছেন। বিলাস বাবুর দিনশেষে তাঁর আর খাওয়া হলো না পাঁঠার মাংস। সবকিছু একে একে তান্ত্রিকদের ভোগে যেতে চলছে!
লোভের বশে বিলাস বাবুর সকল কর্মের ফললাভ নেপথ্যে যেতে চললো।
এদিকে তান্ত্রিকরা সবকিছু গুছিয়ে বিলাস বাবু আর রামলোচনকে ফাঁকি দিয়ে যে যার মতো করে সবাই চলে গিয়েছে দূরদেশে।
খানিকক্ষণ পর বিলাস বাবুর গিন্নী ললিতা রাণী মন্দির প্রাঙ্গনের বটগাছের তলায় কাউকে না দেখতে পেয়ে বিলাস বাবুকে বলছেন ওগো শুনছো?
সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে!
হলো হলো.!
কী হয়েছে গো গিন্নী?
সবশেষ হলো গো সবশেষ হলো!
আরে বলো কী এমন সর্বনাশ হলো?
আর কি বলবো গো তোমার মঙ্গলের জন্য আমার কানের দোল তান্ত্রিক মহাসাধুকে দিয়ে বলেছিলাম তোমার লোভের ক্ষমতা ধৈর্যের আওতায় এনে দিতে।
এ কী বলছো গো গিন্নী?
আমি তোমার পতি হয়ে তুমি বলছো আমি লোভী!
হ্যাঁ গো।
এখন আমি কী করি বলো গো?
হয়েছে হয়েছে গিন্নী?
আমি তোমার পতি হয়ে বলছো আমি না কি লোভী!
গিন্নী তুমি তো দেখছি রামলোচনের বউয়ের থেকে কমও না।
ও গো গিন্নী বুঝলাম, বড্ড বুঝলাম গো।
রামলোচনকে গলাটিপে কখনো বশীকরণ করে মারছে তার রণচণ্ডী বউ তদ্রূপ তুমিও আমায় মারতে চাচ্ছো।
তাই তো বেশ!
বেশ গো গিন্নী।
যাই করো হাতের আংটি বিক্রি করো নেই সেটাই বড়ো কথা। দেখো দেখো গিন্নী আমাকে বশীকরণ করতে গিয়ে নিজের কানের স্বর্ণের দোল হারিয়েছ।
বেশ হয়েছে।
আজ হতে তোমার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে গেলো গো গিন্নী। তোমায় নিয়ে আমার যাপিত সংসার অনেক হলো।
এদিকে বিনু ও রাঘব দুজনি ঘুমঘোরে ক্লান্ত।
সারারাত ধরে নিদ্রাহীনে আচ্ছন্ন ছিলো।

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ