অদ্ভুত এক নৈঃশব্দ্য

রিমি রুম্মান ২৯ জুলাই ২০১৫, বুধবার, ১১:১২:৩০পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩০ মন্তব্য

রাতের খাবারের সময় আমরা অতিথিদের আপ্যায়ন করছিলাম। পাতে এটা সেটা তুলে দিচ্ছিলাম বউ, শাশুড়ি মিলে। সুন্দর পারিবারিক আবহ। ভদ্রলোক খানিক আবেগপ্রবন হয়ে বললেন, উনিশ বছর যাবত তিনি তাঁর মা'কে দেখেননি। মা এখনো বেঁচে আছেন। বৈধ কাগজ পত্র সংক্রান্ত সমস্যা তাঁর। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কথাগুলো বলার সময় চোখজোড়া ছলছল করছিলো। অতঃপর মাথা নিচু করে নিরবে খাবার শেষ করলেন। নৈঃশব্দ্যে ছেয়ে থাকলো খাবার টেবিলের চারিপাশ কিছুটা সময়...

সকালে ছেলেকে নিয়ে কোচিং যাবার সময় প্রতিবেশী মেয়েটি আমার সাথে যায়। তাঁরা একই কোচিং এ পড়ে। ছেলেমেয়েদের নামিয়ে দিয়ে আমরা দুই মা একাকী ফিরবার সময় কখনো গল্প করি। কখনোবা গান শুনি। গাড়িতে গান বাজছে__ কতদিন দেখি না মায়ের মুখ...। নিরবতা ভেঙ্গে দু'চোখ মুছতে মুছতে তিনি বললেন, তাঁর বারো বছরের একমাত্র মেয়েটির জন্মের পরপর কিছু শারীরিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় নিয়মিত চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বিধায় ফ্লাই করা, দীর্ঘ ভ্রমন করা নিষেধ করেছে ডাক্তার। বারো বছরেরও অধিক সময় তিনি তাঁর মাকে দেখেননি। অতঃপর বাকিটা পথ আমাদের আর কোন কথা হয়নি। গাড়ির ভেতরটা অদ্ভুত এক বিষণ্ণ নৈঃশব্দ্যে ছেয়ে ছিল...

"মা'কে দেখিনা অনেকদিন হয়" __ কথটি বলার সময় সন্তানদের পৃথিবী থম্‌কে থাকে কেন ? কেন ভেতরে বাইরে নৈঃশব্দ্যে ছেয়ে থাকে ?

যারা বাবা-মা'য়ের কাছাকাছি অবস্থান করছে___ তাঁরা কতোই না ভাগ্যবান, তাই না ?

 

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ