সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। আমাদের দেশের মতো উন্নয়শীল দেশে সাংবাদিকতা পেশাটি মহান হলেও মারাত্মক চ্যালেঞ্জিং। বিভিন্ন দেশের গনমাধ্যমগুলো তাদের নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। সাংবাদিকতার সংজ্ঞা দিতে গেলে তা ব্যাপক।
উইকিপিডিয়ার মতে, সাংবাদিকতা হল বিভিন্ন ঘটনাবলী, বিষয়, ধারণা, ও মানুষ সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি ও পরিবেশন, যা উক্ত দিনের প্রধান সংবাদ এবং তা সমাজে প্রভাব বিস্তার করে। এই পেশায় শব্দটি দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কৌশল ও সাহিত্যিক উপায় অবলম্বনকে বোঝায়। মুদ্রিত, টেলিভিশন, বেতার, ইন্টারনেট, এবং পূর্বে ব্যবহৃত নিউজরিল সংবাদ মাধ্যমের অন্তর্গত।
সাংবাদিকতার যথোপযুক্ত নিয়মের ধারণা ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিছু দেশে, সংবাদ মাধ্যমে সরকারি হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং পুরোপুরি স্বাধীন সত্তা নয়।
অন্যান্য দেশে, সংবাদ মাধ্যম সরকার থেকে স্বাধীন কিন্তু লাভ-লোকসান সাংবিধানিক নিরাপত্তার আওতায় থাকে। স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক সাংবাদিকতার মাধ্যমে সংগ্রহ করার মুক্ত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে সাহায্য করে।
সাংবাদিকরা জাতির বিবেক, সমাজের দর্পণ। জনমত সৃষ্টিতে সাংবাদিকরা কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশের সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ আজ দিধাবিভক্ত। প্রতিনিয়তই দেশের সাংাবাদিক সমাজ হামলা, মামলা ও দলাদলির শিকার হচ্ছে। আজ এ সাংবাদিক নির্যাতিত হচ্ছে, কাল আরেক সাংবাদিক নির্যাতিত হচ্ছে। সাংবাদিক সমাজকে আজ দলে দলে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা যাচ্ছে। তা স্বত্ত্বেও থেমে নেই সাংবাদিক নির্যাতন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা শক্তির কাছে নির্যাতিত হচ্ছে। এসব নির্যাতন থেকে রেহায় পাবার জন্যই সা ংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে এবং গড়ে তোলেছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
আমাদের দেশের প্রত্যেক জেলায় প্রেসক্লাব রয়েছে। এটি সাংবাদিকদের সামাজিক মিলনকেন্দ্র। যাহা সাংবাদিক সমাজের জন্য একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি সংগঠন।
কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশের কিছু কিছু জেলায় প্রেসক্লাবের বিকল্প “জেলা প্রেসক্লাব, উপজেলা প্রেসক্লাব গঠন হচ্ছে। যেমন জেলায় একটি প্রেসক্লাব থাকা স্বত্ত্বেও আরেকটি প্রেস ক্লাব গঠন হচ্ছে। এর নাম দেয়া হচ্ছে, ………. জেলা প্রেসক্লাব, …….. উপজেলা প্রেসক্লাব। এর কারণই বা কি? কেনই আজ সাংবাদিক সমাজ দিধাবিভক্ত? সাংবাদিক সমাজ একই পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ না হয়ে কেনই তারা আলাদাভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হচ্ছে?
এর কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, চাঞ্চল্যকর তথ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সাংবাদিক জানান তাদের অভিজ্ঞতার কথা। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেল যে, প্রেসক্লাবের বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা। যারা নতুন সাংবাদিকতায় আসেন প্রেসক্লাবে তাদেরকে অন্তর্ভূক্ত করা হয় না। প্রেসক্লাবে অন্তর্ভূক্ত হতে হলে যে শর্তগুলো দেয়া হয় সেসব শর্ত পূরণ করলেও সদস্য হতে পারেনি অনেকে। শর্তের বাহিরেও আরেকটি নিয়ম আছে কোন নতুন সদস্য ভর্তি করতে হলে প্রেসক্লাবে বোর্ড মিটিং এ উপস্থাপন করার পর যদি কোন একজন সদস্য উক্ত সাংবাদিককে প্রেসক্লাবে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধা প্রদান করে তাহলেই তাকে সদস্যপদ দেয়া হয় না এবং বাধা প্রদানকারী সদস্যের নাম ও প্রকাশ করা হয় না এবং কেন সদস্য হতে পারেনি তাও জানানো হয় না। ফলে আবেদনকারী সাংবাদিকদের মনে বিরাজ করে তীব্র ক্ষোভ। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিগণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে প্রেসক্লাবে ফোন দেয়া হয়। প্রেসক্লাবে ফোন দেয়া হলে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ উক্ত সাংবাদিককে চেনার পরও চেনেন না বলে জানিয়ে দেন। তখন উক্ত সাংবাদিকের অবস্থা কি হতে পারে আপনারা কল্পনা করেছেন?
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ যদি বলতেন যে, উক্ত সাংবাদিককে উনারা চিনেন, তিনি একটি মিডিয়ায় কাজ করেন, কিন্তু তিনি প্রেসক্লাবের সদস্য নন, তাহলে হয় তো ভাল হতো। চেনেও না চেনার ভান করার মানে কি দাঁড়ায়? এই কর্মকান্ডটাকে তো ঈর্ষান্বিত মনোভাব বুঝায়! আমাদের সবাইকে এমন মনোভাব পরিত্যাগ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি।
আমি প্রত্যেক সাংবাদিককে অনুরোধ করবো সবাই যার যার অবস্থান থেকে কাজ করুন। একজন সাংবাদিক আরেকজন সাংবাদিককে সহকর্মী বা ভাই ভাবুন। সবার সাথে সু সম্পর্ক বজায় রাখুন। তাহলেই আমাদের সাংবাদিক সমাজকে হেয় করার সাহস কারো হবে না।
প্রত্যেক প্রেসক্লাবকে আমি অনুরোধ করবো যে, আপনারা নতুন সাংবাদিকদেরকে আপনার ¯েœহ, ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখুন। কেউ প্রেসক্লাবের সদস্য হতে না পারলেও তাকে সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে হয়তো তিনি সদস্য হবার যোগ্যতা অর্জন করবে আপনাদের সহযোগিতায়। তারা আপনাদেরকে যারপরনাই সম্মান করবে। আপনাকে কোথাও হেয় প্রতিপন্ন হতে দেখলে তার অন্তর কাঁদবে। প্রয়োজনে প্রতিবাদ করবে। দেশের কোথাও কোন বিকল্প প্রেসক্লাব গঠনের প্রয়োজন পরবে না। আমরা চাই দেশের সকল সাংবাদিক একই প্লাটফরমে থেকে কাজ করবে। প্রয়োজনে সকল সাংবাদিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
লেখকঃ কাজী জহির উদ্দিন তিতাস, সভাপতি, জাতীয় সাংবাদিক ক্লাব, কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা।
১৩টি মন্তব্য
অনন্য অর্ণব
সাংবাদিকতা অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি পেশা। সাংবাদিক জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটে নিত্যনতুন ঘটনার মুখোমুখি হয়ে। স্বচ্ছ নিরেট নির্ভেজাল বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করতে গিয়ে সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের চেয়ে ও বেশি জনরোষের শিকার হন। যে কারণে সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যে ইউনিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেক্ষেত্রে সিনিয়র জুনিয়র নয় বরং দল মত বয়স নির্বিশেষে সকল সাংবাদিকদের উচিত একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা। অনেক অনেক শুভকামনা ভাইয়া।
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
সুন্দর মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে।
প্রথম লেখা পড়ে যতটা খুশি হবার কথা ততটা হতে পারলাম না।
আপনি একটি পুরাতন লেখা যা গতবছর ২৬ নভেম্বর নতুন বার্তায় প্রকাশিত হয়েছে তা দিলেন এখানে। লেখাটি আপনার ঠিক আছে, কিন্তু সোনেলার জন্য তা লিখেন নি।
গরম ভাত খেতে যেমন মজা, ভাত ঠান্ডা হলে তেমন ভালো লাগেনা।
সোনেলার জন্য নতুন লেখা দিন।
শুভ ব্লগিং
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে ব্যস্ততার জন্য প্রথম এই লেখাটি দিলাম। সোনেলার জন্য লেখা প্রস্তুত করছি। ইনশাআল্লাহ অচিরেই তা দেয়া হবে। আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।
তৌহিদ
সোনেলায় স্বাগতম।
★আপনার নাম বাংলায় দিন, ব্লগে প্রোফাইলে যে নামে লিখতে চান সেখানে এই অপশন পাবেন।
★ আপনার প্রোফাইল নিজে লিখুন। আপনি কপি করে নিজের প্রোফাইলে পেস্ট করেছেন। এতবড় একজন সাংবাদিক হয়ে আপনি নিজের প্রোফাইলে নিজেকেই নিজে লিখতে পারলেন না ? সব জায়গায় তিনি শব্দটি দেখে বোঝাই যাচ্ছে এটি আপনি লেখেননি।
★ ব্লগে লেখার পরে নিজের নাম দেবার দরকার নেই। প্রতিটি লেখা আপনার নামেই প্রকাশিত হচ্ছেতো!
★ অন্যের লেখায় নিজের মতামত দিন, এতে অন্যান্য লেখকগন আপনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাবে।
আপনার কাছ থেকে সমসাময়িক বিষয়ে প্রতিদিন লেখা চাই কিন্তু ভাই। আর হ্যা ব্লগ নীতিমালা পড়ে নিয়েন একবার।
ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
স্বাগতম আপনাকে। শুভ ব্লগিং
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
ধন্যবাদ আপনাকে
ফয়জুল মহী
ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সবসময়
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন
রেহানা বীথি
স্বাগতম সোনেলায়। ভালো থাকুন।
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
সাবিনা ইয়াসমিন
সাংবাদিকতা একটি মহৎ ও চ্যালেঞ্জিং পেশা। সৎ পরিশ্রমী সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখেন না এমন মানুষ বিরল। আপনার উত্থাপিত প্রস্তাব গুলো বাস্তবায়িত হোক, এটাই প্রত্যাশা রইলো।
সোনেলা পরিবারে আপনাকে স্বাগতম।
নিয়মিত লিখুন, ভালো থাকুন।
শুভ কামনা 🌹🌹
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। বাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।