মানবসভ্যতা দাঁড়িয়ে আছে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনের উপর।
দুষ্টলোককে প্রশ্রয় দিলে ফলাফল কখনোই ভালো হয়না। কিন্তু আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, যারা সমাজে সুশীল বলে পরিচিত, কেনো যেনো তাঁদের অনেকেই কথা বলার সময় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যান দেশের বড় দুদলের মধ্যে একটা ব্যালেন্স মেনটেইন করার জন্য। মানুষ যে কতো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হতে পারে, তাঁদের বুদ্ধি বিতরণের ধরণ দেখলে বুঝা যায়। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দোলাচলে আটকে আজ তাঁরা সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারছেন না। দিনকে দিন তাঁদের এই দ্বিধাগ্রস্ত মনের কুপ্রভাব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সাধারন মানুষ, এমনকি রাজনতিবিদরাও এর কুপ্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারছেন না।
নিরপেক্ষ থাকা মানে তো এই নয় যে, একের সমান্তরালে অন্যকেও টেনে এনে দাঁড় করাতে হবে! কিন্তু তাঁরা তাই করছেন। মুলতঃ তাঁরা দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার চেষ্টা, সুবিধাবাদী অবস্থান বজায রাখার চেষ্টা করতে গিযে নীতিতে অটল থাকতে পারছেন না। কখনো কখনো তাঁরা স্বার্খের কাছে নীতিকেও বিক্রি করে দিচ্ছেন। সুবিধাভোগের জন্য অন্ধভাবে একচোখা হয়েও কথা বলে যাচ্ছেন।
আজকের বাঙলাদেশের রাজনৈতিক দুরাবস্থার জন্য জ্ঞানপাপী এই সুশীল সমাজ অনেকাংশেই দায়ী। তা না হলে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন পুড়ে কয়লা হযে যাচ্ছে তা নিয়ে তাঁদের তেমন কোন আওয়াজ শুনা যায়নি কিন্তু যারা কয়লা বানাচ্ছে তাদের যখন বিজিবি গুলি করে মারার ঘোষণা দেয় তখন তাঁদের সরব হতে দেখা যায়, তাঁদের বুকে জ্বালা শুরু হয়ে যায়। মানবাধিকার! মানবাধিকার! বলে তাঁরা আহা-উহু শুরু করে দেন।
হায়রে আমাদের সুশীল!!
সমস্যার শিকড় উপড়ানো নয়, বিচ্ছিন্ন ভাবে আহা উহু করে সংস্কারের প্রলেপ লাগিয়ে মানুষকে তাক লাগিয়ে দেয়াই মুলত তাঁদের কাজ।
উচ্চ ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সুবিধাভোগী এ গোষ্ঠী পুঁজিবাদী টোপ গিলতে সব সময়ই প্রস্তুত। পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থায় তাঁরা নিজেদের প্রকাশ করেন ‘বিকল্প নতুন শক্তি’ গড়ার কারিগর হিসেবে।
সারাদেশ যখন পুড়ছে একজনের আঙুলের ইশারায়, যখন পুরু দেশজুড়ে মানুষ পুড়ে অঙ্গার হযে যাচ্ছে তখনো তাঁরা চোখ বন্ধ রেখে দুনেত্রীকে সংলাপে বসতে বলেন কিন্তু বলেন না এ সহিংসতার আশ্রয় যারা নিয়েছেন তাঁরা ভুল পথে আছেন। এই করেই তাঁরা সমস্যার সমাধানের পরিবর্তে জল ঘোলা করতেই যেনো আদাজল খেয়ে লেগে পড়েন।
আর সমাজের সাধারন মানুষগুলো তাঁদের কথা শুনে বিভ্রান্তিতে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলসশ্রুতিতে দিনকে দিন নষ্ট লোকের সংখ্যা সমাজে বেড়েই চলেছে।
২৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
সমসাময়িক অবস্থায় ভালো একটি পোষ্ট দিলেন,
সুশীল এখন একটি গালি বাচক শব্দে পরিনত হয়েছে,তাদের এক চোখা দানব নীতি চিন্তার কারনে।
একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন জানিয়ে আসছে এই সব একচোখা সুশীল নামক দানবেরা।
সাধারন জনগনকে জিম্মি করা,আগুনে পুড়িয়ে মারার মধ্যে এরা কোণ মানবাধিকার লংঘন দেখেনা
এই সব সন্ত্রাসীদের দমন করার চেষ্টা করা হলেই লংঘন দেখে।
এই সব সুশীলদেরই পুড়িয়ে মারা উচিৎ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
তাঁদের কারো কারো ভূমিকা সমাজে উশৃঙ্খলতাকে উসকে দেয়। অথচ সব দোষ গিয়ে পড়ে রাজনীতিবিদদের উপর।
বনলতা সেন
দুষ্ট আর শিষ্টের সংজ্ঞা সময়ের সাথে পাল্টে যাচ্ছি। আম জনতা এক জায়গায়ই থেকে যাচ্ছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শিষ্টের সংজ্ঞা পাল্টাচ্ছে না আপু! দুষ্টের সংখ্যাধিক্যের কারনে শিষ্টলোকদের বিচরণ সমাজে কমে গেছে। আর দুষ্টদের দ্বারা আমজনতা প্রভাবিত হচ্ছে।
অরণ্য
সুন্দরী মেয়েরা নাকি কুটিল হয় কম। স্পোর্টসম্যান বা এথলেটরা নাকি একটু কমই বোঝেন জীবনের জটিলতা। আমি টিভি টকশোতে অনেককেই দেখি এবং শুনি। অনেককেই মনে হয় মাজাভাঙ্গা অবস্থান থেকে ইচ্ছেমত বলে যাচ্ছেন। এরাই নাকি সুশীল। মাঝে মাঝে মনে হয় এরা কথা বলছে শ্রেফ পেটের দায়ে বা নিজেকে জাহির করার দায়ে, কিছুটা ধান্দাবাজিতো আছেই। এরা শুধুই জানে সমস্যা। সমাধান বাতলানোর সাহসও কম দেখি এদের মধ্যে। এই কাপুরুষ টাইপের শিক্ষিতগুলোকেই আমি দায়ী করি বেশি। অনেক বোদ্ধাও কিন্তু আছেন, কিন্তু তারা যাবেন না। দায়ী আসলে তারাও। আমাদের বাঁচার আকাঙ্ক্ষা এত বেশি, আমরা ল্যাংড়া হয়েও বাঁচবো, তবু বাঁচতে চাই। কিন্তু একটু আলাদা করে ভাবতে পারলে হয়তো অনেককে নিয়েই ভালো করে বাঁচা যেত – কিছুটা বাঁচার মত বাঁচা!
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, অনেক বোদ্ধাও আছেন, কিন্তু তারা যান না। দায়ী আসলে তারাও। তাঁদের নীরব হয়ে থাকা উচিত নয়।
খেয়ালী মেয়ে
সুশীল সমাজ-বিষয়টা হাস্যকর…….
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাস্যকর ঠিক। কিন্তু আগামীর কথা ভাবলে কষ্ট হয়, জাতিকে তারা কোনদিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্বপ্ন নীলা
আমরা এই সব অন্ধ সুশীল হতে মুক্তি চাই—বাঁচতে চাই
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বাঁচতে হলে জাগতে হবে; জাগাতে হবে।
শুন্য শুন্যালয়
নিরপেক্ষতার লেবাসে পক্ষ নেয়া সহজ। আবার পোষাকের আড়ালে লুকোলেই চলবে সুবিধামতো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হুম! তাঁহারা নিরপেক্ষ থাকিবার নিমিত্তে উভয় দলের মাঝে একটা ব্যালেন্স রক্ষা করিয়া উভয় দলের সুহৃদ হইয়াই থাকিতে চান। সৎসাহস দেখাইয়া সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলিতে পারেন না।
লীলাবতী
একদল সন্ত্রাসী এসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম কারবে,এরপর সুশীলরা বলবে,সত্রাসীদের সাথে সমঝোতা করা উচিৎ।এই হচ্ছে আমাদের দেশের একচোখা সুশিল। সন্ত্রাসীদের সাথে কোন আপোষ নয়।সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থন দেয়ার জন্য সুশীলদেরও বিচার করা উচিৎ।অত্যন্ত সময়োপযোগি লেখা লিখেছেন আপু। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ আপু।
সময় এসেছে সুশীল নামের কুমন্ত্রনাদাতাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার। আর মিডিয়াও কম পিছিয়ে নেই। মিডিয়া তাদের বাক্স গরম করার জন্য এদেরকে দিয়ে আসর বসায়।
খসড়া
সমসাময়িক পোস্ট, সু শীল অর্থ নাপিত,যারা মাথা কামায়। যা বলতে চাই বুঝে নিন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
একটা সময় ছিলো, রাত জেগে এই টকশো গুলো না দেখলে ঠিকঠাক ঘুম হতো না। মনে হতো কতোকিছু যেনো অজানা রয়ে গেলো।
আর এখন? শুনলে মাথায় আগুন ধরে।
বুদ্ধিদাতাদের এই করুন অবস্থা দেখে আমার ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ এ বুদ্ধিজীবি হত্যার কথা খুব মনে পড়ে। কি ক্ষতিটাই না আমাদের করেছে পাকবাহিনী আর তাদের এদেশীয় দোসররা মিলে।
প্রহেলিকা
হায়রে সুশীল। সুশীল এখন গালিসম হয়েই উঠছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হুম্ম, তাইতো।
মরুভূমির জলদস্যু
-{@ মানবসভ্যতা দাঁড়িয়ে আছে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনের উপর। -{@
এই জিনিস এখন আর নেই, এটা এখন উলটে গিয়ে হয়ে গেছে –
“”শক্তের ভক্ত নরমের জম””
মারজানা ফেরদৌস রুবা
যেমন করে উল্টেছে, তেমন করেই মানবসভ্যতা এখন অসভ্যতার দিকেই ধাবিত হচ্ছে। সম্প্রতিই এমন একটি নজীর নিয়ে দেশে তোলপাড় হয়ে গেলো।
তবে, যতোই উল্টাক না কেনো সবশেষে লোকের মুখে সভ্যকে সভ্য আর অসভ্যকে অসভ্যই বলতে শুনা যায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
বর্তমান সময়ের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে আপনার লেখায়।যার সাথে তুলনা হবার কথা নয়,বর্তমানে তার তুলনা হচ্ছে।আর এটি করছে শিক্ষিত বলে দাবিকারীদের একাংশ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সমস্যা তো এখানেই। শিক্ষিত বলে দাবিদাররা যখন সাফাই গাইতে থাকে, তখন কিন্তু একটা ধোঁয়াশে অবস্থার সৃষ্টি হয়। বোধহীন অন্যায়কারীরা তখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা ভাবে পাবলিক সেন্টিমেন্ট তাদের সাথে আছে।
এসব উসকানীদাতাদের এবার থামাতে হবে।
এদের অনেকেই পশ্চিমাবিশ্বের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী। রাজনীতিবিদদের ব্যর্থ প্রমাণ করে পশ্চিমাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নই এদের লক্ষ্য।
মেহেরী তাজ
প্রচারে খারাপরা এগিয়ে আপু।ভালোদের জন্য আমরা প্রচার করি,ভালোরা প্রচারে উদাসীন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রচারেই প্রসার” খারাপরা এর ষোলআনা ব্যবহার করে, আর ভালোরা ভাবে আমার কর্মই আমার হয়ে আলো ছড়াবে; তাই তাঁরা উদাসীন। তাঁদের সে আলোই হয়তো আমাদের টানে, তাই আমরা তাঁদের হয়ে কথা বলতে মুখিয়ে থাকি।
আর এটা জানেন তো, মুমিনের প্রশংসা নাকি একসময় কমিনও করতে বাধ্য হয়।
ব্লগার সজীব
লেখার সাথে একমত আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সহমত পোষন করার জন্য ধন্যবাদ।