স্মৃতিতে সন্ধ্যা

প্রদীপ চক্রবর্তী ২৮ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার, ০৮:১১:৩২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৭ মন্তব্য

বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় বর্ণমালা ভেসে ওঠে একে একে আমাদের খামখেয়ালি খামে।
শতাব্দীর প্রতিটি বর্ণ সভ্যতায় এনে দিয়েছে উচ্চারণের সন্ধি প্রাণ। বাংলা, আর্য, চার্বাক, লেলিন, কুনফুসিয়াস অক্ষরে অক্ষরে তৈরি করেছে দর্শন।
অনেক অজানা অদেখা স্বপ্ন তাতে ঘিরে আছে।
গোধূলীর রক্তাম্বর মানে পাণিনির ইতিহাস নয়,
সভ্যতার ইতিহাস।
যেমন সিন্ধু, মেসোপটেমিয়া, মিশরের পিরামিড আর সপ্তম আশ্চর্যের সভ্যতা।
সভ্যতার বুকে গড়ে উঠেছে ইটপাথরের দেওয়াল।
টেরাকোটা, পোড়ামাটির ফলক আর মিশরে ফারাও খুফুর পিরামিডে রয়েছে লক্ষ দাস শ্রমিকের রক্তঘাম।
হরিণির খুর আর শনশন বাতাসের শব্দে আকাশ থেকে একসময় আমাদের নীলুয়া প্রেম নামত।
আকাশ জুড়ে সুখের মেঘমালা,
দেওয়াল বেয়ে বেড়ে ওঠা বিটপীর গায়ে বৃষ্টি।
বালিয়াড়ির ধূপের গন্ধে অপরাজিতার গায়ে আলো  নামে। বিলীন হওয়া সভ্যতায় জারুল ফুলের দিনযাপনে।
বিষণ্ণ আকাশের এককোণে মধুসূদনের মেঘনাদ কাব্য লুকিয়ে থাকে। তখন আমরা শৈশবের স্মৃতি নিয়ে বিভোর ছিলাম। পোড়ামাটি বলতে আমাদের প্রজন্মে কিছুই ছিলোনা, নীলু।
তা তো তুমিই জানো।
কত শহর চাঁদের আলো মেখে আমাদের পথ চলতে সাহায্য করেছিল। তবুও আমাদের স্বপ্ন অগোচরে রয়ে গিয়েছে।
শরৎ আসতে এখনো ঢের দেরী।
তবুও কেন যে আগমনী গন্ধ পাই।
বাড়ির উঠোনের একপাশ জুড়ে শিউলি ফুল আর রজনীগন্ধার গায়ে ভ্রূণের আনাগোনা।
রাস উৎসব থেকে অভিসার এসবের বাহানা দেখিয়ে আমরা কত হাওয়া খেয়েছি সমুদ্র পারে।
ইটপাথরের শহরে আজ বায়স্কোপ শূন্য।
নেই আজ আর মাঠভর্তি ধেনু।
নেই বাঁশিওয়ালা রাখালের হিজলের ডালে বসে গাওয়া ভাটিয়ালি গান।
শীত আসলে দূর্বাঘাস জড়িয়ে পড়ে শিশির।
নাকের ডগায় ভেসে ওঠে একে একে কাবেরী ধানের সুগন্ধি।
কৃষ্ণপক্ষের রাতে আকাশের এককোণে ষোড়শীকে সাক্ষী করে আমরা কতনা প্রজাপতিকে বিয়ে দিয়েছি।
ভোর হলেই চলে যেতাম ফুল কুড়ানোর বাহানায় ঐ পাড়ায় পরীদের গল্প শুনবো বলে।
দুপুর হলে বহতা নদী স্নান আর রান্নাবাটি শেষে বাড়ি ফেরা।
শৈশবের দিনাবসানে যখন এসব মনে পড়ে,
তখনি তোমায় নিয়ে পুরনো স্মৃতিতে ফিরতে চাই, নীলু।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ