সোনেলায় আমার একবছর

সুরাইয়া পারভীন ১০ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ০৩:৫৪:১৭অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩৪ মন্তব্য

দেখতে দেখতে একটি বছর, হ্যাঁ একটি বছর গেলো কেটে; তবুও মনে হয় এই তো সেদিনই এসে কড়া নাড়লাম তোমার দোরে। অচেনা আগন্তুক এক নিঃসঙ্গ পথিক আমি শূন্য হস্তে এসেছিলাম তোমার দ্বারে, তুমি আপন করে কাছে টেনে নিলে অজস্র ভালোবাসা দিয়ে শূন্য আমি'কে পূর্ণ করে দিলে। অযোগ্য আমাকে যথার্থ যোগ্য মর্যাদার আসনে আসিন করলে। তাবৎ দুনিয়ার কাছে তুলে ধরে পরিচিত দিলে। তুমি এতো বেশি দিয়েছো যে তোমার দেওয়া দানের যোগ্য প্রতিদান কীভাবে দেবো? তাই ভেবে ভেবেই রাত দিনের বেশিটা সময় যায় কেটে।

 

আসলে আজ আমি কিছু লিখতেই পারছি না। অজস্র শব্দ ঘুরছে মনে কিন্তু সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারছি না। এলোমেলো শব্দ গুলো বেশ ভোগান্তিতে ফেলেছে আমায়। তবুও হাল ছাড়ছি না। সুরাইয়াকে হারানো একদমই সহজ নয় বলে রাখলাম। সোনেলা আমাকে কতোটা দিয়েছে ছোট একটা গল্পে তা বলছি।

 

আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকতো একটা পরিবার। সেই পরিবারে একটা ছেলে ছিল। আমার বড় ভাইয়ার থেকে হয়তো একটু বড়। বেশ ভাবছিল ওদের। একসাথে খেলতো, ঘুরতো। আমি যখন হলাম তখন ঐ ভাইয়া আর আমার ভাইয়া দুজন মিলে আমাকে কোলে পিঠে মানুষ করেছে। আমি দু'জনারই বেশ আদরের বোনটি ছিলাম। ওরা দু'জনেই খুব ভালোবাসতো আমাকে তাই আদর করে দুজনেই তুই বলতো। ভাড়াটিয়া তো তাই চলে যেতে হয়েছিল তাদের। অনেক গুলো বছর পর আমার আবার দেখা সেই ভাইয়ার সাথে। আমরা ফেইসবুকে এ্যাড হলাম। টুকটাক কথাবার্তা হয়। হঠাৎ লক্ষ করলাম উনি আমাকে আপনি বলেছেন। কারণ জানতে চাইলে বললেন

 

-আপনি এখন সন্মানীয় ব্যক্তি বস্। আপনাকে যথার্থ সন্মান দেওয়া আমার দায়িত্ব।

~সেটা কেমন?

-এই যে সাহিত্যে আপনার এতো নাম ডাক। সবাই আপনাকে কতো কতো শ্রদ্ধা করে, সন্মান করে।     

~বুঝলাম। তা বলে যাকে কোলে পিঠে মানুষ করলেন তাকে আপনি বলে সম্বোধন করবেন এটা কেমন দেখায় বলুন!

-আপনাকে তুই/তুমি বললে নিজেরই কেমন যেনো লাগে!

~এটা কোনো কথা হলো! সবকিছুর আগে আমি আপনার অনেক আদরের আর ভালোবাসার সেই ছোট্ট বোনটি, এটা তো মানবেন তাই না? আপনি আমাকে আপনি বললে আমার যে খারাপ লাগে।

 

যা হোক অনেক কথা বলার পরে, অনেক অনুনয় বিনয় করে তিনি আমাকে তুমি বলে ডাকতে রাজি হয়েছে। কিন্তু আমিও তো নাছোড় বান্দা। তুই ডাক না শুনে ছাড়ছি না। তাই তিনি বাধ্য হয়েই এখন আমাকে তুই বলেন। উনি নিয়মিত আমার লেখা পড়েন ব্লগে। সেদিন বাবাকে নিয়ে লেখাটা পড়ে বেশ প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এটাও বলেছেন তোমার মতো একটা করে কন্যা যদি থাকতো সব বাবাদের!

 

মেয়ের বাবা ঝামেলা করলে আমাদের পরিচিতি অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন তার গর্ববোধ হওয়া উচিত এমন বউ নিয়ে। সবাই লিখতে পারে না। আল্লাহ সবাইকে এমন ক্ষমতা দেন না।  আমার বন্ধু বান্ধব স্বজন তো আছেই। 

 

এই রে বাড়াবাড়ি করছি না তো! কোথাও নিজের ঢাক নিজেই পিটাচ্ছি না! যা হোক, এবার আসল কথায় আসি।

 

সোনেলায় আজ আমার একবছর পূর্ণ হলো। অথচ মনে হয় এই তো সেদিন মমি ভাইয়া, ইঞ্জা ভাইয়া, সাবিনা আপু বললেন সুরাইয়া আপু আমাদের ব্লগে আসুন, লিখুন, পড়ুন। ব্লগে লিখলে আপনার লেখার মান বাড়বে, অনেক মানুষ পড়বে, অনেক কিছু শিখতে পারবেন। ব্যস আমিও আর লোভ সামলাতে পারলাম না। চলেই এলাম ব্লগে। ব্লগে এসে সবার এতো আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ।

 

সোনেলার নক্ষত্রদের( জিসান ভাইয়া, হেলাল ভাইয়া, তৌহিদ ভাইয়া, শামীম দাদাভাই, সুপায়ন দাদা, প্রদীপ দাদা, নাজমুল ছোটভাই অবশ্য পূর্ব পরিচিত। সাবিনা আপু, বন্যাপু, আরজু আপু, সুপর্ণা দিদিভাই, কোবরা আপু, রুকু আপু সহ নতুন পুরাতন আরো অনেকেই আছেন যাদের নাম এই মুহূর্তে মনে নেই তারা আমাকে ভুলোমনা ছোট/বড় বোন ভেবে ক্ষমা করবেন নিশ্চয়ই!) স্নেহ ভালোবাসা সন্মান শ্রদ্ধা পেয়ে আমি ধন্য। 

সোনেলায় এসে অনেক কিছু শিখতে পারছি, এখনো শিখছি। আমার করা ভুলভ্রান্তি গুলো সবাই আন্তরিকতার সাথে শুধরে দিচ্ছেন। যা অন্য কোথাও কল্পনাও করা যায় না। লেখা আর দীর্ঘায়িত করবো না। আমি শুধু চাই, যতোদিন লেখার পড়ার ক্ষমতা থাকবে আমার ততোদিন সোনেলার সাথেই থাকতে। সোনেলার উঠানেই বিচরণ করতে। ভালো থাকুন সবাই, সোনেলায় পথ চলা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হোক সবারই। শুভ ব্লগিং

 

0 Shares

৩৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ