একসময়ঃ মালিহা প্রচুর জনসমাগম এর ভিতর দাড়িয়ে ভাবছে কেন যে একটু আগে বের হলাম অফিস থেকে! রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে হবে এখন কি হবে? প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওর অফিস ছুটি হয়, ইচ্ছে করেই আরো একটু দেরি করে বের হয় কারণ বস খুশি হবে আর পরের বছর ইনক্রিমেন্ট ও বেশী হবে আর তারচেয়ে বড় কারণ ওই সময় অনেক ভীর থাকে লোকাল বাস গুলো তে। সিটিং সার্ভিস বা সিএনজি তে কবে চড়েছে মনে নেই ওর। এভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো? আর মানুষ গুলোই কেমন কোন ছাড় দিচ্ছে না কেউ কাউকে। আহা! ওই লোকটা এটা কি করলো! জানালা দিয়ে কেউ গাড়ি তে উঠে? তাও আবার লেগুনার জানালা। অসম্ভব আমাকে দিয়ে হবে না। তারচেয়ে হেঁটেই যাব বাসায়, লাগুক দুই ঘন্টা। রাস্তার ফুটপাত ধরে হাঁটা শুরু করলো আর ভাবলো ভালই হয়েছে গাড়ী ভাড়া তো বেঁচে গেল।
অন্য সময়ঃ মালিহা আমাকে না বলে বের হয়ো না কিন্তু, মালিহা বললো আরে ভেবনা অত, আমি ম্যানেজ করে নিব বলে জানিয়ে দিল পতিদেব কে ঘুমানোর আগে। সকালে বের হওয়ার জন্য ব্যস্ত মালিহা, মেয়ের স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা, ঠিক বের হওয়ার আগ মূহুর্তে পতিদেব এর ফোন আসলো মুঠোফোন এ। গাড়ী কিন্তু আমি নেইনি গেইট এর সামনে অপেক্ষা করছে, তোমার সিরিয়াল আসার আগ পর্যন্ত গাড়ীতেই থেকো বাইরে অনেক রোদ। মুঠোফোনে কথা বলা শেষে একটু হাসলো মালিহা এই ভেবে যে পতিটা আসলেই তার জীবনে দেবতুল্য।
কখনো এখানেই শেষ এটা ভেবে মন খারাপ করা ঠিক না, আমরা কেউই জানিনা আমাদের জন্য বিধাতা কী রেখেছেন। একদিন সব ঠিক হবে এটা না ভেবে আজকের সময়টা সঠিকভাবে কাজে লাগালে তৃপ্তি পাওয়া যায়।
২১টি মন্তব্য
রিতু জাহান
সত্যিই তাই একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে ভেবে অপেক্ষায় অপেক্ষায় কেটে যায় দিন থেকে থেকে দিনে, রাত গিয়ে মেশে ভোরের কোলে।
মাঝে মাঝে আমার হাঁটতে খুব ভালো লাগে।
একবার আমি শ্যামলী দুই নম্বর রোড কাজি অফিস আমার বাসা থেকে ফার্মগেট হেঁটে গেছিলাম।
জীবন সঙ্গী দেবতুল্য না হলে বেশ মুশকিল।
শাহরিন
আপু রাস্তায় দাড়িয়ে মাঝে মাঝেই আমি দুই একটি মানুষের মুখ দেখি, বাসে চড়ে কোথাও গেলে মানুষ দেখার সুযোগ বেশী হয়। একেকটা মানুষ একেকটা গল্প বহন করে। শ্যামলী ২ নাম্বার রোড আমার খুবই পরিচিত জায়গা। বহুবার গিয়েছি।
আমি আর আমার বড় বোন একবার নিউমার্কেট থেকে মিরপুর ১ নাম্বার হেটে এসেছিলা। হরতাল এর আগেরদিন শপিং করতে গিয়েছিলাম ☺
মোঃ মজিবর রহমান
শ্যামলি টু ফারাম গেট অনেক পথ। হাটা স্বাস্থের জন্য ভালই।
রিতু জাহান
হুম, মজিবর ভাই। আমার মেমন পেটে থাকতে আমি খুব হাঁটতাম। হাঁটতে হাঁটতে সংসদ ভবনের কাছে চলে যেতাম।
হাঁটাটা হয়তো কাজে দিয়েছিলো। আমার দুই ছেলেই নরমাল ডেলিভারি।একটা ব্যাগে পানির বোতল নিতাম আর হাঁটতাম।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা ঠিক বলেছ, কখনোই এখানেই শেষ এটি ভাবা উচিৎ না।
বর্তমান সময়কে উপেক্ষা করা ঠিক না।
শিক্ষামুলক লেখা।
শাহরিন
ঠিক দাদা বর্তমান কে যারা উপেক্ষা করে, সে বর্তমান ই একসময় তাদের টুটি চেপে ধরে।
ছাইরাছ হেলাল
অতীত স্পষ্ট চাখে চেয়ে থাকে, ভবিষ্যৎ অন্ধত্বে থাকে।
অনুভবে অনুতাপে শুধুই বর্তমান।
অতএব বাঁচতে হবে প্রতি মুহূর্ত।
চলবে, চলবে, খুব ভাল করে।
এই দেরি করে লিখতে আসা কোন ব্যাপার না।
শাহরিন
বর্তমানের মন একটু সেনসেটিভ, কিছুই মানতে চায় না, একটু এদিক সেদিক হলেই কড়া শাস্তি।
জ্ঞানী লোকদের দৃষ্টিতে পড়তে সবার ভালোলাগে।এটা ব্যাপারটা একটু দেরিতে বুঝেছি।
ছাইরাছ হেলাল
আমাকে একটি ‘গ্যানি লুকের’ খুঁজ দিয়ে অশেষ নেকি হাসিল করুন।
সাবিনা ইয়াসমিন
” কখনো এখানেই শেষ এটা ভেবে মন খারাপ করা ঠিক না, আমরা কেউই জানিনা আমাদের জন্য বিধাতা কী রেখেছেন। একদিন সব ঠিক হবে এটা না ভেবে আজকের সময়টা সঠিকভাবে কাজে লাগালে তৃপ্তি পাওয়া যায় ”
আজকে কি পেয়েছি সেটাই আসল। কাল থাকবো কিনা তা কজন বলতে পারি। পরিপক্ক উপলব্ধি। জীবন সংগী দেবতুল্য হলে স্বর্গে যাবার কোনো তাড়া থাকে না। পৃথিবীটাই স্বর্গের মতো মনে হয়।
জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। ভালো থেকো সব সময় সবার মাঝে। ❤❤
শাহরিন
হুম, বাস্তব মেনে নিলে সুখী হওয়া না গেলেও হীনমন্যতায় ভোগে না কেউ। দেবদের ও কিন্তু ভূল হয়, তখন নিজেকে দেব এর বউ না অভিভাবক ভেবে মাফ করে দিলেই ব্যাস!!!
অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
মনে রাখলাম বরতমানের কস্ট বুকে নিয়া সুখি হই আল্লাহ তাই বলেন। ভাল লাগ্ল।
শাহরিন
মনে রাখার মতো কিছু বলতে পেরেছি এটা জেনে খুশী হলা। অনেক ধন্যবা।
তৌহিদ
আমরা আসলেই কেউ জানিনা শেষটায় কি রয়েছে। তাই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত সবসময়।
ভালো থাকবেন আপু।
শাহরিন
ভাইয়া উৎসাহ দেয়ার জন্যঅসংখ্য ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকবেন।
রাফি আরাফাত
শেষ ফলাফলটা বাস্তবতা দ্বারা নির্ধারিত। অনেক অপেক্ষার শেষটাও হয়তো কাঙ্খিত হয়না।
শাহরিন
গল্পের শেষ হয় জীবনের না। সব ঠিক হবার অপেক্ষা না করে যা ঘটে সেটাকেই ঠিক মানতে পারলে জীবনটা একটু সহজ হয় আর কি!! অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জ।
শাহরিন
*জন্য
রাফি আরাফাত
আপনাকেও ধন্যবাদ
বন্যা লিপি
উফ্…. কি দুঃসহ কিছু সময় পার করেছি!!
একসময় সময়গুলো স্মৃতীর খাতায় বন্দী করে, দিব্যি সময়ের হাতে আবার সাবলীল জীবন বহমান। বাস্তবতাকে যে যত সহজে মোকাবেলা করতে পারে! ততোটা আত্মতৃপ্তিতে গুছিয়ে নিতে পারা সম্ভব! সব ভালো তাঁর, শেষ ভালো যার।। অনেক অনেক শুভেচ্ছা শুভ কামনা 🌺🌺🌺
শাহরিন
কষ্ট না করলে তো সুখ টা ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায় না আপু। ধন্যবা। দোয়া রাখবেন।