ধরিত্রীর বুকে প্রথম পদধূলি দেয়া সেই আদিম মানুষটির নিজের অস্তিত্বের টিকে থাকার লড়াইয়ের মতই কামনাবাসনার এই খেলাই সকল সভ্যতায় আমাদের অস্তিত্বকেও টিকিয়ে রেখেছে আদিঅন্ত।

সভ্যতার বিকাশে আমরা আমাদের আদিম রিপুকে দমন করতে শিখতে পারিনি। পূর্বেও কেউ পারেনি আগত ভবিষ্যতেও কেউ পারবেনা। কারণ যেদিন মানুষের আদিম প্রবৃত্তি বন্ধ হয়ে যাবে সেদিনই সভ্যতার বিকাশও স্তব্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃতি এই শক্তি আমাদের দেননি।

আর এ কারনেই নিত্য নতুন সভ্যরা এলেও সৃষ্টির প্রথম মানুষের থেকে যুগ যুগান্তরে আমাদের অস্তিত্ব এখনো সেই আদিম যুগের মতই টিকে আছে আর থাকবে। এই একটি জায়গায় আমরা আধুনিক হতে পারবোনা কখনো।

দেহের ক্ষুদ্র আকারের মধ্যে, দেশ-কাল-পাত্রের নির্দিষ্টতার দ্বারা চিহ্নিত হয়ে যে মানবাত্মা বাস করে, মৃত্যুর পরে তা অনন্ত জীবনের মধ্যে মিশে গিয়ে অনন্ত কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রাখে। এই বিশ্বাস থেকেই আমরা নতুন সভ্যতায় নতুন করে নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছি সবসময়।

এই পৃথিবীর খন্ড, ক্ষণিক জীবনে কোন পরিপূর্ণতা নেই, কোন স্বার্থকতা নেই। মৃত্যু জীবনকে অখন্ড করে, ক্ষণিক জীবনকে অনন্ত করে এবং প্রকৃত সস্বার্থকতা দান করে। খন্ডিত জীবনে নিজেদের অস্তিত্ব বিলুপ্তপ্রায় হবার আগেই আমরা নিজেকে আবারো প্রকাশ করতে চেয়েছি নতুন করে।

শুধুমাত্র এই একটি কারনেই শত জর্জরিত আঘাত সহ্য করেও আমরা পুরনো সভ্যতাকে ভেঙ্গে নতুন সভ্যতা গড়ছি। পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত এর সমাপ্তি নেই। সভ্যতা বিকাশের ধারাবাহিকতা এভাবে চলতেই থাকবে।

ভারত-পাকিস্তানের কাশ্মীর অংশে, ইসরাইল, প্যালেস্টাইন, আফগানিস্তান, সিরিয়াসহ পৃথিবীর সকল দেশে যুদ্ধের দামামা বন্ধ হোক। সভ্যতায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে গিয়ে পৃথিবী থেকে সভ্যরা ধ্বংস হয়ে যাক এটি আমরা চাইনা। অস্তিত্বের এ লড়াইয়ে আবহমান সভ্যতা বিকশিত হোক শান্তির বার্তা নিয়ে।

(সমাপ্ত)

সভ্যতায় অস্তিত্বের লড়াইয়ে মানুষ (দ্বিতীয় পর্ব)

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ