আমি জানিনা আমার এ লেখা পাঠক কিভাবে নেবে। যেভাবেই গ্রহণ করুন। আমার কাছে মনে হল এ সম্পর্কে কিছু লেখা দরকার। আমাদের চোখের সামনে অনেক কিছু ঘটে যায়। যা দেখেও আমরা কিছুই করতে পারি না।ধাতব পদার্থে মরিচা ধরে ক্রমাগত পদার্থ ক্ষয় হয়ে যায়। আমাদের সমাজে এমন কিছু অবক্ষয় হচ্ছে ।যা আমাদের সমাজটাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে।
নাগরিক জীবনের অস্থির চাপে মাঝে মাঝে দম বন্ধ হয়ে আসে। ইচ্ছে করে মুক্ত বাতাসে প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে। কয়জন সহকর্মী মিলে কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। একটু আগে পৌঁছে আমি অপেক্ষা করছিলাম। ছুটির দিন প্রচন্ড ভিড়। অটো রিক্সায় কিশোর কিশোরীর মেলা। যেন প্রত্যেকে এক জোড়া দম্পতি। বয়স তাদের ১২ থেকে ১৫/১৬।
বছর তিনেক আগের কথা। চাকরির সুবাদে তখন চট্টগ্রাম ছিলাম। ছুটির একদিনে আমি আর আমার এক কলিগ ফয়েজ লেকে ঘুরতে গেলাম। জোড়ায় জোড়ায় বসা। অনেকেই স্কুল/কলেজ ড্রেস পড়া। ওদের বেসামাল অবস্থা দেখে নিজেরা লজ্জা পেয়ে সরে আসলাম। বুঝলাম ওরা ভালবাসার অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।
ধানমন্ডি থেকে মতিঝিল বাসে আসছিলাম। ১৪/১৫ বছরের মেয়েটি মহিলা আসনে বসা ছিল। কিছুক্ষণ পর সীট খালি হলে সে একটি ছেলের গিয়ে পাশে বসে। সীট না পাওয়ায় তারা এতক্ষন বিচ্ছিন্ন ছিল। এরপরে দৃশ্য বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বাস চালকের উক্তিটি যথেষ্ট। যাত্রী ওঠার সময় বাস চালক বললেন- আসেন আসেন বিনা টিকেটে সিনেমা দেখে যান।
সাধারণ পার্ক গুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। এক সময় এ ধরনের অবাধ মেলামেশা গুলো ছিল আড়ালে আবডালে। এখন তারা প্রকাশ্যে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছে। এসকল ছেলেমেয়েরা আমাদেরই মতো কোনো না কোনো বাবা-মার সন্তান। যারা বাবা মার চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্বিচারে অপকর্ম করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ভয় হয় আমার বা আমাদের সন্তান ওপথে যাবে না তো।
হয়তো অনেকেই বলবেন। স্বাধীনভাবে নিজ নিজ মতো করে চলার অধিকার সবারই আছে। এই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশা আসলে কি মেনে নেয়া যায়। সমাজের কোন পথে এগোচ্ছি আমরা। এ ব্যাপারে কি প্রশাসনের কোন কিছুই করনীয় নেই। এর থেকে উত্তরণের পথ কি। নাকি এভাবে হারিয়ে যাবে আমাদের কৃষ্টি, মূল্যবোধ, নৈতিকতা।
৮টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
আমরা প্রতিযোগিতার মধ্যে বাস করছি
অনেকেরি চোখ নাক খুলে গেছে তাই
লাজলজ্জা সম্মান মূল্যবোধ নৈতিকতা
আগের মতো আর নেই——আর কিছু হবে!
কবি হালিমা আপু
ভাল থাকবেন—————
হালিমা আক্তার
অশেষ ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
খাদিজাতুল কুবরা
আপু একদম সময়োপযোগী লিখেছেন। সত্যি নৈতিকতার অবক্ষয় চরমে পৌঁছে গেছে। পারিবারিক অবকাঠামো প্রায় ভঙ্গুর। আর প্রযুক্তির অপব্যবহার ধ্বংসাত্মক ভূমিকায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে
হালিমা আক্তার
একদম সত্যি কথা বলেছো। প্রযুক্তির অপব্যবহার আমাদের শেষ করে দিচ্ছে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
মোঃ খুরশীদ আলম
আমরা ভুলে গেছি- শেষ পরিণতি বলতেও কিছু একটা আছে।
ধন্যবাদ সময়োপযোগী পোষ্ট দেয়ার জন্য।
হালিমা আক্তার
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
দালান জাহান
স্বাধীনতা ভালো। অতি স্বাধীনতার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। সুন্দর লিখেছেন
হালিমা আক্তার
স্বাধীনতার অপব্যবহার অধঃপতন নিয়ে আসছে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।