শফি ইমাম রুমী। বয়স বিশ।
আইএসসি পাশ করে আমেরিকান
ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজিতে পড়ার
সুযোগ পেয়েছে। ৭১ এর সেপ্টম্বর
মাস থেকে ক্লাস শুরু।
জাহানারা ইমামের বিখ্যাত
গ্রন্থটি যাকে নিয়ে লেখা।

যদি যুদ্ধে না যাওয়া হয় মায়ের
কাছে তার প্রশ্ন ' ‘আম্মা, দেশের
এ রকম অবস্থায়
তুমি যদি আমাকে জোর
করে আমেরিকায় পাঠিয়ে দাও,
আমি হয়তো যাব শেষ পর্যন্ত।
কিন্তু
তাহলে আমার বিবেক চিরকালের
মতো অপরাধী করে রাখবে আমাকে।
আমেরিকা থেকে হয়তো বড়
ডিগ্রি নিয়ে এসে বড় ইঞ্জিনিয়ার
হব,
কিন্তু বিবেকের ভ্রুকুটির
সামনে কোনো দিনও মাথা উঁচু
করে দাঁড়াতে পারব না। তুমি কি তাই
চাও, আম্মা?’

এক পর্যায়ে জাহানারা ইমাম
'যা তোকে দেশে জন্য
কোরবানী করে দিলাম।
১৯-এ এপ্রিল তার
মাকে রাজি করিয়ে ২-এ মে সিমান্ত
অতিক্রমের চেষ্টা চালায়। প্রতিকূল
পরিস্থিতি কারণে তাকে ফিরে আসতে হয়।
পরে বারে প্রচেষ্টায় সফল হয়।
সেক্টর ২ অধীনে খালেদ
মোশাররফের পরিচালনায় দেড় মাস
প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।
পরে ঢাকা ফিরত
আসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিরোধী গেরিলা সংগঠন
ক্র্যাক প্লাটুনে যোগ দেন।

টার্গেট খানসেনা।

২৫-এ আগস্ট রুমী, কামালদ্দিন,
বদিউল, স্বপন, হাবিবুর।
প্রথমে ধানমন্ডি ৮, পরে মিরপুর
রোড সফল ভাবে গেরিলা অপারেশন
চালায়।

রুমীর
বাড়িতে ফিরে আসলে যোদ্ধা যাওয়া থেকে সব
কথা জাহানারা ইমামকে বলে

'রুমীকে তার মা একদিন বলেছিলেন
কখনো যদি সিগারেট
ধরে তাহলে তাকে যেন বলে'।
রুমীঃ 'আম্মা আমি কিন্তু সিগারেট
ধরে ফেলেছি'। অনেক সময়
ধরে যুদ্ধে থাকাকালীন
না খেয়ে থাকলে'। সিগারেট-ই শেষ
সম্বল হিসাবে থাকে।
মা তুমি যদি বল আমি বাহির
থেকে সিগারেটা খেয়ে আসি।
উত্তরে জাহানারা ইমাম 'না, তুই
আমাদের সামনে বসে খা'। কারণ এক
মুহূর্ত চোখের আড়াল হয়ে যাবে রুমী।

অথচ, একদিন রুমীর এক বন্ধু
সিগারেট খাওয়াতে জাহানারা ইমাম
তাকে ঘর থেকে বাহির করে দিয়েছে।

যে রুমী ডালে খোসা দেখলে আর খাই
না। সে যুদ্ধে গিয়ে গমের আটার
রুটি আর ঘোড়ার ডাল খাই (যে ডাল
ঘোড়ারা খাই).

২৯-ই আগস্ট রুমী বাড়িতে ছিলেন।
এই-দিনটা ছিল রুমির বাবা মা ছোট
ভাই জামির সাথে কাটানো শেষ দিন।

রাত বারটার দিকে হঠাৎ করে সমস্ত
বাড়িতে আলো জ্বলে উঠে।
নিচে থেকে ডাকাডাকি শুরু হয়।
জাহানারা ইমাম ও শরীফ
কারা জানতে চাইলে নিচে আসে কথা বলতে বলে।
'রুমী সহ শরীফ
জামিকে ধরে নিয়ে যাই'।
পরে শরীফ আর জামিকে মারধর
করে ছেড়ে দিলেও রুমীকে ছাড়ে নাই।
রুমীর সাথে শরীফ আর জামির
একবার-ই দেখা তখন রুমীকে শরীফ
তার সহযোগীদের নাম
বলতে না করে দেন।

৫-সেপ্টম্বর ইয়াহিয়া খান সাধারণ
ক্ষমা ঘোষনা করলে, রুমী যে দলের
কাছে ধরা পরেছে শরীফ তাদের
কাছে ক্ষমা চাইবে না। কারণ
ছেলে রুমিও তাকে ক্ষমা করবে না।

রুমীর খুনী হচ্ছে মুজাহিদ।

আজ রুমীর বেঁচে থাকলে কি হতো??
জানিনা।

তবে রুমী আমাদের পথচলা। আজ ২৯-
মার্চ রুমীর জন্ম দিনে জানাই শুভ
জন্মদিন।

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ