শিরোনামহীন

গাজী বুরহান ১৫ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার, ১২:০৪:৩৯পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৭ মন্তব্য

কুকুরের বাচ্ছা কুকুর মরেছে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ দেশে রাস্তা-ঘাটে মানুষ মরে আর এ তো সামান্য কুকুর! যুদ্ধ হলে খুন, ধর্ষণ,লুটতরাজ হয় এটা স্বাভাবিক। স্বাধীনতা যুদ্ধে কত খুন হল কত জন নারী ধর্ষিতা হল তার হিসেব-নিকেশ করবার লোকের কমতি নেই। পরিসংখ্যানে একটু উনিশ-বিশ হলেই রাষ্ট্রদোহী মামলা থেকে রাজাকার পর্যন্ত হবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী এ স্বাধীন দেশে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত মেয়ে দিনদুপুরে রাস্তাঘাটে নির্যাতিত হয়েছে সে হিসেব কি কেউ রেখেছে?
যাকগে, যে কথাটি বলছিলাম কুকুরের বাচ্ছা মরেছে। কিন্তু একটু অস্বাভাবিকভাবে মরেছে। প্রথমত, একটি প্রতিষ্টান মানে শিল্পকলা একাডেমীর ভেতর মরেছে।
দ্বিতীয়ত, গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছে মানে এক ভদ্র লোক এর উপর দিয়ে গাড়ি চালায়ে দিছেন।
পাশে দুটি কুকুর অসহায়ের মত বসে আছে এবং দিবদিব করে চারদিকে তাকাচ্ছে। খানিকটা ভিড় জমে গেছে। দুজন নিরাপত্তাকর্মী বিরক্তি মুখে ভদ্রলোকের দিকে থাকিয়ে আছে। এই বিরক্তির কারণ স্পষ্টই যে মৃত কুকুরটিকে সরানোর মত বিশ্রি কাজটি তাদেরই করতে হবে। আমি উপরের সিঁড়িতে থাকায় সব স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
পাশেই চটপটির দোকান। একটি মেয়ে চটপটিওয়ালাকে কি যেন বলল। মনে হয় চটপটির অর্ডার দিয়েছে। হ্যা! টিক তাই। চটপটির প্লেট হাতে নিয়ে সামনে ভিড় দেখে এগুচ্ছে। আমি শিওর ছিলাম মৃত কুকুরটি দেখে মেয়েটি ওয়াক ওয়াক করে বমি পর্যন্ত করে দিতে পারে। কিন্তু না, সে খুব স্বাভাবিকভাবেই বলল কাজটি কে করেছে?
প্রহরী ভদ্রলোকের দিকে ইশারা করে বলল, ইনিই করেছেন।
আপনি কি করে এ কাজ করতে পারলেন? দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না?....... থেকে শুরু করে টানা এক মিনিট মেয়েটি ভদ্রলোককে বকে দিল। এবং শেষে বলল, আরে আমি একজন মা। আমি বুঝি চোখের সামনে ছেলেকে মরতে দেখা কতটুকু কষ্টের! এই বলে তিনি সবার সামনে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলেন!!
বুঝলাম মায়েরা বড় আবেগী জাতী।।।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ