বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রথম নকশা-প্রণেতা হিসাবে পটুয়া কামরুল হাসানের নাম প্রচলিত থাকলেও মুলতঃ লাল-সবুজের মূল পতাকার নকশা করেন কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শিব নারায়ন দাশ।
সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা। পরে মানচিত্রটি সরিয়ে পতাকাটি পরিমার্জন করায় কামরুল হাসানকেই নকশাকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারা বাংলায় কিন্তু পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে শিব নারায়ন দাশের ডিজাইন করা বাংলাদেশের পতাকাই উত্তেলিত হয়েছিলো।
১৯৭২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার শিব নারায়ন দাশের ডিজাইন করা পতাকার মাঝের মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ, ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলেন পটূয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
পতাকা সঠিকভাবে তুলে ধরা জাতির কর্তব্য। মানচিত্র সম্বলিত পতাকাটি আঁকা অনেক কঠিন এবং বিকৃত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সহজ করে পতাকা আঁকার জন্য মানচিত্রটি সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিলো।
৩১টি মন্তব্য
প্রজন্ম ৭১
শ্রদ্ধা জানাই শিব নারায়ন দাশকে। জাতীয় পতাকাকে সন্মান জানানো প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য কর্তব্য। পাকিস্থানের পতাকা উত্তোলন না করে এই পতাকা উত্তোলন করেই পাকিস্থানকে না বলে দিয়েছে বাঙ্গালী ১৯৭১ এর ২৩ মার্চ। এসব হচ্ছে ইতিহাস। সত্যি ইতিহাস সবার জানা প্রয়োজন। ধন্যবাদ এমন পোষ্ট দেয়ার জন্য। বিজয় মাসের শুভেচ্ছা।
মারজানা রুবা
সত্যি ইতিহাস সবার জানা যেমন প্রয়োজন, তেমনি জানানোটা আরও বেশি প্রয়োজন। বিজয় শুভেচ্ছা রইলো।
ব্লগার সজীব
পটুয়া কামরুল হাসানের নাম নিয়ে বুভ্রান্তি দূর হলো। প্রথম পতাকার নকশা প্রনেতার নাম সঠিক ভাবে জানানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। প্রশ্নটি এসেই যায়, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ সারা বাংলায় কার নির্দেশে এই পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো। কোন সেনা অফিসারের নির্দেশে নয় নিশ্চয়ই। ধন্যবাদ আপনাকে।
মারজানা রুবা
জোর করে কোন কিছুই প্রতিষ্টা করা যায়না, প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়ে যাবেই। কারন ইতিহাস যে তার আপন গতিতেই চলে। আপনাকেও ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
শিব নারায়ন দাশ প্রায় বিস্মৃত একটি নাম।
আপনার প্রথম লেখায় এই মহান মানুষটিকে তুলে এনেছেন দেখে আনন্দিত বোধ করছি
স্বাগত আপনি এখানে এই আমাদের মাঝে।
মারজানা রুবা
ইতিহাস যে কথা কয়!
আমিও আনন্দিত বোধ করছি। অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
মামুন
শিব নারায়ণ দাশের প্রতি শ্রদ্ধা রইলো।
লিখাটির জন্য আপনার প্রতিও রইলো হৃদয়ের উষ্ণ ভালোলাগা।
শুভসকাল।
মারজানা রুবা
অনেক ধন্যবাদ ভাই। বিজয় মাসের শুভেচ্ছা রইলো।
শুন্য শুন্যালয়
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন পোস্টের জন্য। এরকম পোস্ট অনেক বেশি বেশি হওয়া প্রয়োজন।
মূল নকশাকারীকেই তার সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত ছিলো বলে মনে করি।
স্বাগতম আপনাকে আপু।
মারজানা রুবা
জীবদ্দশাতেই মূল নকশাকারী হিসাবে তাঁকে মূল্যায়ন করা হোক, তাই চাই।
শুভেচ্ছা রইলো।
মরুভূমির জলদস্যু
বাংলাদেশের পতাকার উপরে বিশাল একটা প্রবন্ধ পড়ে ছিলাম। অনেক কিছু অনেক তথ্য ছিলো সেখানে।
মারজানা রুবা
আপনি আমার লিখাটিও পড়েছেন, এজন্য ধন্যবাদ। বিজয় মাসের শুভেচ্ছা রইলো।
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় স্বাগতম -{@
সত্যি ইতিহাসকে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথম পোষ্টেই জানিয়ে এবং বুঝিয়ে দিলেন যে দেশ নিয়ে যথেষ্ঠ ভাবেন আপনি।
এমন লেখা দিন আরো।
শুভ কামনা।
মারজানা রুবা
ইতিহাস যে কথা কয়!
চেষ্টা করবো। বিজয় মাসের শুভেচ্ছা রইলো।
নওশিন মিশু
ধন্যবাদ আপু …. -{@
মারজানা রুবা
বিজয় মাসের শুভেচ্ছা।
রাতুল_শাহ
উনার কথা আমার জানা ছিলো না।
মারজানা রুবা
আমার লিখা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন, এজন্য আমি আনন্দিত।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
শিব নারায়ন দাশকে শ্রদ্ধা জানাই সাথে পটুয়া কামরুল হাসানকেও তারা আমাদের অহংকার।
মারজানা রুবা
হ্যাঁ, তাঁরা দুজনেই আমাদের অহংকার। ধন্যবাদ আপনাকে।
সঞ্জয় কুমার
সত্যিকারের দেশ প্রেমিকরা স্বীকৃতি চান না ।
তাঁদের দেশ প্রেমের কোন সার্টিফিকেট লাগে না ।
তারা নিরবে নিভৃতে দেশের জন্য কাজ করে জান ।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।
মারজানা রুবা
সত্যিকারের দেশ প্রেমিকরা স্বীকৃতির প্রয়োজনে কাজ করেন না ঠিক বা এজন্য তাঁরা লালায়িতও থাকেন না কিন্তু আমাদের তো উচিত তাঁদের মূল্যায়ন করা।
ধন্যবাদ।
খেয়ালী মেয়ে
সঠিক ইতিহাস সবার জানা দরকার..
আপনেকে ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য..
মারজানা রুবা
ধন্যবাদ আপনাকেও। শুভেচ্ছা রইলো।
সীমান্ত উন্মাদ
দুই জনকেই সেলুট।
মারজানা রুবা
ধন্যবাদ।
সাতকাহন
আপনার পোস্টটি সময়োপযোগী, তবে একটু পিছনে গেলে ভালো করতেন, কিভাবে, কোন প্রেক্ষাপটে পতাকাটি তৈরি হয়েছিলো, এবং এর মূল রূপকার কারা, কে কে জড়িত ছিলেন পতাকা তৈরির মিশনে। আপনাদের অবগতির তুলে ধরছি পতাকা তৈরির পিছনের গল্প।
তৎকালীন রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি লক্ষ্য করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুভব করেছিলেন যে, খুব শীঘ্রই পৃথিবীর মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি দেশ সম্পৃক্ত হতে চলেছে এবং এর জন্য কঠিন লড়াই করতে হবে। এরই সূত্র ধরে ১৯৭০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পল্টন ময়দানে সার্জেন্ট জহুরুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ছাত্রনেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, একটি সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে তুলতে হবে এবং এই সিদ্ধান্ত অনুসারেই বঙ্গবন্ধুর অনুমতিক্রমে ১৫ ফেব্রুয়ারিতে একটি ব্রিগেড গঠন করা হয়েছিলো। এই বাহিনীর নাম দেওয়া হয়েছিলো ‘জয় বাঙলা’। প্রথাগতভাবে তখন এই বাহিনীর জন্য একটি পতাকা তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছিলো। এই পতাকার নকশা কি হবে, তা নিয়ে ছাত্রনেতাদের মধ্যে বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আ স ম আবদুর রব এবং শেখ মণি’র মত ছিলো পতাকার জমিনটা হবে সবুজ রঙের, যা শ্যামল বাঙলার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। শাহজাহান সিরাজ লাল রঙের পক্ষে ছিলেন। কাজী আরেফ পতাকায় ‘বাংলাদেশের মানচিত্র’ যুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। এই আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রনেতা কামরুল আলম খান খসরু কালি-তুলি ও কাপড় জোগাড় করে ফেলেন। ছাত্রনেতাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, পতাকার বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য শিব নারায়ণ দাশ আসেন এবং একটি পতাকা তৈরি করেন। এই পতাকাটি তৈরি হওয়ার পর, তা নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘরে লুকিয়ে রাখা হয়। এই পতাকাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে গৃহীত হয়।
মারজানা রুবা
ধন্যবাদ, প্রেক্ষাপটটি তুলে ধরার জন্য।
মারজানা রুবা
হ্যাঁ, তাঁরাই আমাদের অহংকার। ধন্যবাদ।
স্বপ্ন
কামরুল হাসানের নাম জানতাম। শিব নারায়ন দাশ এর কথা কোথাও নেই।ধন্যবাদ আপনাকে।
মারজানা রুবা
আমার লেখা পড়ে জেনেছেন এজন্য লেখাটা স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করি।
ধন্যবাদ আপনাকে।