জানিনা সবাই আমার সাথে একমত হবে কি না। কিন্তু ব্যক্তিগত কিছু মন্তব্য থাকতেই পারে আমার। ভাবলাম ব্যাপারটি শেয়ার করি।
এখন ডিসেম্বর মাস চলছে। অন্যান্য মাসের চাইতে এই মাস বিভিন্ন দিক দিয়ে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আবার একেক জনের কাছে এ মাসটি একেক রকমের গুরুত্বপূর্ণও হয়ে থাকে। ৭১ সালে এ মাসেই আমরা দেশকে হানাদার মুক্ত করে ছিনিয়ে এনেছি বিজয়, এ মাসেই রয়েছে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এ মাস আবার বছর শেষের মাস। অফিস আদালত কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ মাসে কাজের চাপ অপেক্ষাকৃত একটু বেশীই থাকে। এ মাসে আবার বিয়ে শাদীর ব্যাপারটিও অন্যান্য মাসের চাইতে একটু বেশীই পরিলক্ষিত হয়। সঙ্গীত প্রেমী কিংবা সঙ্গীত শিল্পীদের জন্যও এ মাসটি বেশ অনুকূলে থাকে। শুরু হয় জায়গায় জায়গায় কনসার্ট। কোনও কোনও জায়গায় আয়োজন করা হয় যাত্রা কিংবা যাত্রা নামে অশ্লীল কিছু। আবার এ মাসের শুরুতেই দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরণের ওয়াজ মাহফিল। সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ওয়াজ মাহফিল।
তবে আরও একটি কারনে এক মাসটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনেকরি শুধু গুরুত্বপূর্ণই না মহা গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসেই দেশের প্রায় সব স্কুলেই চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার্থীরা থাকে পড়াশুনায় ব্যস্ত। কখনও কখনও রাত জেগেও পড়াশুনা করতে হয় তাদের। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্য চলে প্রাণপণ চেষ্টা। কিন্তু এ মাসে তাদের পড়াশুনার ব্যাঘাতও কিন্তু কম হয় না। এ মাসে চারদিকে যে হারে মাইক কিংবা স্পিকার বাজে তাতে তাদের পড়াশুনার মনোযোগের বেশ ব্যাঘাত ঘটে। শহরের চেয়ে বিশেষকরে মফঃস্বল কিংবা গ্রামে চলে ওয়াজ মাহফিল কিংবা গান-বাজনা, বিভিন্ন জায়গায় ১৫ই ডিসেম্বর সন্ধ্যা হতে সারারাত পর্যন্ত চলে উচ্চশব্দে গান। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনার প্রতি একাগ্র হওয়াটি বেশ দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়ে। তবে আমি ওয়াজ মাহফিল এবং গান-বাজনার পক্ষে বিপক্ষে কিছুই বলতে চাই না। আমি বলতে চাই সুন্দর নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে বর্ণিত কাজগুলো সম্পাদন করা হলে পরীক্ষার্থীরা বেশ উপকৃত হবে।
একসময় আমিও তো পরীক্ষার্থী ছিলাম!
১৮টি মন্তব্য
এস.জেড বাবু
চমৎকার একটি ভাবনা কাজ করেছে আপনার ।
যুক্তিসংগত বলেছেন।
কাকে বাধা দিবেন- কেউ বলবে ওয়াজ তো দুই দিন, দুই দিনে কি আর হবে
কেউ বলবে যাত্রা তো একদিনে শেষ, একদিনের জন্য কেউ ফেল করবে না।
অতএব বিষয়টি উপজেলা কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে, আশানুরূপ ফল পাওয়া যেত।
মূলত এইসব বৃহৎ আয়োজন নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা উনাদের আছে।
রুমন আশরাফ
একসময় সিলেটে ছিলাম। সিলেট পুণ্যভূমি নামেই পরিচিত। সেই সিলেটে দেখতাম শীতকালে যাত্রা হতে। ঠিক যাত্রা নয়, চলতো অশ্লীল নৃত্য। কখনও কখনও প্রশাসনের লোক এসে বন্ধ করে দিত। কিন্তু তার কিছুদিন পর আবারও শুরু হতো। ওখানে চলতো জুয়া খেলা আর নেশা পান করা। বাজতো উচ্চ শব্দে গান। খুব বিরক্ত থাকতাম। ওখানে এসব শুধু শীতকালেই নয়, অন্যান্য ঋতুতেও চলতো এমন কর্মকাণ্ড।
এস.জেড বাবু
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ভাবনা মূল্যবান।
শুভ সকাল
জিসান শা ইকরাম
ভালো একটি বিষয় উপস্থাপন করলেন।
ওয়াজ মাহফিল, গান বাজনার মাইকের শব্দ একই শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে,
এটি যে একধরনের অন্যায় সে সচেতনতা নেই আমাদের।
শুভ কামনা।
রুমন আশরাফ
ধন্যবাদ ভাই।
নুর হোসেন
বাংলাদেশ সুখী কোন দেশ নয় গার্বেজ আর অনিয়মের দেশ!
সুখী কোন দেশ হলে মাইক ব্যবহারে শব্দ দুষণের দায়ে অনেকের জেল জরিমানা হতো।
রুমন আশরাফ
ঠিক বলেছেন ভাই। সারারাত ধরে উচ্চশব্দে এমন অনুষ্ঠান কাম্য নয়।
মোঃ মজিবর রহমান
সব হই আইন হইনা আবার প্রয়োগ হইনা। আবার ধর্ম নিয়ে বাধে কান্ড। আমরা ধর্ম ভিরু মিথ্যা হলেও তাই খুব নস্টাল জিয়ায় চিপায় পড়ছি।
রুমন আশরাফ
ঠিক।
সুরাইয়া পারভিন
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ওয়াজ মাহফিল, গান বাজনার মাইকের থেকে সৃষ্ট শব্দ, শব্দ দূষণ করে। এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া আবশ্যক।
রুমন আশরাফ
একদম ঠিক। সকলেরই সচেতন হওয়া আবশ্যক।
নৃ মাসুদ রানা
আসলেই সত্যি কথা
রুমন আশরাফ
সহমতের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
মনির হোসেন মমি
একমত তবে যে হারে মানবিকতা আমরা হারাচ্ছি তাতে কে শুনে কার কথা কে বুঝে কার কি ব্যাথা। চমৎকার অনুভুতি।
রুমন আশরাফ
ঠিক বলেছেন মনির ভাই। ধন্যবাদ।
তৌহিদ
ভালো বলেছেন ভাই। আপনার সাথে একমত পোষণ করছি। আমার বাসার একদিকে পিকনিকের মাইক, অন্যদিকে ওয়াজের মাইক বাজছে। অথচ মামাতো বোনের কাক পরীক্ষা সে পড়তে পারছেনা।
দেখার কেউ নেই।
তৌহিদ
কাল পরীক্ষা
রুমন আশরাফ
সাধারণ অবস্থায় রাতের বেলা এমনিতেই চারদিক সুনসান থাকে। তার মধ্যে আবার শীতকাল। আর এই সময়ে শব্দগুলো কানে লাগে খুব। ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই।