ISIS / ISIL / Waffen / @albaraka_news

গত পর্বে(বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-8) বলছিলাম যে মার্শাল তাঁর বইতে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তাঁর উত্তর দিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি প্রিন্স বানদার, এবং সৌদি দুই গোয়েন্দা ওমর আল বায়োমি ও ওসামা বাসনান যাদের মাধ্যেমে হামলাকারীদের সাথে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন, এবং মার্শাল এ সত্যও প্রকাশ করতে সমর্থ হয়ে ছিলেন যে কিভাবে এদের ব্যাবহার করে বিশ্বরাজনীতির খোলনচে পাল্টে দেওয়া এই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিলেন মার্কিন ক্ষমতাবানদের স্বার্থে। এফবিআই কংগ্রেসের যৌথ তদন্ত দলের সমন সত্যেও এসব ব্যাপারে কোন সাক্ষ্য দেয় নি। আর দিব্যলোকের মত পরিস্কার এই সব সত্য প্রকাশের পর কিভাবে হত্যা করা হল মার্শাল কে? চলুন মিলাই সুত্র এবং বাকি উত্তর খুঁজি পর্ব ৫ এ।

Omor al bayomiOsama basnanছবিঃ দুই সৌদি গোয়েন্দা ওমর আল বায়োমি ও ওসামা বাসনান।

পর্ব পাঁচঃ শেকড় অধ্যায়ের শেষ পর্ব।

মার্শাল তাঁর বইতে আরো বলেছেনঃ এতো বড় একটা ঘটনা, যেখানে বিমানকে মিসাইলে পরিনত করা হয়েছে যেখানে ফিলিপ জেলিকো নেতৃত্বাধীন নাইম-ইলাভেন কমিশন কোন পাইলটের সাক্ষ্য নেয়নি!! বিমান চালনায় ২০ বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে সিআইএ’র সাবেক পাইলট মার্শালের যুক্তি হল, বিভিন্ন প্রজন্মের বোয়িং ওড়ানোর অভিজ্ঞতা না থাকলে অমন নিখুঁত টার্গেট নিয়ে লক্ষ্য বস্তুতে বিমান দিয়ে আঘাত করা সম্ভব নয়। তাই প্রশিক্ষন কাজে এক ইঞ্জিনের ছোট্ট বিমান নয় বরং চার ইঞ্জিনের বোয়িং চালনোর প্রশিক্ষনই পেয়েছে হামলাকারীরা। আর এই প্রশিক্ষন দিয়েছে সৌদি আরব।

মার্শাল তাঁর নাইন-ইলাভেন ট্রেজিডির গবেষণায় প্রমান পেয়েছেন যে, নাইন-ইলাভেনের ছয়মাস আগে ছিনতাই হওয়া চারটি বিমানের ছিনতাইকারী চার পাইলট মোহাম্মদ আতা, হানি হানজৌর, জিয়াদ জারাহ এবং মারওয়ান আল সেহহি যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাসে যান। সেখানকার পিনাল এয়ার পার্কটি তখন ব্যাবহার করত সিআইএ এবং একটি প্রাইভেট মার্সেনারি( ভাড়াটে সৈনিক) কোম্পানি ব্লাক ওয়াটার(এই ব্লাক ওয়াটার বহুকাল আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অন্যায় যুদ্ধে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছে)। সেই এয়ার পার্কে তখন বোয়িং ৭৫৭ এবং ৭৪৭ মডেলের বেশ কিছু বিমান ওঠানামা করত। একই সময় সেখানে যাতায়াত ছিল সদ্য সৌদি এভিয়েশান প্রধান হওয়া প্রিন্স তুর্কী আল ফয়সালের। এক বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত লাস ভেগাসের পিনাল এয়ার পার্কে তাদের রহস্যময় যাতায়াত ছিল।

১৯ সেপ্টেম্বর লাসভেগাস থেকে ৪৬ জন সৌদি নাগরিক সহ ৬৯জন যাত্রী নিয়ে জেনেভার উদ্দেসশ্যে ছেড়ে যায় একটি ডিসি এইট। ২০ সেপ্টেম্বর ১৮ জন সৌদি নাগরিক নিয়ে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় আরও একটি বোয়িং ৭২৭। ২৩ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৪ জন যাত্রী নিয়ে প্যারিসের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায় একটি জাম্বো লকহেড L-101 বিমান। বিমানটির যাত্রীদের একজন ছিলেন সৌদি গোয়েন্দা প্রধান তুর্কি। অথচ ঐ বিমানের যাত্রী ধারনক্ষমতা ছিল চারশ। কেবল লাসভেগাস নয়। প্রায় একই সময়ে নিউ ইয়র্ক বোস্টন আর ওয়াশিংটন থেকেও সৌদি হাই-অফিশিয়ালদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যায় আরও তিনটি চাটার্ড বিমান। ২০০১ সালের বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে তুর্কির এই উপস্থিতিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে মার্শাল তাঁর বইতে আরো লিখেছেনঃ দীর্ঘ ২৪ বছর সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে কাজ করার পর ২০০১ সালের আগস্টে রহস্যজনকভাবে তাকে সৌদি এভিয়েশন প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রকারান্তরে যুক্তরাষ্ট্রে তার অবাধ বিচরনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এভিয়েশান প্রধান হিসেবে তুর্কির দায়িত্বের জায়গা থেকেই তাঁর পক্ষে সৌদি বোয়িং এবং প্রশিক্ষকদের যুক্তরাষ্ট্রে হাজির করা সহজ ছিল। তাই বলাবাহুল্য যে কারো কোন জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই খুব সহজেই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের সুযোগ পান তুর্কি, গোয়েন্দা এজেন্ট বায়োমি ও বাসনান।

philipছবিঃ দুই সন্তানসহ ফিলিপ মার্শাল।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টে জর্জ বুশ ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে এমন একটি গুরুতর এবং তাঁর ভাষায় “দিবালোকের মত সত্য” প্রকাশ করা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন ফিলিপ মার্শাল। তিনি বলতেন নাইন-ইলাভেনের গোয়েন্দা ব্যর্থতা অথবা ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা নিয়ে তাঁর হাতে আরও কিছু বোমা ফাটানো তথ্য রয়েছে, যা নিয়ে তিনি আরো একটু বই প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। বইটির সম্পাদনার কাজও চলছিল। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে The Big Bamboozle প্রকাশের ঠিক এক বছর পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে ফিলিপ ও তাঁর দুই সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু হলো। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারা’র বাড়ির দরজায় পাওয়া গেল ফিলিপ মার্শালের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ। গুলি বিদ্ধ দুই সন্তানের দেহ পাওয়া যায় বাড়ির ভেতরে। পোষা কুকুরটি পড়েছিল বেডরুমে। তাদের সবার মাথায় একটু করে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত শেষে সান্তা বারবারা পুলিশ জানাল, স্ত্রীর সাথে ব্রেক আপের পর থেকে মানসিক যন্ত্রনায় ভোগা ফিলিপ মার্শাল দুই সন্তানকে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের সাবেক কর্মকর্তা ওয়েইন ম্যাডসেন যিনি ফিলিপ মার্শালের রহস্যজনক মৃত্যুর পর নিজে থেকে ঘটনার তদন্ত করেছেন। তাঁর মতে “ফিলিপের মৃত্যু মোটেই আত্মহত্যা ছিল না, এটা পেশাদার খুনিদের কাজ। এই হত্যাকান্ড কেবল ফিলিপ যা প্রকাশ করেছেন তাঁর জন্য নয় বরং তিনি যা প্রকাশ করেননি তাঁর জন্য”।

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, কংগ্রেসের তদন্ত কমিটির গোপন করা আঠাশ পৃষ্ঠা প্রকাশের দাবিতে রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যদের সমালোচনার মুখে বুশ বিলেছিলেন “ এই তথ্য প্রকাশ পেলে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ মুখ থুবড়ে পড়বে, বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য খর্ব হবে”।(The Newyorker: The Twenty-Eight pages)। যথার্থই বলেছেন প্রেসিডেন্ট বুশ। কারন ঐ আঠাশ পৃষ্ঠা প্রকাশ হওয়া মানে নাইন-ইলাভেন মিথ্যে, লাদেন মিথ্যে, আফগান-ইরাক যুদ্ধ সবই মিথ্যে। কেবল নাইন-ইলাভেন নয়, ইতিহাসের কালপর্বে এমন হাজারো মিথ্যে আর ষড়যন্ত্রের জন্ম দিয়েছে সিআইএ তথা যুক্তরাষ্ট্র। যুগে যুগে “ক্লাসিফায়েড” শব্দের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়েছে ষড়যন্ত্রের সেইসব দলিল। ফিলিপ মার্শাল কিংবা বব উডওয়ার্ড এর মত সত্যানুসন্ধানী যেসব মানুষ ষড়যন্ত্রের প্রকৃত সত্যেকে মানুষের মুখোমুখি ডাড় করিয়েছেন তাদের কাজকে “কন্সপিরেন্সি থিঊরি”র নামে অগ্রাহ্য করবার চমৎকার এক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা-সেও যুক্তরাষ্ট্রেরই আবিষ্কার।

মনে আছে নিশ্চই ভূমিকা এবং পর্ব এক এ আপনাদের বলেছিলাম, আফগান মুক্তি আন্দলনের নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের কথা। একটা সময় ছিল যখন আফগানিস্তানের মানষের ঘরের দেয়াল থেকে শুরু করে গাড়ির ড্যাশ-বোর্ড পর্যন্ত সর্বত্র ঝুলানো থাকত আহমেদ শাহ মাসুদের ছবি। তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে লাখো মানুষের ভিড় সামলাতে বিশাল স্টেডিয়ামে শোকসভার আয়োজন করতে হয়েছিল। এমন আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তার মধ্যদিয়ে একজন জাতীয় বীরে পরিনত হওয়াটাই মাসেদের জন্য কাল হয়েছিল। কারন তিনি বেঁচে থাকলে তাঁর মাতৃভূমিকে যুক্তরাষ্ট্রের কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের রনাঙ্গনে পরিনত করা সহজ হতো না। এবং তালেবান বিরোধী যুদ্ধে নিশ্চিত বিজয়ের পর মার্কিনপন্থী একটি পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় বসানো যেত না। এই দুটি সুত্রের আড়ালেই লুকিয়ে আছে মাসুদ হত্যার রহস্য। আগেই বলেছি, তালেবান জঙ্গিদের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছিল নরদান এলায়েন্স। তার উপর আফগানিস্তানে সুন্নি জঙ্গিদের উত্থানের অজুহাতে সম্ভাব্য মার্কিন প্রভাব ঠেকাতে মরিয়া ইরান-রাশিয়া উভয়ের কাছ থেকেই অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য পাচ্ছিলেন মাসুদ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের “আঞ্চলিক অস্ত্র বাণিজ্য” বিষয়ক একটি রিপোর্ট বলছে-১৯৯৮ সালে ইরান থেকে আসা বিপুল অস্ত্রের একটি শিপমেন্ট আটক হয় কিরগিস্তানে। অস্ত্রগুলো ছিল রাশিয়ার তৈরি। আর তা যাচ্ছিল নরাদান এলায়েন্সের কাছে। অন্যদিকে, তালেবান এবং আলকায়েদাকে মদত দিয়ে প্রকারন্তরে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রনভূমি ও তাঁর ছায়া শত্রু নির্মাণের মহাযজ্ঞটা সারছিল পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। মাসুদের মৃত্যুর সাথে সিআইএ’র সরাসরি জড়িত থাকার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি ঠিকই। তবে নব্বই দশক জুড়ে আফগানিস্তানে রুশ বিরোধী লড়াইয়ে তালেবান, আলকায়দা, আর আইএসআই’এর প্রতি যুক্তিরাষ্ট্রের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সমর্থন আর মদত দেওয়ার কথা কারো অজানা নয়। মাসুদ হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তে উঠে এসেছে আইএসআই’এর নাম। দুই হামলাকারিকে ভূয়া পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের প্রয়োজনীয় সব সাহায্য এসেছিল আইএসআই থেকে। ২০০১ সালের আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে আইএসআই প্রধান লে. জেনারেল মাহমুদ আহমেদের ঘন ঘন ওয়াশিংটন সফর নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। মাসুদ হত্যাকান্ডের দুদিন পর অর্থাৎ নাইন-ইলাভেন ট্র্যাজেডির দিনটিতেও ওয়াশিংটনেই ছিলেন স্বয়ং আইএসআই প্রধান। বৈঠক করেছেন সিআইএ প্রধান ও স্টেট ডিপার্টমেন্টএর কর্তাব্যাক্তিদের সাথে। সেদিনই তাঁর উপস্থিতিকে নেহাত “কাকতালীয় নয়” বলে মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেসের তদন্ত কমিশনও।

এখন হয়ত আপনাদের সবার মনেই প্রশ্ন ওঠেছে নিজ দেশের তিন হাজার নিরিহ মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর বিনিময়ে কি পেল যুক্তরাষ্ট্র? এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এক্কেবারে সহজ আর তা হলঃ অন্তহীন যুদ্ধ আর নতুন শতকের নয়া আধিপত্যবাদ। যা পাল্টে দিয়েছে বিশ্ব রাজনীতির খোলনচে। এই একটা মাত্র ঘটনাকে পুঁজি করে তৈরি করা নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বা নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় ওলট-পালট হয়ে গেল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সকল হিসেব নিকাশ। যা আগামী কয়েক দশকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আধিপত্যবাদের ফসল ঘরে তোলার এক মোক্ষম সুযোগ এনে দিয়েছে। ভবিষ্যতের অন্তহীন সময়ের জন্য নাইন-ইলাভেন যেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক সোনার ডিম পাড়া হাঁস। তারই নজির পাওয়া গেল ঠিক নাইন-ইলাভেনের পরদিন।

১২ সেপ্টেম্বর রাতেই জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষনে নতুন যুদ্ধের ইঙ্গিত দিয়ে প্রেসিডেন্ট বুশ বলেছেনঃ “The deliberate and deadly attacks which were carried out yesterday against our country were more than acts of terror. They were acts of war”. । সে রাতেই সিআইএ প্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী আর পেন্টাগনের সামরিক কর্মকর্তাদের আফগান যুদ্ধের ছক প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন প্রেসিডেন্ট।

যার চূড়ান্ত ঘোষনা আসে ২০ সেপ্টম্বর রাত ৯ টায়। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষনে বুশ বলেনঃ “ Pursue nations that provide aid or safe haven to terrorism. Every nation in every region now has a decision to make: Either you are with us or you are with the terrorist. We will not tire, we will not falter and we will not fail”. । সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে নামের অন্তহীন এক অন্যায় যুদ্ধের সূচনা সেখান থেকেই। যে যুদ্ধের নির্দিষ্ট কোন ভূখন্ড নেই, নেই কোন সীমা-পরিসীমা।

যে যুদ্ধ আজ পাক-আফগান সীমান্তে তো কাল ইয়েমেনের প্রত্যন্ত কোন দরিদ্র জনপদে। যখন তখন যে কোথাও শুরু হতে পারে অনির্দিষ্ট এই যুদ্ধ, আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ।

 imagesছবিঃ আফগানিস্তানের গনকবর।

cluster bombছবিঃ মার্কিন বিমান হামলায় ব্যবহার করা নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমায় ঝলসে যাওয়া অবুঝ শিশু মায়ের কোলে।

যেমন ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আক্রান্ত হলেন আফগানিস্তানের তোরাবোরো’র পাহাড়ি জনপদের দরিদ্র মানুষ। একদিকে তারা আল কায়দা তথা তালেবান নির্মম শাসনের শিকার অন্যদিকে মার্কিন বোমা’র লক্ষ্যবস্তু। ৭ ডিসেম্বর মাত্র দুমাসের মধ্যে তালেবান শাসনের পতন আর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মাসুদমুক্ত আফগানিস্তানে রচিত দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন দখলদারিত্ব। নাইন-ইলাভেনের মহাষড়যন্ত্রের জটিল সমিকরন যারা বোঝেন তারা জানেন তালেবান বা আল কায়দা খতম করা নয় বরং দখলদারিত্বের নামে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষমতাবলয়ের আধিপত্যই যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য। আর দীর্ঘমেয়াদি সেই লক্ষ্যের পথ ধরে ঠিক দু’বছরের মাথায় দুনিয়ার ঘাড়ে সওয়ার হয় আরও একটি রনাঙ্গন-ইরাক। এটা নিশ্চই বলার অপেক্ষা রাখেনা যে নাইন-ইলাভেনের বহুমূখী ষড়যন্ত্রের পথ ধরেই রচিত হয়েছে আল-কায়দা এবং আজকের হালের আইএস-এর-জন্ম-ঠিকুজি।

 

এরি সাথে সমাপ্ত হল নাইন-ইলাভেনের শেকড় অধ্যায়ের শেষ পর্ব। এতো কেবল সুচনা গেল, আগামী পর্বগুলোতে আমরা সবাই মিলে সুত্র মিলাবোঃ নাইন-ইলাভেনের ষড়যন্ত্রের ফসল ঘরে তুলতে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে কি কি ইতিহাস ধিকৃত অমানবিক কান্ড ঘটিয়েছিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরব সহ তাদের দোসর পাকিস্তান। জানবো,  আফগানিস্তান যুদ্ধের ঘটনার অন্তরালের ঘটনাগুলো একটার পর একটা সুত্র মিলিয়ে। মিলাবো তথ্য সুত্র পর্বঃ ৬ এ।

 

সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, চোখ-কান খোলা রাখুন, নিরাপদে থাকুন

।।শুভকামনা নিরন্তর

আগের পর্বগুলোঃ

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। ভূমিকা পর্ব।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-১।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-২।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৩

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-8।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ