করোনা নিয়ে ফেসবুকে কিছু এওয়ারনেস গ্রুপ তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন অনেক ইনভাইটেশন আসছে এসব গ্রুপ থেকে। আবার জেলা কিংবা বিভাগওয়ারী গ্রুপও হচ্ছে আলাদা করে। গ্রুপগুলিতে অনেকের স্ট্যাটাস দেখে সত্যি মর্মাহত হচ্ছি। আমি স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করার ফলে বুঝতে পারছি, গ্রুপগুলিতে আপনাদের অনেকেরই দেয়া ইনফরমেশনে কিছু ঘাটতি আছে যা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

এসব গ্রুপ ছাড়াও অনেকেই আবার নিজেদের ওয়ালে নামধাম লিখে একজন ভলান্টিয়ার হিসেবে এই দূর্যোগের মূহুর্তে যেকোন সময় সাহায্যের জন্য পাশে থাকবেন বলে ঘোষণা দিচ্ছেন। ভাই, দরকার নেই এসবের। আপনারা যে মহত্ব দেখাচ্ছেন সেটাকে সম্মান রেখেই বলছি বাস্তবতা খুব কঠিন। আবেগ দিয়ে নয়, বুদ্ধি দিয়ে এসব বিবেচনা করবেন। তা না হলে ফেসবুকে শুধুমাত্র একজন মামুলি এটেনশন সীকার হিসেবেই আপনারা পরিচিতি পাবেন।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির পাশে আপনি যাওয়া মানেই আপনার/ আপনাদের পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলা। তারমানে পক্ষান্তরে সমাজের অন্যান্যদের উপরেও এর ইফেক্ট আসবে সেটাও আপনাদের ভাবতে হবে। করোনা আক্রান্তদের পরিচর্যার জন্য ট্রেইন্ড মানুষ যারা আছেন তাদেরকেই সে কাজ করতে দিন। আপনারা সামাজিকভাবে এওয়ারনেসের কাজ করলেই অনেক উপকার হবে।

ফেসবুকে অনেক আগে থেকেই একটা ট্রেন্ড চালু আছে আমাদের। যে কোন দূর্যোগেই বিভিন্ন গ্রুপ তৈরী হয় ভালোর উদ্দেশ্যে। হাজার, লক্ষ মানুষ যখন সেখানে এড হন। এরপরে সে দূর্যোগ কেটে গেলে পরবর্তীতে কিছু সুবিধাবাদী মানুষ সেসব গ্রুপের নাম পরিবর্তন করে অন্যনাম দিয়ে গ্রুপ পরিচালনা করে যা অনৈতিক এবং কাম্য নয়। আর আমাদের এক করোনা নিয়ে এত এত গ্রুপের দরকার কি? সম্মিলিতভাবে একটা গ্রুপ করলেইতো হয়ে যেত।

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই করোনা নিয়েও ফেসবুকে আমরা এক হতে পারলামনা! জেলা, বিভাগওয়ারী বিভক্ত হয়ে গেলাম। অথচ গ্রুপের এসব খবর অনলাইন মিডিয়াতে, পত্রিকায় অহরই আপডেট হচ্ছে কিন্তু। তাই আমি অন্ততপক্ষে আলাদা আলাদা গ্রুপ করার যৌক্তিকতা খুঁজে পেলামনা। ফেসবুকে অনেকেরই এভাবে আলাদা গ্রুপ ওপেন করার পিছনে আসল উদ্দেশ্য কি তা করোনা থেকে উত্তরণের পরেই বোঝা যাবে।

যারা নিজেদের ভলান্টিয়ার ঘোষণা করছেন তারা আপনার বাড়ির আশেপাশেই সচেতনতামূলক কাজ করুন। এসবই এখন সবার প্রয়োজন। করোনা এখন জাতীয় দূর্যোগ আমাদের। তাই এসব এওয়ারনেস গ্রুপে যারা এক্টিভ তাদের কাছে অনুরোধ- শুধুমাত্র ফেসবুকে সীমাবদ্ধ না থেকে আপনার আশেপাশের মানুষদেরকেও সচেতনতা বৃদ্ধিতে তৎপর হোন।

করোনা সম্পর্কিত গ্রুপগুলি নিয়ে পরবর্তীতে উল্টাপাল্টা কিছু এমনটা হবেনা সেটা এখনই বলতে পারছিনা। তাই সবচেয়ে ভালো হবে দূর্যোগ কেটে গেলে এডমিনগণ গ্রুপগুলি ডিএক্টিভ করে দেবেন এবং যারা সদস্য এড আছেন তারা নিজেরাই লীভ নিয়ে নেবেন। যদি এরকমটা না হয় তাহলে আপনাদের সে মহৎ উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং এটাই সত্যি। তখন বাঁশ খাবার জন্যে রেডি থাকুন।

0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ