গতকাল আমার নতুন প্রযেক্টে বসে আছি । এটা বেশ নির্জন এলাকায় । বিদ্যুত নেই এমনকি আশেপাশে কোন চায়ের দোকান ও নেই ।
কিন্তু এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার মত ।
যা হোক এবার মূল প্রসঙ্গে চলে আসি । আনুমানিক দুপুর বারটার দিকে তিনজন টুপি পানজাবী পরা, মুখে দাঁড়িওয়ালা লোক আসলেন । লেবার মিস্ত্রীদের সাথে কথা বলে আমার দিকে আসলেন ।
প্রথমে একজন আমার সাথে কথা বলতে আসলেন । কিছুটা সৌজন্যতা বিনিময়ের পর , বুঝলাম উনি ওনাদের এতিমখানার জন্য সাহায্যে নিতে এসেছেন । ঠিকআছে আপনি রসিদ বের করুন আমি আমার সামর্থ্য মত টাকা দিচ্ছি । (আমি আগেই খেয়াল করেছি উনাদের কাছে টাকা প্রদানের কোন রশিদ নেই , আমার কাছে আসার আগে ওনারা মিস্ত্রীদের কাছ থেকে তুলেছেন কোন রশিদ প্রদান করেন নি)
আসলে দাদাভাই আমরা খুবই ব্যাস্ত , দ্রুত আসতে গিয়ে ভুলে আনতে পারিনি । আপনি খুঁশি মনে যা দিবেন আমাদের চলবে ।
আমি চরমভাবে দুঃখিত হুজুর আমি বিনা রশিদে ভাল কোন কাজে টাকা দিই না । কারণ বিনা রশিদে টাকা দেয়া এবং নেয়া আমার কাছে অবৈধ মনে হয় । একমাত্র ঘুষের বা মাস্তানদের চাঁদার টাকা ছাড়া বিনা রশিদে আমি টাকা দিই না ।
আমি যেহেতু আপনাদের চা খাওয়াতে পারিনি তাই তিনজনকে চা খাওয়া বাবদ পনের টাকা দিতে পারি ।
আপনি আপনার সাধ্যমত দিতে পারেন আমাদের কোন আপত্তি নেই ।
আচ্ছা আপনাদের এতিমখানা টা কোথায় ?
এই তো আপনার প্রযেক্ট থেকে একটু দূরে । এই পথে একটু সামনে এগুলেই পাবেন ।
ঠিকানা টা দিলে ভাল হত । আমদের মালিক খুব ভাল মানুষ তিনি নিজেই একটা মাদ্রাসা চালান , একদিন গিয়ে ঘুরে আসতাম ।
ঠিকআছে আমরা আরেদিন এসে কথা বলব ।
তাঁরা আর কথা বাড়ালো না আমিও পনের টাকা দিয়ে বিদায় করলাম ।
আমি প্রায় শতভাগ নিশ্চিত এরা এতিমখানার নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাবসা করছে ।
দান করুন তবে সেটা যেন অপাত্রে না হয় ।
১৫টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
ধর্মকে এরা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে।
এদের হাতে ধর্ম পরে দুর্নাম হয় ধর্মের।
এমন উদহারন অনেক আছে।
সঞ্জয় কুমার
সহমত ।
মামুন
আপনার লিখাটি পড়লাম।
তবে সব সময় কিন্তু খোজ নেবার স্কোপ থাকে না, দান টি অপাত্রে গেলো কিনা।
দাতার মনের গোপন ইচ্ছেটাই এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। গ্রহনকারীর নেগেটিভ কর্মকান্ড দাতার পক্ষে জানাটা অতোটা জরুরী অনেকেই মনে করেন না।
সুন্দর লিখাটিতে ভালো লাগা রেখে গেলাম।
সঞ্জয় কুমার
অর্থের সঠিক মূল্যায়ন হল তাঁকে সঠিক উপায়ে খরচ করা ।অনেকক্ষেত্রে উপার্জনের চেয়ে খরচ করা বেশী কঠিন ।
তেমনি দান করার সফলতা নির্ভর করে যোগ্য লোককে দান করার মাধ্যমে ।
আমরা একটু সচেতন হলেই ভন্ডদের ভন্ডামী বন্ধ হবে ।
ধন্যবাদ ভাল থাকবেন ।
হৃদয়ের স্পন্দন
এরকম ব্যাবসা অহরহই হচ্ছে, শুধু দাড়ি টুপি নবীর সুন্নত রেখে নয়, অন্যভাবেও হচ্ছে
সঞ্জয় কুমার
হ্যা ভাই দাঁড়ি টুপি হল মানুষের কাছ থেকে ধর্মীয় বিশ্বাসযোগ্যতা আর ধর্ম ভীরু মানুষকে ইমোশোনালি ব্লাকমেইল করার পদ্ধতি ।
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ।
মোঃ মজিবর রহমান
ধন্যবাদ সঞ্চয় দা।
আমাদের দেশে নয় সারা বিশ্বে কেন ধর্মবিদরা অন্যায় করলেও সাধারণ মানুষ তাদের পক্ষেই থাকে।
১৯৭১সালে ফাকিদের নারী নির্যাতনকে তারা হাদিস দিয়ে জায়েজ করে সাধারণ মানুষকে বঝাতে সক্ষম হয়েছে।
লখ্য করলে দেখা জায় সব ধরমেই এরকম বক ধার্মিক আছে।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
সঞ্জয় কুমার
একদম সঠিক কথা বলেছেন । যুগে যুগে এইসব বক ধার্মিক রাই ধর্মের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধর্মহীনরাই ধর্ম ব্যাবসা করে তবে দান করার ক্ষেত্রে চোখ কান বন্ধ করেই করা ভালো।কেননা দান করাব পর যদি আফসোস করেন তবে সব দান বিফলে যাবে।ভাল লেগেছে। -{@
সঞ্জয় কুমার
একটু দ্বিমত আছে আপনার মন্তব্যের সাথে । চোখ কান বন্ধ করে দান করা বন্ধ না হলে, এদের মত ভন্ড দের ব্যাবসা ও বন্ধ হবে না । ।
আমি কিন্তু চাইছিলাম তাঁদের এতিম খানায় বড় অঙ্কের সাহায্য করতে । এ ব্যাপারে আমাদের কোম্পানির মালিক খুবই সদয় । । কিন্তু তাঁরা ব্যাপারটা এড়িয়ে গেল ।
আমার কষ্টে অর্জিত টাকা আমি কোন ভন্ড কে দিতে ইচ্ছুক নই । প্রয়োজন হলে এতিমখানা বা যে কোন সাহায্য মূলক কাজে সরাসরি টাকা না দিয়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় পণ্য দেয়া আমার কাছে বেশী যুক্তিযুক্ত মনে হয় ।
এমন ভন্ড সব ধর্মেই আছে ।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য ।
শুন্য শুন্যালয়
আমি হইলে এক টাকাও দিতাম না। ছোট ছোট এতিম বাচ্চাদের ভিক্ষা করতে শেখায় এরা, আবার মুখে ধর্মের বুলি।
সঞ্জয় কুমার
সেটাই মনেহয় বেশী ভাল হত ।
আবিদ রোজীনা
কতভাবেই না প্রতারনা করে থাকে মানুষ।
সঞ্জয় কুমার
হুম ঠিকই বলেছেন ।
মেহেরী তাজ
এদের প্রতিহত করার উপায় কি?