কথায় বলে মনে না চাইলে কিছু করতে নেই। নয়তো স্বেচ্ছায় বিপদ এসে ঘাড়ে নাচবে। কথা কিন্তু হাড়ে হাড়ে সত্য। সেদিন বৃহস্পতিবার ঘুম ভেঙ্গেছে সকাল ১১:৩০ মিনিটে তাও কিনা ফোনের রিংটোন বাজার শব্দে। যা হোক উঠে ফ্রেশ হয়ে এক মগ আদা নুন লেবু চা খেলাম।   মেয়ে নানু বাড়ি গেছে তাকে আনতে যাবে মেয়ের বাবা। কিছু দিন হলো আমার নাকফুল কোথাও পড়ে গেছে। যেহেতু সে মেয়েকে নিতে যাবে আর আমি যে দোকান থেকে স্বর্ণের জিনিস নিই সেটা আমার বাবার বাড়ি যাবার পথে।

 

আমি স্বর্ণকারকে ফোন দিয়ে বললাম একটা নাকফুল দিতে। জানতে চাইলাম নীল পাথরের নাকফুল আছে কি না! উনি বললেন নীল পাথর নেই তবে আরো অন্য পাথরের নাকফুল আছে। আমি বললাম ম্যাসেঞ্জারে ছবি দেন। আমি দেখি কোনটা ভালো লাগে। উনি বললেন আপা ম্যাসেঞ্জার বুঝতে পারবেন তো! আচ্ছা দিচ্ছি

 

ওমা সবগুলোই তো সুন্দর! সবগুলোই চকচক করছে। আমার তো লাগবে একটা এতো গুলো নাকফুলের মধ্যে ছবি দেখে একটা সিলেক্ট করা ডিফিকাল্ট। উনাকে বলতেই বললেন আপা আপনি আসেন। দেখে শুনে নিয়ে যান। মেয়ের বাবা বললো তাহলে তুমিও চলো

 

চা খাওয়ার প্রায় ঘন্টা দেড়েক পর লাঞ্চ করি আমি। সেদিন বের হতে ইচ্ছে করছিল না। যাবো, যাবো না করে আর রান্না করলাম না। গেলে তো বাড়িতেই খাবো‌। যেমন ছিলাম তেমন ই শুধু বোরখা পরে বেড়িয়ে পড়লাম। আমাদের বাড়ির পথে যে রাস্তা সেটা খুব খারাপ তাই সে ঠিক করলো অন্য পথে যাবে। আমার খুব বিরক্ত লাগছিল। বললাম যা হয় হোক এই রোডেই চলো। ঘুরে ঘুরে যেতে অনেক সময় লাগবে। সে শুনবেই না, শুনলোও না। প্রায় কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর রাস্তায় বসে থাকা একজন বললেন এ পথে যাওয়া যাবে না। রাস্তায় এক্সিডেন্ট হয়েছে

 

চাইলে সে ওখান থেকে ফিরে সোজা পথে আসতে পারতো কিন্তু না এলো না অন্যপথ নিলো। আমার মেজাজ আরো বিগড়ে গেল কিন্তু কিছু বললাম না।

আবার কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর কাঁচা রাস্তা। পিচ্ছিল কাদাময় রাস্তা কোনো মতে কিছু দূর এগিয়ে দেখি একটা বিয়ের গাড়ি কাদায় আঁটকে গেছে। কি আর করার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি কখন গাড়ি তুলবে কখন পর হয়ে যাবো! ১৫ মিনিটের মত অপেক্ষার পর  কিছুটা দূরে গিয়ে দেখি বাইকে চড়ে বা পায়ে হেঁটে যাওয়ার অবস্থায় নেই রাস্তা।  বললাম হয়েছে তো। খুব ভালো লাগছে এখন তাই না। সে বললো কে জানে এমন হবে! সে আমাকে নেমে দিয়ে কোনো মতে গাড়ি নিয়ে গেলো। আর আমি একে তো খুদা লেগেছে তারপর এই রাস্তা দিয়ে হাঁটলে বিপদ নিশ্চিত। পড়ে গিয়ে কাদায় মাখামাখি হবো। রেগে গজ গজ করতে করতে এগিয়ে চললাম। পড়ে গেলাম না ঠিকই কিন্তু আমার জুতা কাদায় গেঁথে গেলো। অনেক কষ্টে পার হয়ে পাকা রাস্তা দেখে শান্তি পেলাম। আবার কিছু দূর যাওয়ার পর শুনছি ব্রিজ ভেঙে গেছে। সামনে যাওয়া যাবে না। মর জ্বালা আবার অন্য রাস্তা। এমনি করে চলে গেলো দুই আড়াই ঘন্টা। অবশেষে দশ মিনিটের রাস্তা আড়াই ঘন্টায় চলে এলাম। পরে মনে হলো আজ মন সায় দিচ্ছিল না বের হতে তবুও জোর করে বের হয়ে এতো ঝামেলায় পড়তে হলো।

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ