ঝালমুড়ি

Yousuf Rana ৭ নভেম্বর ২০১৩, বৃহস্পতিবার, ০৩:৫৬:৫২পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২০ মন্তব্য

ছোট বোনকে স্কুল থেকে বাসায়
নিয়ে যাচ্ছে লিজা ।ঝালমুড়ি ওয়ালার
দোখান দেখে ছোট বোন বায়না ধরল
ঝালমুড়ি খাবে ।
ঝালমুড়ি ওয়ালার মনে হয় ব্যাবসা বেশ
ভালো । ১০ টাকার
নিচে ঝালমুড়ি বিক্রি করে না ।লিজা ওর
ছোট বোনেক নিয়ে দোকানের
সামনে গেল ।ঝালমুড়ি কিনে বোনকে দিল
।চলে আসতে যাবে এমন সময়
ঝালমুড়ি ওয়ালা লিজার ছোট বোনের
সমবয়সী এক বাচ্চা ছেলেকে ঝাড়ি দিচ্ছে
-ঐ কইলাম না তরে পাঁচ টাকার ঝাল
মুড়ি বেঁচি না ।ঘ্যান ঘ্যান না কইরা ভাগ
কইতাছি
ছেলেটা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল ,ভিক্ষা
টেকাই পাইচি ।আর টেকা নাই ।এই
টেকা দিয়া ঝালমুড়ি খামু ।এট্টু দেন
না ঝালমুড়ি ।
ছেলেটার কথা শুনে লিজার খুব খারাপ
লাগলো ।এই ছেলেটা তার বোনের বয়সী ।
এই বয়সে তার লিখা পড়া করার কথা ।বাবার
আঙ্গুল
ধরে ,বাবা ঝালমুড়ি খাব ,ঝালমুড়ি খাব
বলে বায়না ধরার কথা ।অথচ তাকে পাঁচ
টাকার ঝালমুড়ি খেতে ভিক্ষা করতে হয় ।
ঝালমুড়ি ওয়ালা ছেলেটাকে ধাক্কা দিতে যাচ্
লিজা থামিয়ে দিয়ে ব্যাগ থেকে একটা ১০
টাকার নোট বের করে বলল এই নেন ১০
টাকা ।ওকে ঝালমুড়ি দেন ।
ঝালমুড়ি পেয়ে ছেলেটা মহাখুশি ।
হাসি হাসি মুখ নিয়ে লিজার
দিকে তাকিয়ে আছে ।
লিজা ঝালমুড়ি ওয়ালাকে বলল ,পাঁচ টাকার
ঝালমুড়ি বেঁচলে হয়ত আপনার
ক্ষতি হতো না ।কিন্তু ছেলেটা অনেক
খুশি হত ।দেখেন কেমন হাসতেছে ।মানুষের
হাসিমুখের দাম লাখ টাকার চেয়েও অনেক
বেশি ।
পরদিন ঝালমুড়ি ওয়ালার
দোকানে গিয়ে লিজা অবাক কয়েকটা ছোট
ছোট বাচ্চা খুব মজা করে ঝালমুড়ি খাচ্ছে ।
প্রত্যেকের মুখে হাসি ।
লিজাকে ডেকে ঝালমুড়ি ওয়ালা বলল ,আপা
কে ফ্রী ঝালমুড়ি খাওয়াইতেছি ।ওদের
হাসি মুখ দেখে খুব শান্তি লাগতেছে ।
লিজাও হেসে ফেলল ।ছোট
বোনকে ঝালমুড়ি কিনে দিয়ে চলে যাওয়ার
সময় ঝালমুড়ি ওয়ালা বলল ,আপা এহন
আমি দুই টেকার ঝালমুড়িও বেঁচি ।
লিজা আবারও
হেসে ফেলল ,ঝালমুড়ি ওয়ালাও হাসছে ।
আর হাসছে ঐ ছোট ছোট বাচ্চা গুলো ।
এই হাসি মুখ গুলোর দাম লাখ টাকার
চেয়ে অনেক বেশি ।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ