জানাজা

নাঈমা নাসরিন নিপু ২৮ অক্টোবর ২০১৪, মঙ্গলবার, ০৫:৪৭:১২পূর্বাহ্ন বিবিধ ১৬ মন্তব্য

আমাদের বরিশালের অদূরে চরমোনাই নামক একটা গ্রাম আছে। গ্রামটি মোটামুটি রকম বিখ্যাত। কারন চরমোনাইর পীর সাহেব।পীর সাহেবের বিশাল আস্তানায় সুরম্য অট্রালিকা আর বিত্ত বৈভবের ছড়াছড়ি। এখানে কয়েক হাজার গরীব এতিম ছাত্র পড়াশোনা করে। কি যে পড়াশোনা করে তা আমি বলতে পারবানা। কারন সারা বছর এই ছা্ত্র্ররা হুজুরের রাজনৈতেক আর অর্থনৈতিক কাজেই ব্যস্ত থাকে। হুজুরের সমস্ত মিছিল,মিটিং এ সব ছা্ত্র্রদের থাকা বাধ্যতামূলক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুজুরের জন্য চাঁদা তোলা ও ছা্ত্র্ররা করে। বছরে দুইবার  চরমোনাইর পীর সাহেবের ওরস মাহফিল হয়। এই মাহফিলে কয়েক লক্ষ মানুষ হয়। এত বিপুল মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বাথরুমের ব্যাবস্থা নয়া থকায় এরা মাঠে,ঘাটে,বাস্তায়,উঠোন সবখানে মল ত্যাগ করে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃস্টি করে। এই মাহফিল সমাজের কি কল্যাণ করে তা আমার জানা না থাকলেও আমদের কৃষি জমি যে উর্বর হচ্ছে তা আমি নিশ্চিত। হুজুরের রাজনৈতেক দলের কর্মকাণ্ড খুবই ব্যাপক। যে কোন লোকাল ও আন্তজার্তিক ইস্যুতে হুজুর রাজপথে নেমে আসেন। ডেনমার্কে্র কোন এক ম্যাগাজিনে মহানবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্বক কার্টুন ছাপা হয়েছে ব্যাস হুজুর রাজপথে নেমে গেলেন। মহানবীর সন্মান রক্ষার জন্য সাধারন মানুষের গাড়ী, দোকানপাট ভেঙ্গে ফেললেন।এই রকম সব ইস্যুতেই হুজুর তার হাজার হাজার কর্মী নিয়ে ঝাপিয়ে পরেন। সাধারন মানুষ হুজুরের লোকবল দেখে অবাক হয়ে যায়।এত মানুষ তো আওমীলীগ,বিএনপির জনসভায় হয়না। বলা বাহুল্য এই সব কর্মী মাদ্রাসার গরিব,এতিম ছাত্ররা। হুজুর নির্বাচনে তার নিজের আসনে এক হাজার ভোট ও পায়না।

সম্প্রতি একটা জানাজা নামাজ কে নিয়ে দেশে বিদেশে প্রচুর কথা হছে। জানাজা নামাজটি ছিল সাজাপ্রাপ্ত একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার প্রধান গো আযমের। তার  সেই অনুসারিরা জানাজার ছবি দিয়ে ফেসবুক,টুইটার সব ভরে ফেলেছেন। তাদের দাবি বাংলাদেশের ইতিহাসে কারো জানাজার এত মানুষ হয় নাই। গো আযম মৃত্যুর আগে যেমন অনেক রের্কড গড়েছিলেন তেমনি মৃত্যুর্ পরেও রের্কড গড়ে গেলেন। আমি গো আযমের জানাজায় আরো বেশি মানুষের আশা করেছিলাম। জামায়েত ইসলামের সব কর্মী আসা উচিত ছিল তাদের গুরুর বিদায়ে। সারা বংলাদেশে কোমল মতি শিশু,যুবকদের মগজ ধোলাই করে তারা এত কর্মী বানালো আর গুরুর জানাজায় শুধু এই কয়জন। গো আযমের অনুসারিদের দাবি তাদের গুরু ভাল মানুষ ছিল তাই তার জানাজায় এত মানুষ হয়েছে। কি অদ্ভুত অবাস্তব যুক্তি। যে দলটি একক ভাবে নির্বাচন করে দুইটার বেশী আসন পায় না তাদের নাকি মানুষ ভালবাসে। একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার কাছে,একজন ধর্ষিতা বীরঞনার কাছে,একজন ছেলেহারা শহীদ জননীর কাছে জিঞেস কর তোদের গুরু কেমন মানুষ ছিল। একজন বিবেকবান মানুষ যার হৃদয়ে বাংলাদেশ কথাটি লেখা আছে সে তোদের গুরুর জানাজায় যায় নাই,যেতে পারেনা।

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ