মেলার ছবি পোস্ট দেখে রেজোয়ানা বললো, আপু তোমার পোষ্টে হালিমা আপুর ছবি নেই কেন?

বললাম, - ছবি তোলাই হয়নি! যেগুলো তানিম পাঠিয়েছে সেগুলো ফোনে লোড নিচ্ছে না।

-তুমি কি মানুষ? ছবি তুলবা না।

-না, মানুষ না! অন্যকিছু বলতে পারো! আর পরে আড্ডা পোষ্ট দিবো তো! দেখবা হালিমা আপা সারপ্রাইজড হবেন।

-দেখো, কি হয়? সম্পর্ক হলো সময়ের মতো, সাথে সাথে রাখতে হয়। এমন করতে গিয়ে তিনি যেন আবার মন খারাপ না করেন। রোমান্টিক গল্পের রোমিও জুলিয়েটের অবস্থা পড়োনি। সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে কিন্তু স্যাড স্টোরিতে পরিনত হয়েছে।

কথা ঠিক। এতো করে তিনি ছায়ার মতো থাকলেন অথচ আমার কৃতজ্ঞতাও নেই। আর আড্ডা পোষ্ট লিখতে সময় হয়ে ওঠেনি। তাছাড়া আরজু মুক্তা চলে যাবার পর ইচ্ছে গুলো কেমন মরে গেছে। লেখায় লেখায় আমরা যে আড্ডাবাজি করতাম তা আর নেই। রম্যও লিখতে পারিনা।

কাউকে ভীষণ রকম রাগিয়ে দেবার পর সারপ্রাইজ দিতে ভালোই লাগে। যদিও জানিনা তিনি কতটুকু রেগেছেন কিংবা হয়তো কিছুই মনে করেননি আমিই ভাবছি। ভুল ভাল যেটাই হোক, যেটা ভাববার নয় তার কাছ থেকে ততটুকুই পাওয়া হয়ে গেছে।

স্কুলের ‘বাটুল বন্ধু‘ বিকেল থেকে দাঁড় করিয়ে অবশেষে সন্ধ্যা ছয়টায় মেলার গেটে হাজির হলেন। তার পাওয়া মতো দুতিনটে লাথ্থি মেরে তাকে সহ মেলায় ঢুকলাম। স্টল বলতে তেমন কিছু নয়, তবুও ভেতরটা জ্বলজ্বল করছিল। কারন হালিমা আপা ভেতরে বসে আছেন একজন প্রবীণ লেখিকার সাথে।

চিনতে কষ্ট হলো না। দেখে মনে হলো অনেক কালের পরিচিত। আমি প্রায় দৌড়ে গিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলাম। তিনি চিরাচরিত হাসি দিলেন। অনেকক্ষন বসিয়ে রাখার জন্য একটুও রাগ করেননি। বরং আপ্লুত হলেন।

কিছু মানুষ শুধু দিতেই জানেন। এরপর প্রায় প্রতিদিনই তিনি মেলায় এসেছেন। সারা সন্ধ্যা আমরা টো টো করে ঘুরে বেড়িয়েছি, গল্প করেছি, বই কিনেছি।

আমাকে রিকশা করে দিয়ে তারপর তিনি বিদায় নিয়েছেন। আরজু মুক্তা চলে যাবার পর যে ঝিমুনিটা ছিল। মনে হলো কিছুটা হলেও এ মানুষটা সেটা পূরণ করতে পারবেন।

লেখার সঙ্গে লেখকের বাস্তবের তেমন কোন মিল নেই। ভীষণ হাসিখুশি হালিমা আপা নারীদের নিয়ে লেখেন। অথচ তিনি মোটেও তেমন নন। তিনি নিজেও বলছিলেন- তসলিমা নাসরিন যেমন কলমে তেমন বাস্তবে নয়।

-আমি কেমন আপা?

-না, আপনি ঠিক আছেন!

তবে খাদিজা বললো, আমি অন্যরকম। লেখার মতো রোমান্টিক বা রম্য টাইপ না। আর একদমই কথা বলি না। হ্যাঁ, আমার শুনতে ভালো লাগে। তবে ঈদানিং নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছি।

ব্লগার খাদিজাতুল কুবরা, অনবরত কথা বলে। লেখার মতো কঠিন তো মোটেও না। তো, আমি আর না শুনে কি বলি। অনেক পকপক শেষে তিনি বলেছেন, তুমি তো কিছু বলছো না। ও লিখবা তাই। তাহলে আর না বলি। কি বলবো আর কি লিখবা! হা হা হা!

সে জানতে চাইলো, তাকে কেমন লাগলো। ভালো, বেশ ভালো তবে আর একটু লম্বা হলে আরও ভালো হতো😜😜। আর বন্ধুত্ব সৌন্দর্যে হয় না, মনের মিল থাকলেই হলো।

আমাদের স্বনামধন্য ব্লগার, আমার অতি পছন্দের ডা: সৌবর্ণ বাঁধনও লেখার মতো মোটেও না। একেবারেই মিষ্টি একটা মানুষ। বেশ অনেক গল্পই হলো তাঁর সাথে।

বোরিং ঢাকা শহর এবারইচ্ছে প্রথম এতো ভালো লাগলো। তাও হাসপাতালে থেকেও। রিকসায় করে মেলা থেকে মিরপুরও বিরক্ত লাগেনি।

একদল লেখক যাঁরা সবাই ঢাকা ভার্সিটির ৮৬ ব্যাচ। এতো ভালো মানুষ সবাই যে, কিভাবে সময় কেটে যায় বোঝাই যায় না। এ বয়সেও তাঁরা চিরতরুন!

জীবন আসলে কিছুই না। একসময় খুব ভাব নিতাম। এখন নেই না, সহজ হবার চেষ্টা করছি। দেখছি তাতেই আনন্দ অনেক বেশী। এভাবেই যেন আমরা থাকি সকল সহ লেখক ও ব্লগার বন্ধুরা এটাই কামনা।।।

0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ