চোরের মায়ের বড় গলা

মোঃ খুরশীদ আলম ৭ অক্টোবর ২০২০, বুধবার, ০৮:৫৮:৩৮অপরাহ্ন সমসাময়িক ১৪ মন্তব্য

ইদানিংকালে আলোচিত সমালোচিত কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনমনে জনরোষ খুব স্তুপ হয়েছে। তার মধ্যে ধর্ষণ একটি।

আমাদের দেশে যে ঘটনা যখন ঘটে তখন একই ঘটনা অনেক দিন ধরে চলতে থাকে। একটা ঘটনা ঘটে আর একটা চাপা পড়ে।

সড়ক দুর্ঘটনা, ইভটিজিং, হত্যা, খুন, পরকীয়া এসব খই মুড়ির মতো সহজ হয়ে গেছে। দুধের শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত অনাচারের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। হয়তো এই পরিস্থিতির কথাই রাসুল স. বলেছেন চৌদ্দশত বছর আগে। কেয়ামতের পূর্বক্ষণে মানুষ হত্যা করবে মানুষকে, যে হত্যা করবে সে জানবে না কেন সে হত্যা করছে আর যে খুন হবে সেও  জানবে না কেন খুন হচ্ছে। আমরা এই সময়টার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছি।

অন্দর মহল থেকে অশ্রাব্য সুরে গানের আওয়াজ আসবে রাস্তায়, এটা নবিজীর কথা। পাশের বাসায় বৃদ্ধ বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে আর কলোনীর মাঠে হয়তো কারো জন্ম দিন কিংবা বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ব্যান্ড, প্যাকেজ ইত্যাদি হতে বিকট শব্দে ভেসে আসে “ আমার মাটির গাছে লাউ ধরেছে লাউযে বড় সোহাগী, পোলাতো নয় যেন আগুণেরই গোলা রে, আখ ক্ষেতে ছাগল বন্দি জলে বন্দি মাছ-নারীর প্রেমে পুরুষ বন্দি থাকে বার মাস,” ইত্যাদি ।  এটা রোজকার কথা। এসব বাক্যের না আছে কোন অর্থ না আছে কোন মাধুর্যতা। তবুও এক শ্রেণীর নারী-পুরুষ লজ্জা-শরম বিসর্জন দিয়ে এই বাক্যগুলোই আওরায় হামেশা।

রাজনীতির ছত্রছায়ায় থেকে  ধর্ষণ রাজনীতির মহৎ উদ্দেশ্যকে বিলিন করে দেয়। বেপরোয়া চালচলন, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনীতিতে বখাটের উপস্থিতি রাজনীতিকে কলুষিত করেছে এবং করছে। রাজনীতির ছত্রছায়ায় থেকে খুন, ধর্ষণ এবং জানা না জানা অনেক অপকর্ম হয়ে থাকে। সবগুলো মিডিয়ায় আসে না, কিছু কিছু আসে। সবগুলো বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ায় না এবং শেষ পরিণতিও পায়না। রাজনীতির অশুভ হস্তক্ষেপে অংকুরের বিনষ্ট হয় কোন কোন বিচার পক্রিয়া। এগুলোর অবসান হওয়ার দরকার।

এবার একটি ভিন্ন কথায় আসি। আদালতের কর্মচারী হিসাবে অনেক পরিচিত অপিরিচিত মানুষ আসে পরামর্শ নেবার জন্য। একদিন এক সুন্দরী আসলেন। তার সাথে মামলার সুবাদে আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। তিনি পার্লার করেন। জমিদারের সাথে ভাড়া বা কোন বিষয়ে ঝামেলা চলছে। তাই জমিদারকে জব্দ করা দরকার। ফন্দি আটলেন জমিদারের বিরুদ্ধে শ্লীতাহানীর অভিযোগে মামলা দায়ের করবে। আমি যেহেতু কোর্টে আছি তাকে যেন সাহায্য করি। আমি তাকে বুঝালাম এটা অন্যায়-অপরাধ। এটা করা আইনের দৃষ্টিতেও ঠিক নয় এবং ইসলামের দৃষ্টিতেও অপরাধ। তিনি যা বুঝার বুঝলেন এবং চলে গেলেন। ফেজবুকে তাকে প্রায় সবসময় দেখা যায়। আগে বিভিন্ন পোষ্টে কমেন্ট করতেন, ফোন করে ভাল মন্দ খবর নিতেন। এখন সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন। গত তিন দিন আগে দেখলাম তিনি ধর্ষকের বিচার দাবী করে ফেসবুকে এস্ট্রাটাস দিয়েছেন।

অনেককেই চিনি যারা নারী দেখলে তাকিয়ে তাকিয়ে নারীর ম্যাপ অংকন করে। তারাও এখন ফেজবুকে ধর্ষকের বিচারের দাবীতে অনঢ়। বেশ ! শুভ ‍বুদ্ধির উদয় হয়েছে সকলের। চোরের মায়ের বড় গলা না হলেই হয়।

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ