চাঁদের কণা

রেজওয়ান ৭ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ০৩:০৬:৫১অপরাহ্ন গল্প ২৬ মন্তব্য

অফিসের ছুটি প্রায় আধ ঘন্টা আগে হয়ে গেছে। চুপচাপ একা একা কেবিনে বসে ল্যাপটপে মেল চেক করছি। যাদের নিজেদের গাড়ি আছে তারা অনেকে চলে গেছে। বাইরে ঝড় বৃষ্টি এখনো কমেনি, সেই বিকেল চারটে থেকে শুরু হয়েছে। আমার একটু তাড়া ছিল বের হবার কিন্তু সে জো নেই। রেজিগ্নেশান দিয়ে দিয়েছি গত সপ্তাহে, এক বড় ওয়াইন কম্পানির কান্ট্রি ম্যানেজার হতে চলেছি কিছু দিনের মধ্যে। দেশ ছাড়ার আগে প্ল্যান করেছি ঘুরতে যাবো। আমার আবার ঘোরার বাতিক আছে, আছে আবার ফটোগ্রাফির সখ। বেশ কয়েক বছর আগে এক কাছের কলিগ বলেছিলো উত্তরাখন্ড অনেক সুন্দর জায়গা, বেশ কয়েকবার গিয়েছিও আমি তবে মনে তৃপ্তি আসেনি, রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও জোৎস্নায় ছবি তুলতে এর চেয়ে সুন্দর যায়গা আর কি হতে পারে!! কাজের চাপে অনেক দিন লং ড্রাইভে যাই না, আগামী ৪ দিন ছুটিও নিয়ে নিয়েছি। ঘোরার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে সেই জায়গা, সত্যই অসাধারণ! মাউন্টেনের পাশে রাতের আধারে জোনাকির আলো অদ্ভুত এক নিরব সৌন্দর্য তৈরি করে। জোৎস্নার রাতে সাদা মাউন্টেন এক নীল দানবে পরিণত হয় সেটা আসলেই অনেক অদ্ভুত! যায়গাটার নাম দিয়েছি আমি মাউন্টেন্স। তবে যাই হোক কি করে বের হব সেটা বড় চিন্তা!

কেবিনের দরজা খুলে বেড়িয়ে দেখলাম দ্বিতীয় সিফটের স্টাফ গুলো বসে আছে, বেশির ভাগ ডেস্ক খালি। ক্যাফেটেরিয়ার দিকে হেঁটে গেলাম, কেউ নেই কোথাও। ঘড়ি দেখলাম সাড়ে সাতটা। কফি কাপ নিয়ে কফি মেশিনের দিকে এগিয়ে যেতেই পেছন থেকে শুনতে পেলাম একটা মিষ্টি গলা।

“কি স্যার এখন বাড়ি যাননি?” ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখলাম, এ্যাম্যলি সাহারিয়া। বাবা মা যেন খুঁজে খুঁজে নাম রেখেছিল মেয়ের, যেমন নাম তেমনি দেখতে। এ্যাম্যলি অফিসের নতুন জুনিয়ার এইচ.আর এসিস্টেন্ট, কত আর বয়স হবে, আন্দাজ করে নেওয়া যাক, এই বাইশ কি তেইশ পেরিয়েছে বড়জোর। মেয়েটা অফিস জয়েন করার পরে এইচ.আর এর কাছে সব ছেলের কাজ যেন বেড়ে যায়। কেন বাড়বে না? দেখতে বেশ সুন্দরী বলা চলে, গায়ের রঙ বেশ ফর্সা, খোলামেলা পোশাক আশাক! বেশিরভাগ দিন হাঁটু পর্যন্ত জিন্স পরে আসত! এ্যামি বুঝেও না বুঝার ভান করতো, কিছু বলতো না।
আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম “তোমার কি খবর, তুমি এখন অফিসে কেন?”
“কি করবো স্যার যা বৃষ্টি হচ্ছে তাতে কি আর বের হওয়া যায়? আমার তো আর আপনার মতন গাড়ি নেই আর আমার কোন বয়ফ্রেন্ড নেই যে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে।” হেসে উত্তর দিল এ্যামি। বেশ সুন্দর সাজানো দু’পাটি মুক্তোর মতন সাদা দাঁত, আবার বাঁ দিকে একটা গজ দাঁত আছে যার জন্য হাসিটা অনেক সুন্দর লাগে। মুখ খানি গোল, পটল চেরা চোখ বাঁকা ভুরু মনে হয় প্রতিদিন প্লাক করে ধনুকের আকার নিয়েছে! মেয়েটা সবাইকে পাত্তা না দিলেও আমার পেছন পেছন ঘুর ঘুর করে তা তো আন্দাজ করি!যদিও বিয়ে করিনি তারপরেও হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট আমি, সবার মত হলে চলে না তাই অনেক কিছুই এড়িয়ে চলি।
ডু ইউ নিড সাম কফি? আমি জিজ্ঞেস করলাম এ্যামি কে।
সিওর স্যার!আমি দুটো কফি কাপে কফি মেশিন থেকে কফি ঢেলে একটা ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। আমার হাত থেকে কফি কাপ নিয়ে, গাড় বাদামি রঙ মাখা ঠোঁট দিয়ে কাপে ছোটো চুমুক দিয়ে প্রশ্ন করে বাড়ি কখন যাবেন?

না আমি ঠিক বাড়ি যাচ্ছি না, আমি একটু বেড়াতে বের হচ্ছি আজ। লং ড্রাইভ টু মাউন্টেন্স।

ভুরু কুঁচকে এ্যামি বললো কোথায় স্যার?
উত্তরাখণ্ড,তবে যাচ্ছি মুন্সিয়ারি! যাকে আমি মাউন্টেন্স বলি! হয়তো নাম শুনোনি কখনো।
জি স্যার আগে নাম শুনিনি। সুন্দর জায়গা সেটা?
উত্তর না দিয়ে আমি কেবিনের দিকে পা বাড়ালাম, না বেশি দেরি করলে চলবে না, কফি শেষ করে বেড়িয়ে পরা যাক। রাকস্যাক, ক্যামেরা, তাঁবু, সব কিছু গাড়ির পেছনে রাখা। আমার জন্য আমার ঘোরার জিনিস গুলো অপেক্ষা করছে। আমার সাথে সাথে হাটতে লাগলো এ্যামি, একটু খানি পেছনে, সম্ভ্রম বোধ আছে মেয়েটার।

দরজা খুলে আমার কেবিনে ঢুকতে যাবো তখন এ্যামি জিজ্ঞেস করলো- স্যার উত্তর তো দিলেন না, আচ্ছা আপনি যখন বের হবেন আমাকে বাড়িতে ছেড়ে দেবেন, প্লিস?
ঐ রকম সুন্দরী মেয়ের কাতর আবেদন কে উপেক্ষা করতে পারে! তবে ওকে এড়িয়েই যেতে হবে তা না হলে দেড়ি হয়ে যাবে।
মুচকি হেসে উত্তর দিলাম- আমি তো সোজা হাইওয়ে ধরব,তবে রাস্তার মাঝে তোমার বাড়ি পড়লে নিশ্চয় আমি তোমাকে বাড়ি ছেড়ে দেব।
আপনি কোনদিক থেকে যাবেন, স্যার?
উত্তরার আব্দুল্লাহপুর দিয়ে বের হবো জ্যাম কম হবে এখন।
তাহলে স্যার আমাকে আব্দুল্লাহপুর বাস স্টেশনে নামিয়ে দিন প্লিজ সেখান থেকে রিক্সা করে চলে যাবো।
আমি চুপ হয়ে ভাবছি আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলতো! এমন সময় স্যার নিবেন না আমাকে? নাকি ইয়ং মেয়ে দেখে ভয় পাচ্ছেন?
হা হা তোমার মত পিচ্চিকে দেখে ভয় পাবো কেন?
কেন ভয় পাবেন না সবাই ঘুরে ঘুরে দেখে আমায় আমি সবই বুঝি তবে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না তো তাই আমিও কিছু বলি না। দেখলে কি ই বা আসে যায়! মেন্টালি বা ফিজিক্যালি ক্ষতি না করলেই হলো..

ধমকেরর সুরে বললাম তোমার হাতাকাটা ড্রেস আর কোয়ার্টার জিন্সের কারনেই তোমাকে দেখে! কেন দেখাও?
স্যার আমি দেখাই না। ফ্রিলি চলতে সাচ্ছ্যন্দ বোধ করি যদি কেউ দেখে সেটাতো আমার দোষ না তাই না?
হুম হুম যাও যাও রেডি হও, হাতের কাজ শেষ করে বের হবো আমি।
কিছু ইমেইল চেক করে হুডি টিশার্ট,সর্টস আর স্পোর্ট সু পড়ে বেরিয়ে পড়লাম এ্যামিকে না জানিয়েই। ওমা ও যে আমার গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে!
আমি জানতাম স্যার আপনি আমাকে ডাকবেন না তাই আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছি!
কে বলেছে ডাকতাম না বলেই সিগারেট জ্বালালাম। জ্বালিয়ে বললাম স্মোকিং শেষ করেই কল দিতাম তোমায়।
আচ্ছা স্যার আপনি ড্রিংস করেন?
হুম করিতো তবে নিয়ম করে কোথাও ঘুরতে গেলে বা ছুটির দিনে বাসায় একা থাকলে। কেন বলতো?

না স্যার এমনি, আজ কি নিয়েছেন?
নেই নি এখনো তবে নিয়ে নেবো। কথা বাড়িয়ে লাভ নেই চলো দেড়ি হয়ে যাচ্ছে সকাল ৭ টার মধ্যে পৌছতে হবে।
জি স্যার চলুন বলেই পাশের সিটে বসে পরলো। আমি গাড়ি স্টার্টিংয়ে রেখে হাতের ব্যাগটা পেছনে রেখে চালানো শুরু করলাম।
এর মধ্যে মেয়েটা রেডিও অন করে নিয়েছে কি এক গান চলছে কিছুই বুঝতে পারছি না।
-কি শুরু করলা এ্যামি এই সময় এমন গান কেউ শোনে?
-তাহলে কি গান শুনে স্যার?
-এমন সমন স্লো গান শুনতে হয়। ফোনটা বের করে দিয়ে বললাম কার স্পিকারটা সেট করো ফোনের সাথে। ছেড়ে দিলাম "মেঘের পরে মেঘ জমেছে.. আঁধার করে আসে...
স্যার আপনি রবীন্দ্র সংগীত শুনেন! বুড়া মানুষের গান হিহিহি..
শুধু বুড়া মানুষই রবীন্দ্র সংগীত শোনে?পাগলী মেয়ে একটা.. বি রেডি গার্ল, আব্দুল্লাহপুরের কাছাকাছি এসে গিয়েছি।
-স্যার একটা কথা বলি?
-না তা বলার দরকার নেই, আমি জানি কি বলবে তুমি। যা বলবে তার উত্তর "না"
-কেন স্যার কি সমস্যা?
-অনেক সমস্যাই আছে নেওয়া যাবে না তোমাকে!
-স্যার আপনি দেখি সত্যিই বুঝে গেছেন আমি আপনার সাথে যেতে চাচ্ছি।
-মুচকি হেসে বললাম না বুঝার কি আছে?তোমার মতলম আমি ক্যান্টিনেই বুঝেছিলাম।
-প্লিজ স্যার নিয়ে চলুন না, একটুও বিরক্ত করবো না আপনাকে। লক্ষী মেয়ের মত চুপচাপ থাকবো কথা দিলাম স্যার।
-দেখ এমনিতে সমস্যা নেই তবে আমার কাছে একটাই তাবু বিছানাও একটা, এক্সট্রা কিছুই নেই তার উপর বৃষ্টি থামার নাম নেই যদি অসুস্থ হয়ে পরো কি করবো আমি?
-এগুলো আমামার কাছে সমস্যাই না, আমি এ্যাডজাস্ট করে নিতে পারবো স্যার, আমাকে নিয়ে চলুন প্লিজ..
-আচ্ছা চলো তোমার সখ মিটিয়ে দেই, বাসা কোথায় তোমার?
-এইতো ৫ মিনিটের ড্রাইভিং পথ।
-দেখ মেয়ে ৫ মিনিটে ব্যাগ গুছিয়ে নিচে নামবা। কোনো মেক আপে সময় নষ্ট করা চলবে না, পারলে শর্টস, টিশার্টস বেশি নিও!

আচ্ছা স্যার অনেক ধন্যবাদ বলেই জড়িয়ে ধরে গালে চুমু সেটে দিয়ে বললো স্যার ঐ সামনের গ্রে রঙের বাড়িটা।
আচ্ছা দজ্জাল মেয়ে তো তুমি চাঞ্চ পেলেই ড্যান্স দিতে ইচ্ছে করে না?যাও তাড়াতাড়ি এসো,৭ মিনিটের বেশি দেড়ি হলে চলে যাবো আমি!
না স্যার দেড়ি হবে না, আমি যাবো আর আসবো..
আমি ছাতা নিয়ে বেড় হয়ে সিগারেট জ্বালালাম। দেদাস্যিমনার মত মেয়েটা, চঞ্চল কিন্তু অভদ্র নয়। মেয়েটার জন্য একটা স্লিপিং ব্যাগ কেনা উচিৎ কিন্ত এখন কোথায় পাবো,ওল্ড টাউনে গিয়ে দেখা যায় আমার পরিচিত এক বড় ভাই আছেন ইলিয়াস ভাই, খুব ভালভালবাসেন আমাকে, উনি ব্যাবিস্থা করে দিতে পারবেন। কল দিয়ে জেনে নিলাম আছে কিনা। নাম্বারটা দেখে হেসে উঠলাম। ভাইয়ের নাম সেইভ করে রেখেছি ইলিস ভাই, উনাকে আমি ইলিশ ভাই বলেই ডাকি!ভাইও কিছু মনে করেন না শুধু হাসেন। সিগারেট শেষ না হতেই দেদাস্যিমনা হাজির।

-হ্যালো দিসু এসে পড়েছ?
-জি স্যার এসে পড়েছি, এই দিসুটা কে স্যার?আমিতো এ্যামি!!
-হুম ইয়াহ এ্যামি, গাড়িতে বসো, ওল্ড টাউন হয়ে তারপর গন্তব্যে উদ্দেশ্যে যাবো ঠিক আছে?
আচ্ছা স্যার চলুন বলে গাড়িতে গিয়ে বসলো, আমি ইলিয়াস ভাইয়ের সাথে কথা বলে সিগারেট ফেলে আমিও গাড়িতে বসলাম।

স্লিপিং ব্যাগ পেয়ে গিয়েছি। কুশল বিনিময় করে বেড়িয়ে পরলাম মুন্সিয়ারি/মাউন্টেন্সের উদ্দেশ্যে...

রাত প্রায় ১১ টা এমন বৃষ্টির সময় রাস্তা ফাকা দেখে অবাক লাগছে। আজি ঝড়ো ঝড়ো মুখরো বাদলো দিনে গানটা বাজছে মনোযোগ দিয়ে গান শুনছি আর ১১০ স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছি, অনেক স্মৃতি ভেসে যাচ্ছে মনে।
এমন সময়-

আদিত্য সাহেব...এত স্পিডের বাংলার মাটিতে কেউ গাড়ি চালায়? আজব..

এ্যামির কন্ঠে বাস্তবে ফিরে এলাম, কি বললে এ্যামি?
বললাম একটু আস্তে চালান স্যার, গুগোল করে নিয়েছি আমরা ৬টার মধ্যেই পৌছে যাবো চিন্তার কারণ নেই।

হুম বৃষ্টি কমেছে কিছুটা, জানালাটা খুলে দিয়ে একটা সিগারেট জ্বালালাম।
স্যার আমাকেও একটা দিন..
প্যাকেট টা এগিয়ে দিয়ে বললাম সামনে সুন্দর একটা রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে ডিনার করে তারপর আবার রওনা দিবো। এ্যামি সিগারেট নিতে নিতে স্যার আপননি এত স্মোক করেন কেন?
আমি সুধু সিগারেটে আসক্ত নই গাঁজাও নেই মদ বিয়ার তো আছেই হা হা হা.. পৈশাচিক এক হাসি দিয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে থামলাম ডিনারের জন্য।

এ্যামি হয়তো ভরকে গিয়েছে আমার কথায় পিন ড্রপ সাইলেন্টে ডিনার শেষ হলো। আমি ওকে বসিয়ে রেখে বিল দিয়ে ১০ প্যাকেট বাংলা ফাইভ সিগারেট নিলাম।যদিও সাথে আরো ১৫ প্যাকেট আছে তারপরেও রিস্ক না নিয়ে স্টক করে নিলাম।
সব গুছিয়ে এ্যামিকে বললাম চলো জাওয়া যাক। গাড়ির কাছে গিয়ে এ্যামি জিজ্ঞাসা করলো আসলেই আপনি গাঁজা সেবন করেন?
-তোমার তাতে কি যাও গাড়িতে বসো।
-না আপনি না বললে আমি বসবো না!
-একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বললাম ইমোশনাল কথা বলে লাভ নেই, বেশি কথা বললে এখানেই রেখে চলে যাবো এবং তুমি ভাল করেই জানো যে আমি করতে পারবো।
হ্যা হ্যা জানি বলে রাগে গজ গজ করতে করতে সে গাড়িতে উঠে বসলো! আমিও গাড়ি ছেড়ে দূর পাহাড়ের উদ্দেশ্যে চলছি, জানালা খুলে দিয়েছি, সুন্দর বাতাস বৈছে মাঝে মাঝে শো শো শব্দে দুরপাল্লার গাড়ি ক্রস করছে আমাদের।

কেন দূরে থাকো, শুধু আরাল রাখো, কে তুমি কে তুমি আমায় ডাকো শ্রীকান্ত আচার্যের গানটা ছাড়লাম অনেক কম শব্দে। দেখলাম এ্যামি ঘুমাচ্ছে। বেচারি মনে করেছে আমি নেশাগ্রস্থ মানুষ, হয়তো আরো অনেক কিছুই ভাবছে। ইয়ং একটা মেয়ে অবিবাহিত এক পুরুষের সাথে অজানা উদ্দেশ্যে যাচ্ছে মাঝ পথে এশে যদি শোনে ছেলেটা নেশাগ্রস্থ তাহলে অনেক কিছুই মাথায় আসাটাই স্বাভাবিক। মেয়েটা বুঝতেই পারলো না আমি মজা করেছিলাম,গাঁজা সেবন আমার কাজ না তবে সিগারেট টা একটু বেশি ই খাই।

প্রায় ২ঘন্টা ঘুমানোর পর জেগে পানি খেলো। রাত ৩টা ৩০ মিনিট এখন গুটিশুটি মেরে মেয়েটা গাড়ির চেয়ারে বসে আছে। অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মেয়েটার মনে বুঝতে পারছি।

কি ম্যাডাম রাগ কমেছে?একসাথে ৭দিন থাকবো আমরা এভাবে রাগ করে থাকলে চলবে? অনেক প্রশ্ন না তোমার মনে? আচ্ছা সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি ঠিক আছে?
প্রথমেই বলছি কোনো বাজে নেশা নাই, ড্রিংস করি মাঝে মাঝে ওইযে আসার সময় বললাম। বদমাইশ প্রকৃতির না আমি হা হা হা...
হাসবেন না হা হা করে ভয়ংকর লাগে। কোনো পাব্লিক টয়লেট সামনে পেলে থামাবেন প্লিজ!
ওহ শিট এখানে টয়লেট পাবো কোথায়? নির্জন যায়গায় থামাতে পারবো এ্যাডজাস্ট করতে পারবা?
হুম পারবো তবে আপনি গাড়ি থেকে নেমে আমার পাশে পেছন ফিরে দাড়াবেন।
না আমি গাড়িতেই থাকবো তুমি নামবে সমস্যা নেই সুন্দর জায়গায় গাড়ি পার্ক করবো। প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে প্রকৃতিতেই ফিরে যাবে সে এক অসাধারণ অনুভূতি।
থাক আর কিছু বলতে হবে না। তাড়াতাড়ি থামান।গাড়ি থামাতেই অন্ধকারে দৌড় দিলে আমি হেসে দিলাম পাছে বুঝে না ফেলে তাই গান পরিবর্তনের জন্য ফোন হাতে নিয়ে কিছু ইংরেজি গান সিলেক্ট করলাম। গান চলছে in end it doesn't matter..
-বাহ আপনি ইংরেজি গানও শুনেন তাও এই যুগের?
-শুনবো না কেন? আমি কি বুড়া নাকি মানা আছে?
-না মানা নেই বুড়াও নন তবে ৪ ঘন্টার জার্নি তে একবারও শুনি নাইতো তাই। আচ্ছা আপনি কিন্তু একটা প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন!
-এখন পর্যন্ত কোনো প্রশ্নই করোনি তুমি যা অনুমান করেছি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি একটা ছাড়া।
-কোনটা ছাড়া?
-ওই দেদিস্যামনার টা কে?
-স্যার আপনি কি মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়েছেন কখনো?
-হাহাহা আমার সিক্স সেন্স নেই কমন সেন্সেই এই প্রশ্ন এসে যায়!
-যাই হোক বলেন এই দিসুটা কে? গার্লফ্রেন্ড?
-হুম এক সময়কার গার্লফ্রেন্ড। বাকি কাহিনী অন্য সময়। এসে পরেছি আমরা চলো গাড়ি পার্ক করবো। এই কটেজেই আমার সব থাকবে তবে আমি থাকবো না এখান থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে তাবু টেনে হবে আমার নিবাস।
-ওকে স্যার তবে আপনার একার না নিবাস না সেটা হবে আমাদের নিবাস।
-হা হা হা আচ্ছা আমাদের নিবাস...

সমাপ্ত

0 Shares

২৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ