গল্পঃ “হিমুর শুভ পরিণয়”

জাকিয়া জেসমিন যূথী ১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ০৭:৪১:৫১অপরাহ্ন গল্প ৩০ মন্তব্য

।।১।।

 

আজকের দিনটা এত আনন্দময় লাগছে কেন বুঝতে পারছি না!

 

সকালে ঘুম থেকে উঠলাম বেলা বারোটায়। সকালও না আবার ঠিক দুপুরও না। সকাল ও দুপুরের সংযোগস্থল এটা। আমি দু’হাত বালিশ ছাড়িয়ে মাথার উপরের দিকে তুলে এক পা সোজা আর এক পা ভাঁজ করে আড়মোড়া ভাঙতে চেষ্টা করি। ঘুমটা এখনো ভাঙ্গেনি। হাই উঠছে। ডান হাতটা অচেতনভাবে মুখের কাছে তুড়ির ভঙ্গীতে নেই। মুখটা খুলে চওড়া হতে থাকে। এখন অনায়াসে মশা মাছি ঢুকে যেতে পারবে। মশা যদি একটা ঢুকেই পরে ভেতরে লালার সাগরে ওর দম বন্ধ হয়ে আসবে না? এক্সপেরিমেন্টটা করা দরকার। আমার হাই তুলা শেষ। মুখ বন্ধ হয়ে আসবে এখুনি। কিন্তু, আমি মশা ঢুকার প্রিপারেশন নিয়ে কিছুক্ষণ মুখ খোলা রেখে দেই।

 

মুখ খুলে রাখাটাই বৃথা। কারণ এই বাসাটায় কোন মশা নাই। এটা মাজেদা খালার বাসা। মাজেদা খালার বাসায় মশা থাকবে এটা ভাবা যায় না। কারণ তিনি বাসা সেইরকম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ভালোবাসেন। শীতকালে খাওয়ার ঘরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালো পিঁপড়ার আনাগোণা দেখা যায়। কিন্তু, মাজেদা খালার বাসায় কালো পিঁপড়ার একটা ছায়াও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

 

জানালার পর্দা ভেদ করে সূর্যটাও উঁকিঝুঁকি মারছে আমার মশা বিষয়ক গবেষণা দেখার জন্য। বেচারা সূর্য আর মুখ কাউকেই আর কষ্ট দিয়ে লাভ নেই। আমি মুখের হা বন্ধ করে উঠে বসলাম। ঘুম তাড়ানোর জন্য দু’হাতের তালু দিয়ে চোখ কচলালাম কয়েক সেকেন্ড। তারপরে বাম দিকে ঘুরে জানালার হলুদ রঙ্গা পর্দা দুদিকে সরিয়ে সূর্যের লুকোচুরি বন্ধ করলাম, ‘নে ব্যাটা দ্যাখ এখন কি দেখবি’!

 

সূর্য মামা আমার ভেংচানি উপেক্ষা করে নিজের সমস্ত দাঁত কেলিয়ে আমার ঘরটাকে আলোকিত করে হাসলো।

 

আমি বেসিনে মুখ ধুয়ে পা টিপে টিপে খাওয়ার ঘরে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলাম-

 

‘এই বাদর, এতক্ষণে তোর ওঠার সময় হলো?’

 

মাজেদা খালার বাজখাই কণ্ঠে আমি ফ্রিজ হয়ে যাই।

 

‘এই রে! সেরেছে!’

 

আমি শংকিত হয়ে উঠি! আজকে খালার সাথে মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা।

 

 

।।২।।

 

আমি আর মাজেদা খালা বসে আছি একটা চারকোণা ঘরে। বসে আছি অনেকক্ষণ ধরেই। দিন কাল বদলে গেছে। আগে পাত্রপক্ষ আসলে মেয়ের বাড়িতে হুলুস্থুল পরে যেত। এখন সবাই ব্যস্ত! বিয়ে করারও বোধহয় সময় নাই। আমরা এসেছি ঘন্টাখানিক হয়ে গেলো এখনো পাত্রপক্ষের লোক বলে কোন সমাদর নেই। নিজেকে মনে হচ্ছে সরকারী অফিসের একটা লোভনীয় পোস্টের জন্য অপেক্ষারত মৌখিক পরীক্ষার্থীদের একজন। মাজেদা খালাকে দেখে মনে হচ্ছে প্রথমবার পরীক্ষার্থীর সাথে আসা একজন গার্ডিয়ানের মত।

 

পাত্রী দেখতে আমি আসতে চাইনি। আমাকে জোর করে আনা হয়েছে। কিন্তু, কোন মেয়ের সামনে পরে বিব্রত হতে হচ্ছে না বলে আমি এখন পর্যন্ত সুখী। সুখী সুখী মনে আমি ঘরের চারপাশ পর্যবেক্ষণ করছি।

 

বাসাটা সুন্দর। বাম পাশের দেয়াল ঘেঁষে দুই সিটের একটা সোফা বসানো। তার মুখোমুখি দেয়াল ঘেঁষে রাখা এক সিটের দুটো সোফা। আর বাকি দেয়ালের এক কোণায় একটা শতরঞ্চি। তার উপরে তিনটা কুশন।

 

যেখানে বসে আছি তার উলটা দিকের দেয়ালে তিনটা তৈলচিত্র টাঙানো। একপাশে একটা শো-পিসের আলমারী।

 

বসে বসে আমি কি করবো? মাজেদা খালাকে একটু বিনোদন দেয়া যাক! বেচারা এত সাধ করে ভাগ্নের জন্যে কনে দেখতে এসেছে!

 

আমি গিয়ে শো-পিস আলমারীটার সামনে দাঁড়াই। আরো অনেক জিনিসের সাথে ছোট ছোট ফটো স্ট্যান্ডে কিছু ছবি রাখা। একটা ফ্রেমে এক জোড়া নীল চোখে তাকিয়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম!

 

।।৩।।

 

‘ভাইজান, ভেতরে আপনাকে ডাকে।’

 

নিস্তব্ধ ঘরের মধ্যে আমরা দুটি প্রাণি বসে ছিলাম এতক্ষণ। মাজেদা খালা আর আমি।

 

হঠাৎ ডাক শুনে পেছনে ফিরে দেখি পুরাতন টাংগাইল শাড়ি পরিহিতা একজন মোটাশোটা মহিলা। কাজের বুয়া বোধহয়।

 

‘আমাকে বলছেন?’

 

‘জ্বী ভাইজান!’ শুনেই আমি পা বাড়াতে গেলাম। মাজেদা খালাও সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। বুয়াটা বলে উঠলো, ‘খালাম্মা, আপনাকে ভেতরে যেতে বলে নাই। আপনে এইখানেই বসেন।’

 

বুয়ার কথায় খালার বিরক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু বুয়ার বলার সাথে সাথে যেন তিনি স্বস্তি পেলেন। ধপ করে সোফায় বসে পরলেন। বসে থাকতে থাকতে এতক্ষণ বোধহয় ঝিমুনি পেয়ে গিয়েছিলো। এখন তিনি একা বসে আরামে ঘুমোবেন।

 

আমি পা বাড়ালাম। বুয়া আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চললো। বাড়িটা বেশ বড়। কয়েকটি রুম পেরিয়ে আমাকে একটা ঘরের খোলা দরজার সামনে রেখে বুয়া চলে গেলো। ঘরটায় ঢুকবো কি না ভাবছি। এমন সময় কথা শুনে কান খাড়া করলাম,

 

‘ইইই আল্লা, তোমার হাতের তালুতে কত দাআআগ!’ বাচ্চা মেয়ের কণ্ঠ।

 

‘আমি গুণবতী তো! তাই আমার তালুতে এত দাগ!’ এবার একটা বড় মেয়ের মিষ্টি কণ্ঠস্বর ভেসে এলো।

 

মিষ্টি কন্ঠস্বরের উৎস খুঁজতেই আমি ভেতরে উঁকি দিলাম। সাদা কামিজ পরা একজন উনিশ বিশ বছর বয়সী তরুণী মেয়ের পিঠ আর মুখের এক পাশ দেখা যাচ্ছে। তার অপর পাশে মুখোমুখি বসে আছে একটা বাচ্চা মেয়ে। বছর পাঁচেকের। কিংবা ছয় হবে।

 

ওদের কথাবার্তায় আমি মজা পেলাম। ওদের মনযোগ নষ্ট না করে বিড়ালের মত নিঃশব্দে ঘরের ভেতরে ঢুকতে চাইলাম। মেয়েটি কিভাবে যেন টের পেয়ে গেছে। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই আমি থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম।

 

মেয়েটি স্নিগ্ধ হেসে যেন কিছুই হয়নি এমন ভঙ্গীতে ‘বসেন’ বলেই আবার বাচ্চাটির দিকে ঘুরে তাকালো।

 

‘তোমার তালুতে কি দাআআগ! ছিইইহ!’ বাচ্চা মেয়েটির চোখে মুখে ব্যাঙ্গ!

 

বাচ্চাটির হাতের তালু ধরে বড় মেয়েটি বলে উঠলো, ‘তোমার তো মাত্র তিনটা দাগ। তুমি কি কি পারো? পড়াশুনা করো। ঘুমাও আর খেলো। আর আমি কত্ত কিছু পারি। ঘর গুছাই। বাজারে যাই। ভালো রান্না করি। সুন্দর গান গাই। এইরকম অনেক অনেক গুণ আমার। তাই তো এত্ত দাগ! যখন বড় হবা তোমারও তালুতে অনেক দাগ হবে!’ বাচ্চা মেয়েটিকে খুব জব্দ করেছে এমন ভঙ্গীতে বলে উঠে খিলখিলিয়ে হেসে আমার দিকে তাকায়। কথাগুলো যেন বাচ্চা মেয়েটিকে নয় আমাকেই শুনানো হলো।

 

আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বার আটকে গেলাম। সেই নীল চোখ!

 

 

।।৪।।

 

‘আচ্ছা, এত সুন্দর সুন্দর রঙ থাকতে তোমাকে কেন হলুদ ক্যাটক্যাটা এইরকম একটা বিচ্ছিরি রঙের পাঞ্জাবী পরতে হবে? নিজের দিকে চেয়ে দেখো নাই?’

 

ভীষণ বিরক্তি ছড়িয়ে নীলাম্বরী কথা বলতে থাকে। কেঁদে ফেলবে যেন। ওর অনুরোধ ছিলো আজ যেন অন্তত আমি ওর দেয়া পাঞ্জাবীটা পরে আসি। আমাদের প্রথম দেখা হওয়া থেকে আজ গুণে গুণে একটা মাস পার হয়েছে।

 

কথা ছিলো আজকে ও নীল শাড়ির সাথে নীল অপরাজিতা ফুল খোঁপায় গুঁজে কপালে নীল টিপ হাতে নীল কাচের চুড়িতে বেশ সাজুগুজু করে আসবে। শীতের আগমনী দুপুরে হালকা ঠান্ডা হাওয়ায় আমি আর সে পাশাপাশি দিগন্ত বরাবর হাঁটবো। গন্তব্য থাকবে না আমাদের। জীবনানন্দ দাশের কবিতার মত বহুদূর হেঁটে যাবো দুজনে। নিজের শাড়ির সাথে ম্যাচ করে ও কারুশিল্প মেলা থেকে নীল সুতার কাজ করা নীল পাঞ্জাবী কিনে দিয়েছিলো একটা। আজকে ওটা পরে আসার কথা ছিলো।

 

‘হিমু, তুমি আমার এই একটা কথা রাখতে পারলা না? সারাজীবন তুমি আমার কি খেয়াল রাখবা বলতো?’

 

আমি বকাঝকা কানে শুনছি না। আমি মেয়েটির আবেগ অনুভব করছি। নীল নয়না আবেগী এই মেয়েটার নাম যে কেন ওর বাবা মা নিশিতা রেখেছে আল্লাই জানে। আমি নাম পালটে নীলাম্বরী রেখেছি। ওর খুব পছন্দ হয়েছে।

 

কাছেই একটা ডাবওয়ালা ডাব বিক্রি করছে। আমি সেদিকে এগিয়ে যাই। ডাবওয়ালাকে বলি, ‘ভাই নরম শাসওয়ালা ডাব দেন তো।’

 

‘কয়টা দেবো, ভাইজান?’

 

‘একটা দেন। পাইপ দেন দুইটা।’

 

আমি ডাবওয়ালার ডাব কাটা দেখতে থাকি গভীর মনযোগে। অল্প কিছু দূরে যে আমার প্রেয়সী বসে আছে অভিমানে সে কথা ভুলে যাই কিছুক্ষণের জন্য।

 

‘নেন ভাইজান!’ লোকটা ডাব বাড়িয়ে ধরতেই আমি পেছন ফিরে হাঁটা ধরি।

 

ডাবওয়ালা দাম চাইলে আমি পাঞ্জাবীর পকেটের দিকে হাত বাড়াই। কিন্তু পকেট খুঁজে পাই না। কারণ আমার পাঞ্জাবীতে পকেট নাই। তাই টাকাও নাই।

 

লোকটাকে বললাম, ‘আসেন।’

 

নীলাম্বরীর কাছে এসে বলি, ‘ত্রিশটা টাকা দাও তো!’

 

নীলাম্বরী কোন সিন ক্রিয়েট করে না। চুপচাপ ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট আমার দিকে বাড়িয়ে ধরে। আমি সেটা পুরোটাই ডাবওয়ালাকে দিয়ে দেই।

 

ডাবওয়ালা বিশ টাকা ফেরত দিতে চাইলে আমি বলি, ‘রেখে দেন।’

 

দাঁত বের করে একটা বেহেস্তি হাসি উপহার দিয়ে ডাবওয়ালা ব্যাটা দ্রুত পায়ে নিজের ভ্যানের কাছে চলে যায়। পাছে আমি আবার টাকাটা ফেরত নিয়ে নেই।

 

 

।।৫।।

 

নির্জন দুপুর। আমরা দুজন হেঁটে চলেছি। নীলাম্বরীকে খুব সুন্দর লাগছে। আগে এই মেয়েটাকে এত মনযোগ দিয়ে দেখি নাই।

 

অনেকক্ষণ ধরেই ও কোন কথা বলছে না। বেশি নিরব হয়ে আছে।

 

‘কি ব্যাপার, কথা বলছো না কেন?’

 

‘আর কথা বলবো না তোমার সাথে!’

 

‘সেকি!’

 

‘তুমি জানো, আমি কেন আজ দেখা করতে বলেছি?’

 

‘আজ কি বিশেষ একটা দিন?’

 

‘হু! আজ আমার বিয়ে!’

 

‘বিয়ে? কি বলো? কার সাথে?’

 

‘বাবা আমার জন্য পাত্র ঠিক করে ফেলেছে! ছেলে সুন্দর। হ্যান্ডসাম! সিভিল এঞ্জিনিয়ার! নিজের সফটওয়ার কম্পানী আছে! হেব্বি বড়লোক!’ দুঃখী দুঃখী কণ্ঠে নীলাম্বরী একটানে কথাগুলো বলে যায়। আর আমার বুকের ভেতরে হাতুড়ি পেটার শব্দ টের পেতে থাকি! এমন তো হওয়ার কথা নয়! মহাপুরুষদের তো হৃদয়ের টান থাকে না! তাহলে বুকে ব্যথা হয় কেন!

 

কষ্ট গোপনের চেষ্টায় বলি, ‘ও! ভালো তো!’

 

‘ধুর হিমু, তুমি কিইই?’ মেয়েটির বিরক্তিমাখা কণ্ঠে আমি চমকে উঠি!

 

বেক্কলের মত বলে উঠি, ‘ক্যান, কি হইছে?’

 

‘কি হইছে মানে? আমি ভাবলাম, তুমি বলবা- আমার নীলাম্বরীকে কেউ আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না! তুমি জাস্ট বললা –ও!’ নীলাম্বরীর কণ্ঠে কান্না ঝরে পরে!

 

‘এত ভালো পাত্র! হাতছাড়া করা ঠিক হবে না! বিয়ে করে ফেলো!’

 

ঝট করে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ একা একা হাঁটতে থাকে আমার নীলাম্বরী। আমি ওর সাথে হেঁটে যেতে পারি না। ওর সাথে আমার পথ চলা যদি আজই থেমে যায় তাহলে আজ হতেই সেই প্রস্তুতি শুরু হোক। আমি ঘুরে উলটো দিকে হাঁটা শুরু করলাম।

 

হঠাৎ একটা রিকশা থামলো আমার বাম পাশে। নীলাম্বরী বসে আছে রিকশায়। দুষ্টুমী ভরা চোখে হাসছে!

 

‘উঠে এসো!’

 

বিনা বাক্যব্যয়ে উঠে বসলাম।

 

‘কোথায় যাবা?’

 

‘রিকশাওয়ালা ভাই তাড়াতাড়ি চালান। বিকেল পাঁচটার মধ্যেই কাজী অফিসে পৌঁছতে হবে!’

 

‘কেন? সেখানে কি তোমার হবু বর অপেক্ষা করছেন?’

 

‘ধুর! মরুক গে সেই ব্যাটা! আজ তোমার আর আমার বিয়ে!’

 

আমার হাতটা নীলাম্বরী ওর নরম দু’হাতের তালুতে চেপে বসে আছে। রিকশায় দুজনার মাঝের দূরত্ব এক চুলও না।

 

আমার হাতে কোন ঘড়ি নেই। বিকেল পাঁচটা বাজতে আর কতটা দেরী সে কথা নীলাম্বরীকে জিজ্ঞেস করার সাহস হয় না আমার। সময় চলুক সময়ের নিজস্ব গতিতে। আমি আমার পাশে বসা এই আসন্ন বিবাহের আনন্দে পুলকিত এক অপরূপা নারীর অপার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকি।

 

জাকিয়া জেসমিন যূথী

১৪ নভেম্বর, ২০১৩

(সমাপ্ত)

 

 

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ