কলমপ্রিয়তা

পথহারা পাখি ২৪ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ০৫:৩৮:৫২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১২ মন্তব্য


বুঝতে শিখিনি যখনও, তখন থেকেই দেখে এসেছি, আমার বাবার বুকপকেটে সবসময়ই দুটা-তিনটা করে কলম থাকতো। তা সে যেখানেই যাক না কেন- অফিসে, দাওয়াতে কিংবা বেড়াতে! কলম ছাড়া কখনোই দেখিনি তাকে। অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর কলমের সংখ্যা কিছু কমেছে, কিন্তু অভ্যাস বদলায়নি।

অভ্যাস বললে ভুল হবে। আমার বাবার কলমের একটা অদ্ভুত শখ। সুন্দর কলম দেখলে বাবা সেটা তার নিজের করে নিতেন; না, তাই বলে খুব বেশি দামী কলম কিনে সংগ্রহ করে রাখতেন, ব্যাপারটা তেমন দেখিনি। সাধ্যের নাগালে থাকলেই সেটা কিনতেন। আর সেগুলো দিয়ে বাবা খুব শখ করে ডায়েরী লিখতেন, এখনো লিখেন।

বাবার মেয়ে বলেই হয়তো আমার মাঝেও সেই শখের পুনরাবৃত্তি আছে। ছোট থাকতে বায়না করে বাবার কাছ থেকে ঝর্ণাকলম আদায় করেছি বেশ কয়েকরকম। এরপর যখন জেলপেনের যুগ এলো, সেটাও উদ্ধার করে ছেড়েছিলাম ক্লাসের অন্য আর দশজনের আগেই।

কলম থেকে বের হওয়া কালি দেখতাম, আর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। আর কিছু কিছু কলম তো এতো ভালো লাগতো যে না লিখে সাজিয়েই রেখে দিয়েছি!

আমার পতিমশাইও দেখি তার ব্যতিক্রম না!!
সুন্দর কলমের প্রতি তার এতোই নেশা কাজ করে যে, নতুন কোন কলম পেলে সেটা দিয়ে অবিরত লিখে পাতার পর পাতা শেষ করে ফেলে। তারপর সেই কালি শেষ হওয়া কলমটা যত্ন করে রেখে দেয় ড্রয়ারে! এখানেই পার্থক্য তার সাথে আমার; আমি শেষ হতে দেই না, আর সে শেষ করে তুলে রাখে।

চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে ঔষধ কোম্পানীগুলো তাদের ওষুধের সাথে পরিচয় করাতে বিভিন্ন ধরনের কলম উপহার দেয় আমাদের। সেই কলমগুলো খুব যত্ন করে নিয়ে আসি আমি। বাসায় কোন মেহমান আসলে তাদেরকে দেই। কী যে খুশি হয় তারা, নিজেরই ভালো লাগে!

কলমের সদ্ব্যবহার হোক। সবাই অনেক লিখুক। কলম থাকুক বুকপকেটে প্রিয় হয়ে সবার মাঝে।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ