না, তোমার আসার দরকার নেই, আমি এভাবেই ভালো আছি এখন। আমার বিরহবেলার সাথী পুরাতন বালিশ, উম হারানো পাতলা কাঁথাটিও আছে— শীত,বর্ষা,শরতে যে আমাকে তার সাধ্যমতো আগলে রাখে।
আমার সুখ দুঃখের সাক্ষী পুরাতন বেডটিও আছে, বয়সের ভারে সে এখন ঝীর্ণ। তার উপর শুয়ে শুয়েই আমি দিবারাত্রির কাব্য লিখি। হৃদয়ের বিস্তৃত উঠোনে জুড়ে সহস্র স্বপ্নের আলপনা আঁকি কল্পনায় অথবা হতাশার অন্ধকার দেখে স্বপ্নভঙ্গের ভয়ে হঠাৎ আৎকে উঠি।
আরো আছে ফুটপাত থেকে কেনা আভিজাত্যহীন সস্তা আলনা। আলনার উপর এলোমেলো কাপড়, কিছু ধোয়া, কিছু আধোয়া। বালিশের নিচে-পাশে, টেবিলের উপরে, টেবিলের নিচে অসংখ্য বই। ধুলো জমতে জমতে যাদের উপর ধূসর আস্তরণ পড়ে গেছে। আগামী শুক্রবারেই ঝেড়ে পরিষ্কার করবো করবো বলে পার হয়ে গেছে চার চারটি সপ্তা অথচ তাদের ভাগ্যে এখনো সেই শুক্রবারটি এলো না।
এই বইগুলোই এখন আমার যাবতীয় মনোযোগ আকর্ষণ করে আছে। বিষন্ন দুপুর, একাকী বিকেল অথবা নির্ঘুম মধ্যরাত— এই অম্লমধুর মুহূর্তগুলোতে আমি তাদের মাঝেই ডুবে থাকি। কাজলে সাজানো তোমার ডাগর চোখের চেয়ে তারা অথৈ, অতল। তোমার বেণীহীন খোলা চুলের চেয়েও তারা চঞ্চল অথবা মায়া বাড়ানো তোমার মাধুরী মুখের চেয়েও তারা হৃদয়োন্মাদিনী।
তোমার আসার দরকার নেই এখন।
আমি এভাবেই ভালো আছি। শুধু আমি না, আমার মতো স্বপ্নালো চোখের আরো অনেকেই।
০৭.১২.২০১৫
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ
আনোয়ারা, চট্টগ্রাম।
৯টি মন্তব্য
অরুনি মায়া
কবিতায় যেভাবে ঘরের বর্ণনা দিলেন তাতে তো মনে হচ্ছেনা ভাল আছেন | সে এসে দেখলেই বুঝে যাবে আপনার দিনকাল ভাল যাচ্ছেনা 🙂
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ
আপনার ধারণা অনেকটা ঠিক। ব্যাচেলরদের বাসা তো এরকমই। এই অসময়ে সে না আসলেই ভালো হয়।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য রইলো অনেক অনেক ধন্যবাদ
দীপংকর চন্দ
দিবারাত্রির কাব্যে ভালো লাগা থাকছে। অনেক।
আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন ভাই।
ভালো থাকবেন। সবসময়।
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ
খুশি হলাম ভাইয়া। অনেক অনেক ধন্যবাদ আর ভালোবাসা জানবেন
ভোরের শিশির
মনের দিনরাত নিয়ে বেশ লিখেছেন ভাইয়া। শুভকামনা। -{@
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ
একটু ট্রাই করা -এই আর কি। অনেক ধন্যবাদ রইলো ভাই
ভোরের শিশির
শুভেচ্ছা আবারো এবং ভাল থাকবেন। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
এমন মন নিয়ে ভালো থাকার তো কথা না।
মন ভালো হোক।
পোষ্টে ভালো লাগা।
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ
অনেক অনেক ধন্যবাদ রইলো আপু