এক মুঠো ভালোবাসা (২৩তম পর্ব)

ইঞ্জা ১১ মার্চ ২০২০, বুধবার, ০৬:২২:৪০অপরাহ্ন গল্প ৩৫ মন্তব্য

ছায়া কিছুক্ষণ পরপর উঁকি দিয়ে দেখছে অনিকদের গাড়ী আসছে কিনা দেখেতে।

ওদিকে অনিকরা এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসলে অনিক সবাইকে অপেক্ষা করতে বলে নিজে গেলো পার্কিং থেকে গাড়ীটা নিয়ে আসার জন্য।
কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ী নিয়ে ফেরত এলো অনিক, সবার লাগেজ গাড়ীতে তুলে নিজেরা উঠে বসলো গাড়ীতে।
অনিক ড্রাইভ করছে, পাশের সিটে আফরিন এবং পিছনে অনিকের বাবা মা।
আফরিন বললো৷ আমাকে সেন্ট্রালের কোথাও নামিয়ে দিলে আমি বাসায় চলে যাবো।
অসুবিধে নেই অনিক তোমাকে নামিয়ে দেবে, কি বলিস অনিক, অনিকের মা বললেন।
হাঁ মা, আমি ড্রপ করে দেবো।
ঘন্টা খানেক লাগলো আফরিনকে ড্রপ করতে, আফরিন ঘরে আসতে বললে, অনিক বললো, আজ না, আরেকদিন আসবো।
তাহলে আগামীকাল আমার বাসায় আপনাদের সবার দাওয়াত রইলো, ছায়াদেরও নিয়ে আসবেন।
না করতে চেয়েছিলো অনিক, ওর মা দাওয়াত কবুল করলেন সন্ধ্যার পর আসবেন বলে, এরপর বিদায় নিয়ে অনিকরা রওনা হলো।

মা কি দরকার ছিলো দাওয়াত নেওয়ার, অনিক বিরক্তির সাথে জিজ্ঞেস করলো?
মেয়েটা এমন করে বললো যে না করতে পারিনি বাবা, বলেই মুচকি হাসলেন উনি।

ছায়া আবার জানালা দিয়ে উঁকি দিলো, হতাশ হয়ে ফিরে এলো ড্রয়িংরুমে।
কি মা এরা তো এখনো এলোনা?
বাবা আপনি চিন্তা করবেন না, ওরা পথেই আছে, যদিও ওরও চিন্তা হচ্ছে এতো দেরি দেখে, ভাবছে ফোন দেবে কিনা?
কলিংবেলের শব্দ শুনে দৌড়ে গেলো দরজা খুলতে, দরজা খুলে চোখ হতাশ হলো লেভিনকে দেখে।
হাই ছায়া কেমন আছো? (ইংরেজিতে)
জ্বি ভালো, প্লিজ ভিতরে আসুন।
না আমি আসবো না, অনিক কি এসেছে?
না এখনো এসে পোঁছেনি।
ওকে তাহলে এই এনভেলপটা ও আসলে দিও, আমার তাড়া আছে ফ্লাইট ধরতে হবে, বাই।
ছায়া বাই বলে দরজা বন্ধ করে ফিরে গেলো ড্রয়িংরুমে।

কিছুক্ষণ পর ছায়া জানালা দিয়ে উঁকি দিলে দেখতে পেলো অনিকের গাড়ী নিচে, তারমানে অনিকরা এসে গেছে, ইতিমধ্যে কলিংবেলের শব্দ হলো।
ছায়া দরজা খুলে ধরলে অনিক বললো, ভালো আছো?
হাঁ।
ইনি আমার বাবা আর উনি আমার মা।
ছায়া এগিয়ে গিয়ে কদমবুচি করলে অনিকের মা জড়িয়ে ধরলেন।
অনিক সবাইকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে রওশনের বাবা এগিয়ে এলেন।
সালাম আনকেল।
ওয়া আলাইকুম আসসালাম বলেই উনি অনিকের বাবা এগিয়ে গিয়ে অনিকের বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ভাই কেমন আছেন আপনি, অনেকদিন পর দেখছি আপনাকে।
আলহামদুলিল্লাহ ভাই আমি ভালো আছি, আপনার শরীর কেমন এখন?
জ্বি ভাই খুব ভালো আছি, আসুন আসুন, ভাবী আসসালামু আলাইকুম।
অনিকের মা হাসি মুখে সালাম নিলেন।

অনিকের বাবা মাকে নিয়ে রওশনের বাবা ড্রয়িংরুমে বসলে অনিক আর ছায়া সবার ব্যাগ গুলো যথাস্থানে রেখে এলো।
ছায়া এসে অনিকের মা বাকে বললো, আন্টি আসুন আপনি ফ্রেস হয়ে নেবেন, আনকেল আপনার জন্য বাবার সাথে এক রুমে ব্যবস্থা করেছি, অসুবিধা হবে নাতো?
না মা কিসের অসুবিধা, বরঞ্চ ভালোই হলো, দুই ভাইয়ের সময়টা ভালোই কাটবে।
ছায়া অনিকের বাবাকে রুম দেখিয়ে দিয়ে নিজের রুমে অনিকের মাকে নিয়ে গেলো।
আন্টি দিন আমি আপনাকে হেল্প করি, বলেই নিজে ব্যাগ খুলতে শুরু করলো, সব কাপড় অনিকের মার হাত থেকে নিয়ে ওয়াল আলমিরাতে সাজিয়ে রাখতে লাগলো, ওদিকে অনিকের মা খেয়াল করছিলেন ছায়ার কাজ গুলো।
আন্টি আপনি কাপড় ছেড়ে ফ্রেস হয়ে নিন, আপনি রেডি হয়ে এলে ডিনার দেবো।
ঠিক আছে ছায়া, বলেই মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলেন অনিকের মা।
আন্টি আপনি যেকোন বিছানায় শুতে পারবেন, আমি একদম ফ্রেস বেডশিট, পিলো কাভার দিয়ে রেখেছি।
তুমি কোনটা ইউজ করো?
আন্টি আমার কথা চিন্তা করবেন না, আমি যেখানে সেখানেই থাকতে পারি, বলেই মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

ঘন্টা খানেক পর সবাইকে ডেকে নিলো ছায়া ডিনারের জন্য, অনিক ছায়াকে হেল্প করতে চাইলে ছায়া না করলো, বললো আজ আমাকে করতে দিন প্লিজ।
অনিক চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তাকালে ছায়া ইশারা করলো ওর বাবা মার দিকে।
অনিক রণে ভঙ্গ দিয়ে ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে বসে পড়লো।
ছায়া সবাইকে বেড়ে দিতে লাগলে অনিকের মা বললেন, এতো কিছু করতে গেলে কেন, সব খেতে পারবো তো?
ছায়া হেসে বললো, আন্টি ধীরেধীরে খান।
অনিকের বাবা গলদা চিংড়ি খেতে খেতে রান্নার সুনাম করলেন, এতো দেখছি খুবই সুস্বাদু।
ছায়ার রান্নার হাত বেশ ভালো বাবা, অনিক জবাবে বললো।

.......... চলবে।
ছবিঃ গুগল।

0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ