একটি সংক্ষিপ্ত রচনা : জানু

আবির ৮ ডিসেম্বর ২০১৪, সোমবার, ১১:২৬:৫৩অপরাহ্ন বিবিধ, রম্য ২৫ মন্তব্য

ভূমিকা:  "জানু" বর্তমানে একটি অতি জনপ্রিয়, সার্বজনীন, লিঙ্গ বৈষম্যহীন শব্দ, ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই একটি সুখাদ্যকর শব্দ বলেই বিবেচনা করা যায়। জানু শব্দের আভিধানিক অর্থ হাঁটু হলেও তার প্রয়োগ সম্পূর্ণ ভিন্ন। রোমান্টিজমের বিপ্লব ঘটানোর এ এক কিংবদন্তী শব্দ যা বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে প্রচলিত এবং আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের মতো অতি দ্রুত তা জনপ্রিয়তার স্থান দখল করে নিয়েছে।

বর্ণনা: জানু শব্দটি দেশী না বিদেশী তা নিয়ে স্পস্ট কোন ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি তবে প্রয়োগিক অর্থে আধুনিক বলেই মনে হয়। জাত, কাল, পাত্র ভেদে এই জানু শব্দটির সাথে না গুণবাচক শব্দের ব্যবহারও লক্ষনীয় যেমন: লক্ষী জানু, ছাগল জানু, পাগল জানু, গাধী জানু, শয়তান জানু, বদমাশ জানু ইত্যাদি। সব জানু'ই দু'পা বিশিষ্ট এক প্রাণী। দেশের সর্বত্র এই জানুদের বিচরণ হলেও, দেশীয় পার্ক, রেস্টুরেন্টই, কেএফসি, পিজ্জাহাটাই তাদেরকে বেশি দেখা যায়।

স্বভাব : জানু শব্দটি সর্বগ্রহিত একটি শব্দ হলেও লক্ষনীয় যে পুলিঙ্গরা সুন্দরী, স্লিম ফিগার, দেখাতে বলিউডের কোন হেরোইনের মতো এবং স্ত্রীলিঙ্গরা, ভারী ওয়ালেট, সুদর্শন, স্মার্ট, ও হিপহপ টাইপের জানুর সন্ধান করে থাকেন। সাধারনত একেকজনের এক বা একাধিক জানু থাকাটাই তাদের মূল স্বভাব (বদ স্বভাব)। একেজনের সভাব একেকরকম হলেও একটি কমন স্বভাব এই যে মেয়ে জানুরা যতই পোকলা দাঁতে কচমচ করে পিজ্জা খায় না কেন পরে বিলটা ছেলে জানুর উপরই এসে পড়বে কারণ সাংবিধানিক অর্থ এই যে " মেয়ে জানুরা চাহিবা মাত্র ছেলে জানুরা তাদের বিল পরিশোধে বাধ্য থাকিবে"।

উপকারিতা : জানু একটি উপকারী শব্দ, যাদের যাদের এই শব্দের দখল আছে তাদেরকে খুব উদ্দীপনার সাথে পথ চলতে দেখা যায়, ধনীর দুলালদের দেখা যায় তার জানুর পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে পেটের চর্বির কমে যায় অনেকটাই যার কারণে হার্ট এট্যাকের সম্ভাবনা অনেক কমে আসে। ধনীর দুলালীদের মাঝেও অনেক সময় দেখা যায় সত্যিকারের বোধ আসতে যেমন: একটি মানুষকে অর্থ দিয়ে নয় মন দিয়ে বিবেচনা করতে হয়।

অপকারিতা:  জানু শব্দের আবির্ভাবের পর অনেক অনেক রোমান্টিক শব্দ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে চলেছে। ওগো, বাবু, ময়না, ওলে ওলে এই শব্দগুলো আজকাল আর তেমন একটি বলতে শুনা যায় না, আধুনিক জানুদের চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, পিজ্জাহাট, কেএফসি আসক্তির কারণে দেশের পুরনো ঐতিহ্য পার্কে বসে বাদাম চিবানো আর তেমন দেখা যায় না যার কারণে বাদাম বিক্রেতারা পড়েছে সংকটে। জানুদের মন রক্ষার্থে একের পর এক মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে যেভাবে পরিবেশ দূষণ করে চলছে তাতে তাদের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। সবচেয়ে বড় বিপদজনক হলো ছ্যাঁকা যা এই জানুদের থেকেই উত্পত্তি, গুগল মামাকে জিজ্ঞাসা করে দু একটি সুইসাইড নোট পড়ে নিলে তা বুঝতে পারবেন।

উপসংহার: যতই অপকারিতা থাকুক না কেন এই জানু এখন খুবই প্রয়োজনীয়, দৈনন্দিন জীবন এখন বলতে গেলে এক প্রকার অচল মনে হয় এই জানু ছাড়া। আমরা অচল হই আর না হই মোবাইল কোম্পানিগুলো যে অচল হইবো তাতে কোন সন্দেহ নেই।

==========================================================================

রচনা আরো বড় করার ইচ্ছা আছিলো কিন্তু কোন দিকের জল কোনদিকে গড়াইয়া যায় হেই ভয়ে আর বাড়াইলাম না।

0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ