"আমি তোমার জন্য এসেছি (পর্ব-৩৩)

মনোয়ারা হেসে বললো এই যে এখানে আমরা কিছু আদমজাতী আছি, খেয়াল করেন।

আরাফ রাহাতকে ছেড়ে পিচনে চোখ আটকে গেল হলুদ শাড়ীতে...

তারপর বলো, প্রিয়া আপ্পি আসতে কোন সমস্যা হয়নি?

আরে নাহ্ কোন সমস্যা হয়নি, খুব ভালো ভাবেই আসছি।

উপরে চল আমার রুমে তোমার সাথে অনেক গল্প বাকি!

বুঝছি রোহান সাহাবের গল্প নিশ্চই?

আপু তুমি যে কিনা লজ্জায় মিতুর মুখটা লাল হয়ে গেল।

আরে পাগল করে করে কি!  লজ্জার কি আছে।

তুই না বললেও আমি জোর করে শোনতাম।

আচ্ছা আপু দাও লাগেজটা আমার কাছে দাও আমি উপরে নিয়ে যাই।

প্রিয়া পিচন থেকে মিতুর হাত ঢেনে ধরল একটু থাম, মম, আব্বু চিন্তা করবে ওদের একবার কর দিয়ে জানাই।

ভালো কথা এতক্ষন ধরে আসলাম, মামী আমাকে দেখতে নিচে আসলো না।

নাকি উপরে মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে রুপচর্চায় ব্যস্ত হি হি হি হি।

মিতু মামী কোথায় রে.? না রে আপ্পি আম্মু এখন আগের মতো রুপচর্চা করে না বয়স হয়েছে তো।

আপ্পি আম্মু একটু বাইরে গিয়েছে গায়ে হলুদ অনুষ্টানের কিছু কেনাকাটা বাকি তুমি আমার রুমে চল আমরা গল্প করতে করতে আম্মু চলে আসবে।

সরি আন্টি বলে আরাফ রাহাতের মাকে জড়িয়ে ধরল কেমন আছেন?

আমেনা বেগম তার চোখের পানি আটকাতে পারলেন না কেঁদে ফেললেন।

বাবা তুমি তো আমার সুখে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছো আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি বাবা।

তুমি কেমন আছো.?

আলহামদুলিল্লাহ্ আন্টি আপনাদের সবার দোয়ায়

খুব ভালো আছি।

আন্টি সুখ,দুঃখ দিবার মালিক আল্লাহ্ তায়ালা আমি শুধু মাত্র উছিলাম।

আমি আমার বন্ধুর দুঃসময়ে তার জন্য কিছু করতে পেরেছি এটাই আমার কাছে অনেক কিছু।

আমার জন্য দোয়া করবেন বলই আমেনাকে মায়ের সম্মানে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

ঊর্মি সবার কান্ড দেখছিলো এবার আরাফের দিকে তাকাল আরাফ লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিল, জানালার দিয়ে বাইরে তাকাল বাগানে আজ অনেক রকমের ফুল ফুটেছে শুধু দিবার জন্য প্রিয় মানুষটা নেই।আরাফ ভাবল মহিলাটা মনে হয় রাহাতের স্ত্রী হলুদ শাড়ীতে  তাকে পরীর মতো লাগছিলো। আরাফের চোখে প্রিয়ার ছবিটা ভেসে উঠল শেষ বার যখন পিচ্চি প্রিয়ার সাথে দেখা হয় তখন প্রিয়ার শরীর হলুদ একটা জামা পড়া ছিলো।

এই ৮ বছরেও সেই মুখটা আরাফ শত চেষ্টার পরও ভুলতে পারে নাই।

আরাফ দোস্ত!

আরাফ চমকে রাহাতের দিকে তাকাল।

দোস্ত এই আমার স্ত্রী ঊর্মি যাকে তোর কথা ফোনে জানিয়েছিলা।

হ্যাঁ আমার সব মনে আছে ৭ বছর প্রেমের পর বিয়ে এ তো দেখি হলুদ পরী দোস্ত হা হা হা হা।

তারপর ভাবি কেমন আছেন.? জ্বী ভাইয়া ভালো।

আপনি অনেক ভালো, রাহাতের মায়ের সামনে ঊর্মির সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো বলায় রাহাত লজ্জা পেল।

আরাফ অবস্থা বুঝে বললো কই রাহাত আমার দুজন ভাতিজা,ভাতিজী ওনারা কোথায় দেখছিনা যে ?

দোস্ত ওরা রহিমার সাথে তোদের বাড়ি ঘুরে দেখতাছে, আমি ওদের  ডাকতেছি..!

সমস্যা ওরা খেলুক চল আমরা ছাদে যাই অনেক কথা জমে আছে সব বলবো।

মা তোমরা গল্প করো আমরা একটু উপরে গেলাম।

রাহাত বাবা নাস্তা খেয়ে পরে ছাদে যাও! না মা তুমি রহিমাকে বলো আমাদের দুজনের জন্য চা উপরে পাঠিয়ে দিলে।

আমেনা হাসলো আপা পাগল ছেলে আপনার, ঊর্মি, মনোয়ারা হেসে দিল।

প্রিয়া দেখতে কিন্তু ঈর্ষা করার মতোই সুন্দরী। দুধে আলতা গায়ের রং দেখলে মনে হয় কেউ হলুদ মেখে দিয়ে রেখেছে তার উপর ঘন কালো লম্বা চুল। সরু ভ্রু নীচে ডুবে যাওয়ার মত গভীর কালো চোখ। ঠোঁট দুটো যেন গোলাপের পাঁপরির মতো দেখতে এতটা সুন্দর মেয়েটা পরী মনে হয় ঠিক মায়ের মতো হয়েছে দরজায় দাঁড়িয়ে মিতুর মা প্রিয়ার সৌন্দর্যের এমন বর্ণনা দিচ্ছিলেন।

মিতু রুমে প্রিয়াকে নিয়ে গল্প করছিলো, মা তুমি কখন আসলে মিতুর এমন  কথায় চমকে উঠল মিতুর মা।

মামী কেমন আছো বলেই প্রিয়া বিছানা ছেড়ে নিচে নেমে আসলো মামীকে সালাম করলো।

ভালো আছি মা, কতদিন পর তোমার মুখটা দেখলাম।

মামীকে তো ভুলেই গেছ! না মামী তোমার স্নেহ, ভালোবাসা কোনদিন  ভুলতে পারবো না।

ছোটবেলা তোমাকে কত বিরক্ত করতাম কখনো ধমক দাওনি, কত ভালোবাসতে আমাকে সব মনে আছে।

মিরা, আজাদ কেমন আছে.?

জ্বী মামা বাবার শরীরটা একটু খারাপ মম ভালো আছে।

আসতে কোন সমস্যা হয়নি.?

নাহ্ আব্বু বাসে উঠিয়ে দিয়ে গেছেন।

খুব ভালো করছে।

তো মিতু বোনকে পেয়ে শুধু গল্প করছো নাকি খাবার খেয়েছো.?

জ্বী মামী আমি খেয়েছি অনেক আগেই এখন মিতুর সাথে গল্প করতেছে।

আচ্চা তোমরা গল্প করো আমি ফ্রেশ করে আসছি বলে মিতুর মা তার রুমের দিকে চলে গেল।

রাহাতের সাথে গল্প হলো ব্যবসায়ী বিষয়ে তাই আরাফ চাইনি এসব বিষয় সরার সামনে বলতে।

তাই রাহাতকে নিয়ে ছাদে গিয়েছিলো রাতের খারাপ শেষে রাহাত চলে যাবে আরাফ দুটো দামী জাপানী মোবাইল সেট বের করলো।

একটা রাহাতকে দিল অন্যটা ঊর্মির হাতে তুলে দিল ভাবি আপনাদের বিয়ের দাওয়াত পেয়েছিলাম ব্যস্ততার জন্য আসা হয়নি।

প্রথমে তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

মোবাইল সেটটা এগিয়ে দিয়ে বললো ভাবি এটা আপনাদের বিয়েতে আমার সামান্য উপহার প্লীজ গ্রহন করুন, ঊর্মি হাসি মুখে গ্রহন করলো।

আরাফ আমেনাকে একটা শাড়ী গ্রিফ্ট করলো, মনি, জনিকে কাপড় আর খেলনা দিল ওরা সবাই খুশি হলো।

ঊর্মি বললো, আরাফ ভাইয়া আমার একটা অনুরোধ আছে, রাখতে হবে যা হুকুম মহারাণী বলুন এই অদমকে কি করতে হবে।

ভাইয়া আপনারা সবাই একদিন আমাদের বাসায় যাবেন বিয়ের খাবারট তো পাওনা রয়েছে হি হি হি হি।

তুই ঠিক বলছো ঊর্মি আমেনা যোগ দিল তা আরাফ কবে আপাকে নিয়ে আমাদের বাসায় যাবে।

.....চলবে।

0 Shares

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ