আমরা আসলে কি চাই?

সাবিনা ইয়াসমিন ৩০ মার্চ ২০২০, সোমবার, ১২:২৩:০৩পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ৩০ মন্তব্য

বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বর্তমানে এদেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে অত্যন্ত পরিচিত একটি মুখ হয়ে উঠেছেন। দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার পুর্ব থেকেই নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং করে তিনি আইইডিসিআর এর প্রধান মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। দেশের মানুষ বর্তমানে প্রতিদিন তার প্রেস ব্রিফিং এর জন্য অপেক্ষা  করেন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আপডেট জানার জন্য।

আমরা জাতিগত ভাবেই বেশ গসিপ জাতি। গ্রামের চা এর দোকানে বসে অলস সময়ে জগতের সমস্ত বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত দেই। আরম্ভ করি গ্রামের কোনো ছাগল কারো ফসল খেয়েছে কিনা, শেষ করি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ গিয়ে। এটিই আমার বেসিক চরিত্র। ফেইসবুকের দুনিয়া এই গাল গপ্প করার একটি অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে লকডাউন এর কারনে প্রাপ্ত অলস সময়ে এই গসিপ চুড়ান্ত পর্যায়ে অবস্থান করছে।

আল্লাহর অসীম দয়ায় আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এ নিয়ে ফেইসবুকে আরম্ভ হয়েছে গসিপ। এরা মনে হয় সন্তষ্ট নন এই আক্রান্তের সংখ্যায়। আরো বেশি আক্রান্ত হলে, আরো বেশি মৃত্যু হলে যেন এরা খুশি হতো। কোথায় কম আক্রান্তের জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাবেন, তা না করে সমালোচনায় মেতে উঠেছে অনেকে, তারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।

সরকারের এই একটি প্রতিষ্ঠানে ( আইইডিসিআর ) এতদিন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করা হতো। যারা কোভিক ১৯ এর প্রাথমিক লক্ষন দেখে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টেস্ট করাত, তাদের টেস্ট ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই আক্রান্তের সংখ্যা হিসেব করা হয়েছে। যারা এখানে যোগাযোগ করেননি প্রাথমিক লক্ষন থাকা সত্ত্বেও তারা যদি আক্রান্ত হনও, তা এই প্রতিষ্ঠান জানবে কিভাবে ? বর্তমানে সরকারী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কোভিক ১৯ আক্রান্তের টেস্ট করার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। যারা আক্রান্তের সংখ্যায় আশাহত, এবার হয়তো তাদের আশা পুরন হবে। তবে আমি চাই, তাদের আশা যেন পুরন না হয়, দেশের মানুষ বেঁচে থাকুক।

ফেইসবুকে কিছু বিশেষজ্ঞ সমালোচনায়
নেমেছেন আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে নিয়ে।

* তিনি এখন পর্যন্ত ২১ টি শাড়ী পরিধান করে প্রেস ব্রিফিং এ এসেছেন কেন?
* তার ধর্ম কি ?
* তিনি নাস্তিক ইত্যাদি ইত্যাদি।

মানুষের সমালোচনার আর বিষয় নেই? তিনি রোজ কতটি শাড়ি পরিধান করবেন, এটি তার একান্তই নিজস্ব বিষয়। এই সময়ে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে এবং ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের করণীয় কাজ কি,এসব নিয়ে তার বলা বক্তব্য গুলো শোনা আমাদের জন্যে বেশি জরুরী বিষয়। তিনি হিন্দু, মুসলিম,খৃষ্টান নাকি বৌদ্ধ এটা জানা কি অত্যন্ত জরুরী? তার যোগ্যতাই তো আমাদের কাছে বিবেচ্য হওয়া উচিৎ। ধর্ম দিয়ে কি হবে এখানে?
তিনি আস্তিক বা নাস্তিক, এটি জানা কি জরুরী?

আমরা যে কিসে খুশি হই তা কি আমরা নিজেরা জানি? আমরা আসলে কি চাই?

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    ঠিক বলেছেন আপু। আমরা নিজেরাই জানিনা আমরা কিসে খুশি হই, কি চাই। সবকিছু তে সমালোচনা , ভুল, ধর্ম খুঁজে বেড়াই। ইদানিং রাজনীতি টাও সবকিছু তে টেনে আনছি। ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইলো। 🌹🌹🌹

  • এস.জেড বাবু

    আমরা সবাই বিশেষজ্ঞ-
    বিশেষ অতিবিশেষ বিষয় নিয়ে তরজমা চালাই প্রতিনিয়ত।
    কোন বিষয়ের সূত্র পেলে চায়ের দোকানে তিন কাপ খালি করে বের হই।
    সমালোচক থাকবেই- তবে সমালোচকদের ও যে একটা লেভেল থাকা দরকার- তা এই ফেইসবুকের যুগে কিভাবে শনাক্ত করা যাবে ?

    ওদেরকে ওদের মতো থাকতে দিন- এমনিতেও ওরা একলাইন খবর শুনে তরজমা শুরু করলে, বাকি খবর ওদের শোনা হয় না। বলতে পারলে সন্তুষ্ট- তাই বলে।

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      ** এমনিতেও ওরা একলাইন খবর শুনে তরজমা শুরু করলে, বাকি খবর ওদের শোনা হয় না। বলতে পারলে সন্তুষ্ট- তাই বলে** হয়তো আপনিই ঠিক বলেছেন। কিন্তু খারাপ লাগে। একজন সম্মানিত মানুষকে কত সহজে অপমান-অপদস্ত করা যায়, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় না এলে জানাই হতো না। আমরা একজন সম্মানিত ব্যাক্তিকে তার পোশাক-আশাক দিয়ে পরিমাপ করছি, তার মেধাকে নয়। ব্যাপারটি দুঃখজনক।

      ধন্যবাদ বাবু ভাই,
      শুভ কামনা 🌹🌹

      • এস.জেড বাবু

        তেমন পদে যাওয়ার জন্য যেগ্যতাসম্পন্ন একজন মানুষ বা নিদেন পক্ষে তার আশেপাশের অবস্থানের কেউ অথবা সত্যিকার শিক্ষিত কেউ তার শাড়ির সংখ্যা অনুমান করতে পারবে।

        সত্যি বলতে যারা উনাকে নিয়ে মন্তব্য করছেন তাদের একদিনের আয় এই মহিলার এক দিনের গাড়ির তেল খরচ বা সমতুল্য।

        বাহ্যিক দিক থেকে যদি বলি-
        গতরাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এই ভদ্রমহিলার
        আলোচনা শুনছিলাম- উনার প্রেজেন্টেশান / সময়জ্ঞান অত্যন্ত প্রখর।
        অবশ্যই তিনি যথাযোগ্য অবস্থানে আছেন।

        শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস রইলো-
        একদিন করোনা মোকাবিলায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।

  • সুপায়ন বড়ুয়া

    সহমত।
    বিশেষ অজ্ঞদের কথায় মনে হয় সবাইকে টেষ্ট করো। আপনার জন্ডিসের সিমটম না থাকলে ডাক্তার টেস্ট করতে দিবে না এটাই স্বাভাবিক আর কমিশন বানিজ্য হলে দিবে। তাই নয় কি ?
    বাংলাদেশের আবাওয়া আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট ভাল। গত দুই মাসে লক্ষ লক্ষ পোষাক শ্রমিকের কারো যেহেতু করোনার সর্দি কাশি হয় নাই। আপনাদের ও হবে না। নিশ্চিন্ত থাকুন।

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      কমিশন বানিজ্য আমাদের চিকিৎসা খাতটাই ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা নাক চুলকালেও ডাক্তারের কাছে যাই, এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারি নাক চুলকানোটা ছিলো স্বাভাবিক ঘটনা! কতিপয় অসাধু ডাক্তার আর কমিশন বানিজ্যের কাছে নিজেদের অসহায়ত্ব বলি দেয়নি এমন রোগী আমাদের দেশে বিরল। আর তারই ফলস্বরূপ বর্তমান দূর্যোগের দিনে দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে যারা ক্ষুদ্রতম স্বার্থগুলো অনায়াসে ছেড়ে দিচ্ছে, তাদেরকেই এখন দোষারোপ করে শোধ নিচ্ছি।

      ইনশাআল্লাহ, যথাযথ প্রতিরোধ, সঠিক জীবন-যাপন, সচেতনতা আর ধৈর্য আমাদের মনন ও দৈনন্দিন জীবনে গড়ে তুলতে পারলে হয়তো এই মহামারী থেকে নিষ্কৃতি পাবো।

      ভালো থাকুন দাদা,
      শুভ কামনা 🌹🌹

      • সুপায়ন বড়ুয়া

        সহমত।
        আমরা রোগী ব্যবসায়ীদের চিনি। প্রথমত তারা রোগী দেখা বন্ধ করলেন অযুহাত পিপিই নাই।
        পিপিই ছাড়া তারা এতদিন চিখিৎসা কিভাবে করলেন? একটি পোড়া কাটা বা ডেলিভারী সিজার করার জন্য ot ভাড়া করে পিপিই পড়েই তো otতে যায় লাখ টাকা বিল করার জন্য।
        করেনার রোগী যদি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিখিৎষা করার সুযোগ দিত আজখে লাখ লাখ করোনা রোগীর জন্ম হতো শুধু পয়সার জন্য।
        আর যেখানে করোনা রোগীর লাশ দাপন করতে মানুষকে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হলো। লাশ লুখানো সাধ্য কার ?
        ভাল থাকবেন।

  • নাজমুল আহসান

    পয়েন্টটা আপনাকে বলি।

    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়টা শাড়ি পরেন এই প্রসঙ্গ কেউ তুলেছে? বেগম খালেদা জিয়ার কথা কেউ বলেছে? আচ্ছা, যান, এঁদের কথা বাদ দিলাম। অন্য কারও কথা বলি।

    এমন অনেকেই আছে, যাঁদের সচরাচর টেলিভিশনের পর্দায় দেখায়। বিভিন্ন চ্যানেলে যে সংবাদ উপস্থাপিকারা আছেন, তাঁদের শাড়ি নিয়ে কেউ কিছু বলেছে? কিংবা ধরেন, শ্রদ্ধাভাজন সুলতানা কামাল বা কবিতা খানম? এতশত মহিলাকে বাদ দিয়ে তাঁর শাড়ি নিয়ে কথা উঠছে কেন?

    উঠছে, কারণ মানুষ এদেরকে সহ্য করতে পারছে না। যাকে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা!

    সরকারী মাইক নিয়ে কেউ দাঁড়ালেই, প্রথম দৃষ্টিতেই তাঁকে জোকার মনে হয়। মনে হয়, এদের জন্মই হয়েছে মস্করা করার জন্যে। সেটা এই মীরজাদীই হোক, আর কোনো মন্ত্রী-মিনিস্টারই হোক। আপনি টেলিভিশন দেখেন কিনা জানি না। ইদানীং গৃহবন্দী থাকার কারণে মাঝে মাঝে টেলিভিশন দেখার সৌভাগ্য(!) আমার হচ্ছে। একেকটা বলদের কথা শুনলে খাওয়ার রুচি চলে যায়।

    কী দুর্বিষহ সময় যে মানুষ কাটাচ্ছে! এতদিন হয়ে গেলও, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা নেই। সরকারী নম্বরে ফোন দিয়ে সহায়তা পাওয়া যায় না। হাসপাতালে পর্যাপ্ত উপকরণ নেই। ডাক্তারদের সরঞ্জামাদি নেই।

    একদিন সময় নিয়ে বসে এঁদের ব্রিফ এবং পাশাপাশি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত মানুষের মৃত্যুর হিসাব দেখবেন। আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। এরপরও কোনো প্রশ্ন থাকলে, সাম্প্রতিক ডেঙ্গি(ডেঙ্গু) পরিস্থিতির কথা মনে করতে পারেন।

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      আপনার পয়েন্ট গুলো ঠিক আছে। যা বলেছেন তাও বোধগম্য। মুল জবাবে যাওয়ার আগে কিছু ব্যাপার বলছি,
      প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পোশাক মার্জিত। পোষাকের ধরনই প্রমাণ করে সে বাংলার নারী (!) বা ফার্স্টলেডী বেগম খালেদা জিয়া বিধবা হয়েও কেন সাদা শাড়ি পড়েন না, তিনি শিফন বা জর্জেট কেন পড়েন, তিনি জমকালো মেকাপ কেন ইউজ করেন, তার ভ্রু গুলো আর্ট করা, তার চুলের স্ট্যাইল ফরেনারদের মতো, ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আগেই এককালে বহুচর্চিত বিষয় ছিলো। জাতীয় নির্বাচনের সময় এগুলোর উপর ভিত্তি করে সাধারণ ভোটারদের আলোচনা চলতে দেখেছি। সুলতানা কামাল ম্যাডাম যখন অস্থায়ী রাস্ট্রীয় পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, তখনকার সময়ে আলোচ্য বিষয় ছিলো তার কপালের টিপ (!) প্লাস সে নাস্তিক! বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে ট্রাডিশিনাল ধার্মিকরা আখ্যায়িত করেছিলো কি নামে মনে আছে? তার কপালের বিশালাকার টিপ এবং গলার মালা অনেকের চোখের কাঁটা ছিলো।
      উল্যেখ্য প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মে/ মাণে উজ্বল এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তারা তাদের পোশাকে বা বংশগত নাম নিয়ে পরিচিতি পাননি। যা কিছু অর্জন করেছেন সব নিজেদের মেধায়-দক্ষতায়।

      করোনার কারণে প্রতিদিন টিভি দেখা এখন রুটিন হয়ে গেছে। আইইডিসিআর এর লাইভ ব্রিফিং গুলো সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দেখছি শুনছি নিজ উদ্যেগে। সেব্রিনা ম্যাডাম কি শাড়ী পরেছেন ঐদিকে নজর দেয়ার টাইমই পাইনা। শুধু তার বক্তব্যগুলোই আমার কাছে গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি কি বলছেন, যা বলছেন তার কতটুকু বুঝলাম, আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা নিয়ে যে তথ্য দিচ্ছেন তা আসলেই কি সঠিক,, এসব ভেবেছি/ ভাবি। আমাদের যদি আলোচনা/ সমালোচনা করতেই হয় আমরা তার বক্তব্য নিয়ে করবো। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রশ্ন রাখবো। প্রকৃত পরিস্থিতিতে তাদের বিচারিক স্বচ্ছতা নিয়ে লিখতে পারি, যেটা গ্রহণযোগ্য। তার শাড়ী / চুড়ি নিয়ে কেন করি? এখন গোটা বিশ্ব যেখানে মহামারীর করাল গ্রাসে আতঙ্কিত তখন আমরা পড়ে আছি তার ২১ টা শাড়ী গুনতে! বা তিনি নাস্তিক কিনা এটা আবিষ্কার করা কি এতই জরুরী!! আমাদের কি আর কোনো কাজ নেই?

      আমাদের দেশে মহামারী কোন পর্যায়ে আছে, এটা সরকারী ভাবে যেমন জানানো হচ্ছে, আমরাও কিছুটা বুঝতে পারি। প্রকৃত অর্থে আমাদের দেশে যদি এটা অত্যধিক বিস্তারিত হতো তাহলে ঘরে ঘরে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যেতো। প্রতিটি এলাকায় / বিভাগে অস্বাভাবিক মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেতো। সে রকম কিছু কি ঘটছে আমাদের আশেপাশে? যদি আসলেই করোনা পূর্ণ মাত্রায় সংক্রমিত হতো, সরকার কয়জনকে থামাতো? কয়টা লাস গুম করতো?

      তথ্যগুলো হয়তো সম্পূর্ণ নির্ভুল না। বা আমরা যেভাবে জানতে/ শুনতে চাই সেভাবে তারা বলতে পারছেন না। আমাদের উচিত এই মূহুর্তে তাদের উপর আস্থা রাখা। তাদের কথাগুলো ধৈর্য ধরে মেনে নেয়া। তারা কোনো কবি/ বক্তা বা নেতা নন, অল্প শব্দের ব্যবহার এবং, মুখ বুজে মনোযোগ দিয়ে কাজ করাটাই তাদের প্রফেশন এর অংশ।

      মতামতের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ,
      শুভ কামনা 🌹🌹

      • জিসান শা ইকরাম

        বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত মৃত্যু নিয়ে নাজমুল আহসান গতকাল একটি পোষ্ট দিয়েছেন ফেইসবুকে। এই পোস্টের প্রাসঙ্গিক বিধায় তাঁর পোষ্টটি এই মন্তব্যে দিয়ে দিচ্ছি, যাতে তাঁর স্ট্যাটাসটি পোস্টের একটি অংশ হয়ে যায়।

        নাজমুল আহসান লিখেছেন ” # থামুন। আসুন হিসাবের কথা বলি। #

        করোনা নিয়ে আদতে কী হচ্ছে এটা চট করে সবার পক্ষে বুঝে ফেলা মুশকিল। সরকারের ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে, এভরিথিং ইজ আন্ডার কন্ট্রোল! আর জনগণের ফেইসবুক আর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর দেখে মনে হয়, মানুষ মরে সাবাড় হয় গেল। আর আমার মতো কম-বুঝদার মানুষ যাঁরা, তাঁরা একটা বিভ্রমে আছেন। চলুন, বোঝার চেষ্টা করি, ব্যাপারটা আসলে কেমন হতে পারে।

        আমার এক বন্ধুর ফেইসবুকে শেয়ায় করা খবর দেখে আমি মোটামুটি অসুস্থ হয়ে গেছি। তার শেয়ার করা সর্বশেষ ৩০টা লিংক দেখলাম। এর মধ্যে ২৯টা করোনা সংক্রান্ত আর ২৬টা শ্বাসকষ্টজনিত মৃত্যু সংক্রান্ত! কিন্তু বাস্তবতা কি আসলেই এমন? ভাবলাম, বিষয়টা নিয়ে একটু খোঁজখবর করা যাক।

        শুরুতে একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। আমি সরকারী বা বিরোধীদলীয়ও নই। ডাক্তারও নই। এখানে যা লিখছি, সেটা আমার তাৎক্ষনিক খোঁজখবর করে পাওয়া। আমার স্ত্রী ডাক্তার, কিছু বিষয় বুঝতে তাঁর সহায়তা নিয়েছি।

        ২০১০ সালের হিসাব মতে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭ শতাংশ হয়েছিল শ্বসনতন্ত্রজনিত সমস্যায় [১]। এটা আর এই হারটা ২০১৬ এসে দাঁড়িয়েছিল ১০ শতাংশে। (এর পরবর্তী সময়ের তথ্য পাইনি) এই ৬ বছরে পরিমাণটা ব্যাপকহারে বেড়েছে। আজ এই ২০২০ সাল পর্যন্ত সেটা যদি একই হারে বেড়ে থাকে, তাহলে কোথায় পৌছতে পারে বুঝতেই পারছেন। দূষণ বেড়েছে, ভেজাল বেড়েছে – রেশিওটা বেড়ে যাওয়ারই কথা। যুক্তির স্বার্থে ধরে নিলাম, এটা আর বাড়েনি। অর্থাৎ এখনো ১০ শতাংশ মানুষ এই সমস্যায় মারা যাচ্ছেন।

        মোট মৃত্যুর পরিসংখ্যানটা বলি। ২০১৬ সালে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন মোটামুটি ৮,৫৬,০০০ মানুষ [২]। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৩৪৫ জন। ২০১৮ সালে এসে মোট মৃত্যুর পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দৈনিক হিসাবে এটা ২৩৫৯ জন [৩]।

        এবার উপরের হিসাব দুটি মিলিয়ে দেখুন। প্রতিদিন যদি আড়াই হাজার মানুষ মারা যান, আর এর মধ্যে ১০ শতাংশ যদি শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কারণে হয়, তাহলে মোট সংখ্যাটা দাঁড়ায় প্রায় ২৫০ জন। অর্থাৎ প্রতিদিন আড়াই শত মানুষ মারা যাচ্ছেন শ্বাসপ্রশ্বাস বা এই সংক্রান্ত কোনো কারণে। আগে এজাতীয় মৃত্যু প্রচার হতো না, এখন হয়। এটাই পার্থক্য।

        সুতরাং, কোথাও কেউ শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন, এটার মানেই এই না যে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। সম্ভাবনা নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু নিশ্চিত না হয়ে হুট করে আমরা কোনো কিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার আগে একবার ভেবে দেখি। আমরা সব খবর না ছড়াই। অযথা আতংক সৃষ্টি না করি।

        সবাই সাবধানে থাকুন। বাসায় থাকুন। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। ”

    • সুপায়ন বড়ুয়া

      নাজমুল ভাই,
      আপনার মতামতকে শ্রদ্ধা রেখেই বলছি
      চিকিৎসার ব্যপারটা সাবিনা আপুর জবাবে লিখছি
      আর যাদেরকে বলদ বলছেন।
      একজন সফল ক্যাপ্টেন না হারা পর্যন্ত উৎসাহ দিয়ে যায় যাতে খেলার আগে হেরে না যায়।
      টাইটানিকের ক্যাপ্টেন মৃত্যু অবধারিত জেনে ও হাল ধরে ছিলেন।
      তাই বলদেরা জনগনকে আাশা দেয় আতঙ্কিত করেনা। যেমন আমি আপনি সবাই করি যখন ম্যানেজার হিসেবে টিম চালাই।
      ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

  • জিসান শা ইকরাম

    ফেইসবুকের বিভিন্ন মানুষের লেখা থেকে বুঝতে পারি যে তারা চাচ্ছে দেশে হাজার হাজার মানুষ করোনায় মৃত্যু বরন করুক, কিন্তু সে বেঁচে থাকুক।
    জরুরী হটলাইনে ফোন করে অনেকে অনাবস্যক হটলাইন বিজি রাখছে, যে কারনে যার প্রয়োজন সে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। হট লাইনের মেয়েদের প্রেমের প্রস্তাব, খারাপ কথা বলা হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের চরিত্র।
    দেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বর নিয়ে কিছু মানুষ মারা যাচ্ছে, বিভিন্ন পত্রিকা এদের মৃত্যু করোনায় হচ্ছে বলে ইংজ্ঞিত করছে। এই সব মৃতদের দাফন করা হচ্ছে করোনা শতর্কতায়। কারন কেহ করোনা রোগী থাকতেও পারে। এদের পুর্বে টেস্ট করা হয়নি।

    গতকাল পড়লাম হাসপাতাল থেকে করোনা সন্দেহযুক্ত দুজন পালিয়েছে। সচেতনতার মাত্রা আমাদের এই। দেশের চল্লিশ হাজার বিদেশ ফেরত পাসপোর্টে দেয়া ঠিকানায় না থেকে আত্মগোপন করে আছে। কি করবে সরকার?

    অলস মস্তিস্কে কিছু মানুষ সব কিছু নিয়েই সমালোচনায় মত্ত্ব থাকে। তাই শাড়ি, ধর্ম, হিজাব, আস্তিক নাস্তিক নিয়ে ভাবে।

    ভালো পোস্ট।
    শুভ কামনা।

  • কামাল উদ্দিন

    প্রথম তো বলাবলি হচ্ছিল চায়নারা সাপ ব্যাঙ খায়, মুসলিমদের উপর অত্যচার করে এই জন্যও ওখানে আল্লাহর গযব এসেছে। কিন্তু ইরানে শুরু হওয়ার পর তাদের গযব থেরাপি মাইর খাইল। অন্য দিকে আমাদের পাশের দেশ মায়ানমার মুসলমানদের মেরে সব বের করে দিলো তাদের ওখানে করোনা বিকশিত তথা গযব পৌছতে পারলোনা। তারপর থানকুনি পাতা, গরম মসল্লা কত্তো কত্তো থেরাপি যে আবিস্কৃত হতে থাকলো আমাদের ফেজবুক বিজ্ঞানীদের কল্যানে। ওনারা অন্যের শাড়ি ধরে টানাটানি করাটা অস্বাভাবিক কিছু না।

  • তৌহিদ

    আমরা ভালো কাজে নেই, অন্যদের কাজে উৎসাহ দিতে জানিনা। এমনসব কর্মকাণ্ড করি যে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি লজ্জায় পড়ে যান।

    ফেসবুকে আসলেই এসব নিয়ে যাদের লেখা দেখেছি গালি দিয়েছি। এদেশে করোনা আসুক এটাই যেন সবাই চায়।

    পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারীকে উচ্চ অবস্থানে দেখতে আমরা অভ্যস্ত নই। আমি মানুষের এই বিতর্কিত কর্মের বিরুদ্ধে সবসময়।

    আমাদের বোধদয় হোক। ব্যতিক্রমী লেখার জন্য ধন্যবাদ।

  • অপার্থিব

    মানুষের হাতে এখন অনেক অবসর। তাদেরতো সময়টা ব্যয় করতে হবে। এদেশের মিডলক্লাস মানুষের চিন্তা- বিচিন্তা -কুচিন্তা, বিশ্লেষন, বিনোদন সব কিছুর মাধ্যম এখন ফেসবুক। এক সময় মানুষ পাড়া মহল্লায় কিংবা টিভিতে রাজনীতির টক শো দেখে বিনোদন পেত। গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতি নেই , সেই বিনোদনও আর নেই। মানুষের মস্তিষ্ক অত্যন্ত সৃজনশীল । সে হঠাত পাওয়া সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছে, একটা ঘটনাকে তার ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিভিন্ন ন্যারেটিভ তৈরী করছে, তার ন্যারেটিভের স্বীকৃতি দাবী করছে। এই দৃষ্টিকোনগুলো ঠিক না ভুল সেটা অবশ্য ভিন্ন প্রশ্ন। অবশ্য এগুলো খুবই সাময়িক। এক সময় নুতুন কোন ইস্যু তৈরী হবে , যারা এখন শাড়ি গুণছে তারা হয়তো এক সময় শাড়ীর বদলে গুণবে পাঞ্জাবীর সংখ্যা!

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ